শনিবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৩, ১১:৩৬:৫১

যেকারণে এক কৃষকের ফোনে ছুটে এলেন আইনমন্ত্রী

যেকারণে এক কৃষকের ফোনে ছুটে এলেন আইনমন্ত্রী

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : মনে সাহস আছে, তবুও কাঁপছে বুক। মন্ত্রী ফোন ধরেন, এটাই সাহস। কিন্তু এটুকু কাজের জন্য ওনাকে ফোন দেওয়া ঠিক হবে কিনা- এ ভয়ে কাঁপে বুক। মন্ত্রী ফোন ধরলেন, খোঁজ নিলেন।

খোঁজ নেওয়াটা মন মতো হলো না, ছুটে এলেন নিজেই। সমস্যা সমাধানের আশ্বাসও দিলেন। একজন সাধারণ কৃষকের সমস্যার কথা শুনে নিজ সংসদীয় এলাকায় ছুটে আসেন আইন. বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। 

গতকাল শুক্রবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের টনকী গ্রামে এসে কৃষককে সঙ্গে নিয়ে সমস্যা কবলিত জমি দেখেন এবং এক থেকে তিন মাসের মধ্যে পুরোপুরি সমাধানের আশ্বাস দেন।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের সংসদ সদস্য। এবারও তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তার বিপক্ষে দুইজন ‘অচেনা’ প্রার্থী লড়াই করছেন। যে কারণে তিনি তৃতীয়বারের মতো এম.পি নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন এটা প্রায় নিশ্চিত।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টনকী এলাকার প্রায় ২০০ একর জমিতে জলাবদ্ধতার কারণে দীর্ঘদিন ধরে চাষাবাদ করা যাচ্ছে না। এক হাজারের বেশি পরিবারের জমি রয়েছে ওই জায়গায়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও ভুক্তভোগীরা এর কোনো সমাধান করতে পারেননি। 

গত ১৩ ডিসেম্বর প্রবাস ফেরত ব্যক্তি ও কৃষক মো. শরীফ মিয়া আইনমন্ত্রীকে ফোন করেন। জমিতে ফসল ফলাতে না পারার বিষয়টি তিনি মন্ত্রীকে বুঝিয়ে বলেন।

মন্ত্রী তাৎক্ষনিকভাবে বিষয়টি আখাউড়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. তাকজিল খলিফা কাজলকে অবহিত করে ঘটনাস্থলে যেতে বলেন। 

মেয়র জানিয়ে দেন যে তিনি পরের দিন সেখানে যাবেন। পরের দিন সেখানে গিয়ে বিষয়টি জেনে মন্ত্রী মহোদয়কে অবগত করেন মেয়র। তবে মেয়রের কথা মন মতো না হওয়ায় তিনি নিজেই ওই এলাকায় আসবেন বলে জানান। শেষ পর্যন্ত ২২ ডিসেম্বর সেখানে আসার সিদ্ধান্ত জানান মন্ত্রী। 

কথামতো শুক্রবার বিকেলে টনকী গ্রামে এসে তিনি কৃষক শরীফ মিয়াকে সঙ্গে নিয়ে সমস্যা কবলিত জমি দেখেন। কি করলে সমস্যার সমাধান সম্ভব সেটিও জানতে চান। যে অনুযায়ি তিনি ওই কৃষকসহ উপস্থিত অন্যান্যদেরকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।

সেখান থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরের কর্মমঠ খেলার মাঠের একটি নির্বাচনী জনসভায় যোগ দেন আইনমন্ত্রী। সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি কৃষকের ফোন দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেন। 

তিনি জানান, এক মাসের মধ্যে কচুরিপানা সরিয়ে দেওয়া হবে। তিন মাসের মধ্যে খাল খনন করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হবে, যাতে করে দ্রুতই কৃষকরা এখানে ফসল ফলাতে পারেন।

এ সময় মন্ত্রী বলেন, ‘আমার সঙ্গে যে দুইজন প্রার্থী আছেন তাদেরকে আমার মতো আপনারা চিনেন না। আপনারা ভাববেন না যে আমি ভোট চাওয়ার জন্য আপনাদের কাছে আসি। আমি সত্যিকারের এতিম। আপনাদের কাছে থেকে আমি সেই কষ্ট ভুলে যাই।’ 

তিনি জানান, যে কৃষক ওনাকে ফোন দিয়ে বলেছেন যে ১১০০ এর বেশি পরিবারের সর্বনাশ হয়ে যাচ্ছে তাকে তিনি চিনতেন না কিংবা তার ফোন নম্বরও ছিলো না।

এদিকে তিনমাসের মধ্যে জলাবদ্ধতা নিরসনের ঘোষণা দেওয়ার পর মঞ্চে ছুটে যান কৃষক শরীফের বাবা আব্দুল জলিল। মঞ্চে উঠে তিনি মন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এ সময় মন্ত্রীসহ মঞ্চে উপস্থিত অন্যান্যদেরকে বেশ হাসোজ্জল দেখাচ্ছিল। 

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে