বৃহস্পতিবার, ০৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬, ০৪:৫১:০২

ত্রিভূজ প্রেম: পথের কাঁটা সরাতে শাকিলকে হত্যা

ত্রিভূজ প্রেম: পথের কাঁটা সরাতে শাকিলকে হত্যা

বিশেষ প্রতিনিধি : রাজধানীর মাদারটেক এলাকায় অষ্টম শ্রেণীতে পড়ূয়া এক কিশোরীর প্রেমে পড়েছিলেন মো. শাকিল (২১) ও বাবুল ওরফে জীবন (২৫) নামে দুই তরুণ। প্রেমিকার পথের কাঁটা সরাতে শাকিলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন জীবন।

সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর বাসা থেকে ডেকে নিয়ে ইয়াবার আসরে প্রথমে শাকিলকে বেদম মারধর করেন জীবন ও তার বন্ধুরা। এরপর মাদারটেক এলাকায় একটি খালে কচুরিপানার ভেতরে তাকে ফেলে দেওয়া হয়। এক সপ্তাহ পর খালের ভেতর থেকে শাকিলের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

১৩ মাস পর গত মঙ্গলবার কামরাঙ্গীরচর এলাকা থেকে এ ঘটনার অন্যতম প্রধান সন্দেহভাজন জীবনকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে গতকাল বুধবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন জীবন।

এরপর তাকে পাঠানো হয় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. ইকবাল হোছাইন সমকালকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শাকিল হত্যার মূল সন্দেহভাজন পলাতক ছিলেন। তাকে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে হত্যা রহস্যের জট খুলেছে।

তদন্ত সূত্র জানায়, শাকিল তার পরিবারের সঙ্গে মাদারটেক এলাকায় বসবাস করতেন। তবে তাদের খিলগাঁওয়ের নিজ বাড়ি একটি ডেভেলপার কোম্পানিকে বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য দেওয়া হয়। মাদারটেকে যাওয়ার পর অষ্টম শ্রেণীতে পড়ূয়া এক কিশোরীর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। জীবনও ওই কিশোরীর প্রেমে পড়েন।

জীবন তার বন্ধু সোহেলের সঙ্গে মামার বাসায় বেড়াতে গেলে মাদারটেকে ওই কিশোরীর সঙ্গে পরিচয় হয়। পরিচয়ের কিছু দিন পর তিনি জানতে পারেন, ওই কিশোরীকে ভালোবাসেন শাকিল নামে আরেক তরুণ। এরপর বন্ধুদের সঙ্গে পরিকল্পনা করে ২০১৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর রাত ১১টার দিকে শাকিলকে তার বাসা থেকে ডেকে নেওয়া হয়।

মাদারটেক এলাকার একটি খালের পাশে তারা ইয়াবার আসর বসান। সেই আসরে কৌশলে তারা প্রথমে শাকিলের সঙ্গে তর্কাতর্কি শুরু করেন। এক পর্যায়ে তাকে মারধর করে খালের ভেতরে ফেলে দেন। পরে জীবন ও তার বন্ধুরা পালিয়ে যান।

ডিবির একটি সূত্র জানায়, শাকিলকে হত্যার সময় জাহিদ, হৃদয়, পলাশ, জীবনসহ ঘটনাস্থলে আটজন উপস্থিত ছিল।
গ্রেফতারের পর জীবন পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানান, কিশোরীর প্রেমের টানে শাকিলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। ঘটনার রাতে তিনিও খালের ভেতরে পড়ে যান। পরে বল্পূব্দরা তাকে টেনে তুললেও শাকিল খালের ভেতর পড়ে ছিল। ঘটনার পর থেকে তিনি পালিয়ে ছিলেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির এসআই শরিফ রফিকুল ইসলাম জানান, জীবন বখাটে হিসেবে পরিচিত। তার গ্রামের বাড়ি মাদারীপুর। তিনি এরই মধ্যে দুটি বিয়ে করেছেন। তার কোনো নির্দিষ্ট পেশা ছিল না। কখনও গার্মেন্টে কাজ করতেন আবার কখনও বেসরকারি অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। আর শাকিলও তেমন কিছু করতেন না। হত্যায় জড়িত অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। -সমকাল
৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে