শনিবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২৩, ১২:৩৫:৩২

স্বপ্ন এখন ছাই হয়ে গেছে, কৃষকের মাথায় হাত!

স্বপ্ন এখন ছাই হয়ে গেছে, কৃষকের মাথায় হাত!

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় মিথিলি প্রভাব ও দুই দিনের চলমান টানা বৃষ্টিতে স্বপ্নের সোনালী ফসল অধিকাংশ ধান ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে।

বুকভরা আশা নিয়ে ধান চাষ করেছিলাম। কয়েকদিন পরেই সোনালি ধান ঘরে তুলবো সেই স্বপ্ন ছিল। ধান প্রায় পেকেও আসছিলো। কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সে স্বপ্ন এখন ছাই হয়ে গেছে। 

দুই দিনের টানা বৃষ্টির পানি জমে হাঁটু পর্যন্ত হয়েছে। ঝড়ো হাওয়ায় ধান গাছ সব পানির সাথে নুয়ে পড়েছে। বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন তুলে নগদ টাকায় জমি লিজ নিয়ে মাঠে ধানের চাষ করেছিলাম। 

এহন ধার দেনায় মুই ডুবে গেছি। ধান না উঠলে লোনেন টাকা দিমু কেমনে। মোড় সংসার বা চলবে কেমনে। ঘূর্ণিঝড় মিধিলির তাণ্ডবে সব শেষ হয়ে গেছে মোড়। শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) এসব কথা বলেন উপজেলার পৌর এলাকার ৯ নং ওয়ার্ডের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক লুৎফর খান।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ঘূর্ণিঝড় মিধিলির টানা দুই দিন বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় ১৪ টি ইউনিয়নের অধিকাংশ ধানের ক্ষেত পানির সাথে শুয়ে পড়ে ডুবে রয়েছে। এক মাসের মধ্যেই ঘরে ঘরে নতুন ফসল তোলার আনন্দে যখন কৃষক পরিবার মাতোয়ারা হওয়ার কথা। যখন চারদিকে মৌ মৌ করবে পাকা ধানের সুঘ্রাণ। ঠিক তখন তার উল্টোটা হয়ে আনন্দ বিষাদে পরিণত হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

অধিকাংশ ধানক্ষেতে গাছে কেবল শিস ধরেছে কিছুদিন গেলেই ধানগুলো পরিপক্ক হতো। এমন সময় বৃষ্টির পানিতে ডুবে যাওয়ায় পানির নিচে হাজার হাজার হেক্টর ধান ক্ষেত বিনষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

বাকেরগঞ্জ কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে উপজেলায় ২৭ হাজার ৫ শত ২৫ হেক্টর জমিতে আমন ধানে চাষ হয়েছে। এর মধ্যে নিজস্ব জমির মালিক ও বর্গা চাষি রয়েছেন। কারও জমি ১০ বিঘা আবার কারও এক বিঘা রয়েছে। আবার কেউ বর্গাচাষি।

ফলে ক্ষতির পরিমানেও ভিন্নতা রয়েছে। যাদের জমির ধান আগাম পেকে গেছে তাদের মধ্যে ক্ষতির পরিমাণ কম হবে। তবে অধিকাংশ মাঠেই এখন ধানের ফলন ধরেছে। এই সময় অধিক বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে কৃষকদের।

বাকেরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুনিতি সাহা বলেন, ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাব ও ঝড়-বৃষ্টির কারণে ক্ষেতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ায় ধান পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বন্যা এখন চলমান রয়েছে এর মধ্যেও মাঠে কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।

যারা রবিশস্যের চাষাবাদ করেন সেই সকল কৃষকদের ঘূর্ণিঝড় হওয়ার আবাস পেয়েই আগাম সতর্ক করা হয়েছে। বন্যা শেষ হলে কৃষকদের ক্ষতির পরিমাণ বোঝা যাবে। ক্ষতি নিরূপণ করে কৃষকদের সহযোগিতা করা হবে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে