শুক্রবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬, ১২:৪৭:৩৬

ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন জামায়াতে ইসলামী

ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন জামায়াতে ইসলামী

শফিকুল ইসলাম সোহাগ : ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন জামায়াতে ইসলামী। ইতিমধ্যে দলের নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় নিজস্ব প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে পারছে না দলটি। শিগগিরই জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন দলটির নেতা-কর্মীরা।

কারণ, আইনমন্ত্রী জানিয়েছেন, চলতি মাসেই যুদ্ধাপরাধী রাজনৈতিক দলের বিচারসংক্রান্ত আইনটি মন্ত্রিসভায় তোলা হবে। এদিকে হাতছাড়া হয়ে সরকারের নিয়ন্ত্রণে চলে যেতে পারে দলের নামে ও বে-নামে সব আর্থিক প্রতিষ্ঠান। ১৫ জানুয়ারি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াত নিষিদ্ধ হলে ইসলামী ব্যাংকসহ তাদের সব ধরনের আর্থিক ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে আনা হবে।

তিনি বলেছেন, যে আইনে জামায়াত নিষিদ্ধ হবে, সে আইনেই তাদের নিয়ন্ত্রিত সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার বিষয়ে ব্যাখ্যা থাকবে। একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দলের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লা ও কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায় ইতিমধ্যে কার্যকর হয়েছে।

দলের আমির মতিউর রহমান নিজামী, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের জ্যেষ্ঠ সদস্য মীর কাসেম আলীসহ অনেকে এ তালিকায় রয়েছেন। এ ছাড়াও চার বছর ধরে বন্ধ কেন্দ্রসহ সারা দেশে দলীয় কার্যালয়। মামলা-হামলার কারণে প্রকাশ্যে রাজনীতি করা দূরে থাক, বেরই হতে পারেন না দলের নেতা-কর্মীরা।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিয়ে উদ্বিগ্ন জামায়াত : জানা গেছে, সারা দেশে জামায়াত-শিবির নিয়ন্ত্রিত মোট ৫৬১টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান (ব্যাংক, বীমা, সমিতি), সেবামূলক প্রতিষ্ঠান (হাসপাতাল, ক্লিনিক), শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠান (স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, কোচিং সেন্টার, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট), এনজিও ও সামাজিক সংগঠন রয়েছে। সংগঠনের নেতা-কর্মীরা

এসব প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করে তাদের দলীয় বিশ্বাস ও কর্মকাণ্ডের প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে, এসব প্রতিষ্ঠান পরিচালনার নিমিত্ত বৈদেশিক সাহায্যের নামে বিপুল অর্থ দেশে এনে তা তাদের সংগঠনের পেছনে ব্যয় করার পাশাপাশি বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনকে আর্থিক সাহায্য দিচ্ছেন।

নিষিদ্ধ হলে যা করবে জামায়াত : দল হিসেবে জামায়াত নিষিদ্ধ হলে শেষ পর্যন্ত নাম পরিবর্তন করে টিকে থাকার চেষ্টা করবেন আর নেতৃত্বে আসবেন মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী প্রজন্ম। তারা ২০১৯ সালের জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবেন, ত্যাগ করবেন যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের।

একাধিক সূত্র আভাস দিয়েছে, ‘ইসলামী লিবারেল পার্টি’ বা আইএলপি নামে দল গঠন করবেন। বর্তমান জামায়াতের কেন্দ্রীয় কমিটির দুজন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল, প্রথম সারিতে থাকা বেশ কয়েকজন নেতা নতুন দলের নেতৃত্ব দেবেন এমনটি মনে করছেন নতুন প্রজন্মের নেতা-কর্মীরা। নতুন দলের যে নাম ঠিক করা হয়েছে তা যদি নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত হতে বাধা পায় তাহলে বিকল্প নাম কী হবে তা-ও ঠিক করে রাখা হয়েছে।

বর্তমানে বিদেশে অবস্থানরত সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল দেশে ফিরে আসার পরই নতুন দল চূড়ান্ত করার কাজ সম্পন্ন হবে। পাশাপাশি জামায়াতের আদর্শের সঙ্গে মিল রয়েছে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত এমন একটি দলের সঙ্গেও যোগাযোগ রয়েছে তাদের।

দলের আরেকটি অংশ চাচ্ছে দল যেভাবে দলছে সেভাবেই চলবে, আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বর্তমান অবস্থান মোকাবিলা করতে হবে। জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান বলেন, সরকার যুদ্ধাপরাধের বিচারের নামে শীর্ষ নেতাদের নিশ্চিহ্ন করে জামায়াতে ইসলামীকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করছে। -বিডি প্রতিদিন
৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে