বৃহস্পতিবার, ০৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬, ০১:১৫:৪৮

হেরে গেলেন কাদের সিদ্দিকী

হেরে গেলেন কাদের সিদ্দিকী

নিউজ ডেস্ক : অবশেষে হেরে হেলেন কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। বড় ভাই সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা লতিফ সিদ্দিকী শূন্য সখিপুর আর পুরণের সুযোগটি হাত ছাড়া হল তার। ফলে দীর্ঘদিন পর আসনটি সিদ্দিকী পরিবারের প্রভববলয়ের বাইরে চলে গেল।

স্থগিত থাকা টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনের উপ-নির্বাচনে কাদের সিদ্দিকীর মনোনয়নপত্র বৈধ নয় বলে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছে হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১২টার দিকে বিচারপতি আশফাকুল কামাল এবং জাফর আহমেদ এর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন।


এর আগে, রবিবার (৩১ জানুয়ারি) এ রুলের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পক্ষে শুনানি করেন ড. মোহাম্মদ ইয়াসিন খান। কাদের সিদ্দিকীর পক্ষে ছিলেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার রাগিব রউফ চৌধুরী।  

টাঙ্গাইল-৪ আসনে দশম সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন কাদের সিদ্দিকীর বড় ভাই লতিফ সিদ্দিকী।  গত বছরের ০১ সেপ্টেম্বর তিনি পদত্যাগ করায় আসনটি শূন্য ঘোষণা করে ০৩ সেপ্টেম্বর গেজেট প্রকাশ করে সংসদ সচিবালয়।

এরপর গত বছরের ১০ নভেম্বর টাঙ্গাইল-৪ আসনে উপ-নির্বাচনের দিন ধার্য করেছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। অন্যদলের পাশাপাশি এতে কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের প্রার্থী হিসেবে কাদের সিদ্দিকী ও তার স্ত্রী নাসরিন সিদ্দিকী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।

কিন্তু ঋণখেলাপের অভিযোগে গত বছরের ১৩ অক্টোবর রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলীমুজ্জামান তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন। এরপর ১৬ অক্টোবর ‍এ দুই নেতা রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইসিতে আপিল আবেদন করেন।

১৮ অক্টোবর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশন কাদের সিদ্দিকীর আপিল খারিজ করে তার মনোনয়নপত্র বাতিলের চূড়ান্ত রায় দেন।

এরপর নির্বাচন কমিশনের বাতিল আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন কাদের সিদ্দিকী।  এ রিটের শুনানি নিয়ে গত বছরের ২১ অক্টোবর নির্বাচন কমিশনের আদেশ স্থগিত ও কাদের সিদ্দিকীর মনোনয়নপত্র বৈধ বলে আদেশ দেন বিচারপতি মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চ। একইসঙ্গে নির্বাচন কমিশনের আদেশের বিষয়ে রুল জারি এবং রিটার্নিং অফিসার ও নির্বাচন কমিশনের আদেশ স্থগিত করেন আদালত।

পরে ২৬ অক্টোবর কাদের সিদ্দিকীর মনোনয়নপত্রের বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টের ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন জানান ইসির অ্যাডভোকেট-অন-রেকর্ড ব্যারিস্টার ড. মো. ইয়াসিন খান।

পরদিন ২৭ অক্টোবর আপিল বিভাগের অবকাশকালীন চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের আদালত টাঙ্গাইল-৪ আসনের উপ-নির্বাচনই স্থগিত করে দেন। একইসঙ্গে ইসির আবেদনটি আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দিয়ে ০২ নভেম্বর এর শুনানির দিন ধার্য করে দেন।

০২ নভেম্বর চেম্বার বিচারপতির দেওয়া উপ-নির্বাচনের ওই স্থগিতাদেশ বহাল রাখেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ। ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত উপ-নির্বাচন স্থগিত রেখে এর মধ্যে কাদের সিদ্দিকীর মনোনয়নপত্রের বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টের জারি করা রুল বিচারপতি মো.আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বে হাইকোর্ট বেঞ্চে নিষ্পত্তির আদেশ দেন সর্বোচ্চ আদালত।

২০১৪ সালেও টাঙ্গাইল-৮ (সখিপুর) আসনের উপ-নির্বাচনেও প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন কাদের সিদ্দিকী। সে সময়ও ঋণখেলাপের অভিযোগে তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়।
৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে