সোমবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৩, ০১:৪১:৩৭

এবার বিয়ের দেনমোহর ৫টি গাছ, প্রশংসায় ভাসছেন এই দম্পতি!

এবার বিয়ের দেনমোহর ৫টি গাছ, প্রশংসায় ভাসছেন এই দম্পতি!

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : সংস্কৃতিকর্মী সুকৃতি আদিত্য সুশ্রীর শৈশব কেটেছে জাতীয় শিশুকিশোর সংগঠন খেলাঘরের ভাইবোনদের সান্নিধ্যে। সংস্কৃতিচর্চা, দেশপ্রেম ও পরোপকারী মনোভাব নিয়েই তার বেড়ে ওঠা। 

সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে ছোটবেলা থেকেই সে আলোচিত। এবার নিজের বিয়ের দেনমোহর নিয়ে নতুন করে আলোচনায় আসলেন এই তরুণী। 

জানা গেছে, নিজের বিয়ের দেনমোহর হিসাবে বরপক্ষের কাছে সুকৃতির দাবি ছিল ৫টি ফলদ ও বনজ বৃক্ষের চারা। বরও বিয়ের আসরে তার হাতে তুলে দিয়েছেন ৫টি চারাগাছ। বিষয়টি নিতান্তই প্রতীকী নয়। কাবিননামাতেও দেনমোহরের উল্লেখ করা হয়েছে ৫টি গাছের আর্থিক মূল্য ৩০১ টাকা।

এমন ব্যতিক্রমী বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে নাটোরের দিঘাপতিয়ার উত্তরা গণভবন এলাকায়। শুক্রবার (২০ অক্টোবর) এই দম্পতির বিয়ে পড়ান স্থানীয় কাজি খন্দকার শামীম ও মওলানা আবুল কালাম আজাদ।

মাওলানা ও কাজি জানিয়েছেন, বিয়েতে গাছ দেনমোহর দেয়াতে ইসলাম ধর্মের নিষেধাজ্ঞা নেই। দেন মোহর হচ্ছে কনের হক, কনের সন্তূষ্টি। কনে যেটা দাবি করবে আর বর যেটি দিতে সামর্থ্যবান সেটিই আসলে দেনমোহর।

সুকৃতি বলেন, বর্তমানে অনেক বিয়েতে দেনমোহর নিয়ে অসুস্থ প্রতিযোগিতাটা চলছে। আমার মনে হয় তা থেকে বেরিয়ে আসা উচিত। কারণ বিয়ে মানেই আর্থিক লেনদেনটা মূখ্য না। 

দুটি মানুষের মনের মিল হওয়াটাই বড় ব্যাপার। সেখান থেকে মনে হলো যে যদি এমন কিছু করা যায় যা আমাদের প্রকৃতিকেও সুস্থ রাখবে। 

সেই সঙ্গে আমাদের সম্পর্কটাও সুস্থ রাখবে। তাই নতুন জীবন শুরু করার পূর্বে আমার মনে হয়েছে, গাছ একটা দারুণ উপকরণ হতে পারে, যেটার মাধ্যমে পরিবেশটাও সুস্থ থাকল, আমরাও খুশি থাকলাম পরিবেশের সুস্থতা দেখে।

নাবিন বলেন, দেনমোহরের বিষয়বস্তুটা হচ্ছে নিরাপত্তা। আমার কাছে মনে হয় যে আমাদের নিরাপত্তার চাইতে পরিবেশের নিরাপত্তা বেশি জরুরি। 

তবে এটা একটা প্রতীকী ব্যাপার। এর বাইরে বিশেষ কিছু নয়। প্রতীকী ব্যপার হিসেবেই আমরা চর্চা করলাম, যাতে আমরা পরিবেশ, প্রকৃতির সঙ্গে মিলেমিশে থাকতে পারি। সুকৃতির ভিন্ন চিন্তাকে স্যালুট জানাই।

কনের বাবা এম আসলাম লিটন জানান, তার মেয়ে সুকৃতি আদিত্য সিন্ধান্ত নিয়েছিল যে, বিয়েতে সে মোহরানা নেবে না। নিলেও সে একটা টোকেন নিতে চায়। বাবা হিসেবে তিনি সুকৃতির সেই সিন্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। 

তার মেয়ে মনে করে মোহরানা নিয়ে টাকার অংক বাড়িয়ে একটা অসুস্থ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। সেই প্রতিযোগিতায় সুকৃতি থাকবে না। 

সমাজকে সে একটা বার্তা দিতে চায় যে মোহরানাটা মূল নয়। মূলটা হচ্ছে দুটি মানুষের বন্ধন। দুটি মানুষের হৃদয় মন এক হয় বিয়ের মধ্য দিয়ে। এই বন্ধনটাই আসল। কোনো অর্থনৈতিক বা সম্পদের জায়গায় গিয়ে চুক্তিবন্ধ হওয়ার চাইতে আত্মার চুক্তিবন্ধ হওয়া বেশি জরুরি। সেই জায়গাটা সুকৃতি অনুভব করেছে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে