শনিবার, ০৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪, ১২:৪৬:৫৯

বিদেশ থেকে দেশে ফেরত আসা কর্মীদের জন্য সুখবর

বিদেশ থেকে দেশে ফেরত আসা কর্মীদের জন্য সুখবর

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : বাংলাদেশ থেকে কত কর্মী বিদেশে গেছেন, এ তথ্য সরকারের কাছে রয়েছে। কিন্তু এ পর্যন্ত কত কর্মী দেশে ফেরত এসেছেন, এ তথ্য সরকারের কাছে নেই। 

সুখবর, ফেরত আসা এই কর্মীদের তথ্য সংগ্রহে স্মার্ট কার্ডের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানান প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী। দেশের জনপ্রিয় একটি জাতীয় দৈনিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তৌফিক হাসান।

প্রতিবেদক : মন্ত্রণালয় কিছুদিন কাজ করে আপনার নিজের পর্যবেক্ষণটা কী? কোথায় ও কী ধরনের কাজ করতে চান?

প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী : আমাদের মন্ত্রণালয়ের কয়েকটা বিভাগ রয়েছে। বিভিন্ন বিভাগ থেকে আমাদের কাজ করতে হয়। সেই বিভাগগুলোর সঙ্গে আমরা বসে আলোচনা করছি। এই আলোচনায় আমরা স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনা হাতে নিয়েছি।

এগুলো নিয়ে আমরা চিন্তা-ভাবনা করছি। সচিবের সঙ্গে আলাপ করেছি। উনারাও বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে বসছেন। আশা করছি, অতীতের চেয়ে ভালো করব।প্রধানমন্ত্রীর যে আশা-আকাঙ্ক্ষা রয়েছে, সেটার প্রতিফলন ঘটাতে আমরা সক্ষম হব।

প্রতিবেদক : অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আপনি কোন কাজটি করবেন?

প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী : আমাদের লক্ষ্য দক্ষ কর্মী তৈরি করা। আমাদের প্রশিক্ষণকেন্দ্রগুলো সতেজ করা। প্রশিক্ষণ নিতে আসা কর্মীদের মধ্যে দক্ষতা ছড়িয়ে দেওয়া। প্রশিক্ষক বাড়ানো।

পাশাপাশি প্রশিক্ষণকেন্দ্রগুলোতে নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো। আমরা এখন এই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি। কিছুদিনের মধ্যে আরো ভালো ফলাফল দিতে সক্ষম হব।

প্রতিবেদক : আমাদের প্রবাসীদের সবচেয়ে বড় ভোগান্তি হচ্ছে অভিবাসন ব্যয়। এই ব্যয় কমাতে কী ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে?

প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী : এটার ব্যাপারে আমরা আলাপ করছি। আমরা রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর সঙ্গে আলাপ করছি। আমাদের মন্ত্রণালয়েও আমরা আলাপ করছি। এ ছাড়া এ বিষয় বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গেও আলাপ করছি যে, কিভাবে এই ব্যয় কমানো যায়। কারণ, একজন কর্মী পাঁচ-ছয় লাখ টাকা খরচ করে বিদেশ যাচ্ছেন। এত টাকা থাকলে তিনি আর বিদেশে যাবেন কেন? বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। আমরা স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরিত হয়েছি। আমাদের এখন স্মার্ট কর্মী বাহিনী প্রয়োজন। পাশাপাশি দক্ষতার সঙ্গে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।

প্রতিবেদক : গত কয়েক বছরে আমরা রেকর্ডসংখ্যক কর্মী পাঠাচ্ছি। কিন্তু সেই হারে রেমিট্যান্সের পরিমাণ বাড়াতে পারিনি। এর বাইরে হুন্ডিটা আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটা নিয়ে আপনার চিন্তা-ভাবনা আছে কি না?

প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী : সরকারিভাবে যারা কর্মী পাঠায়, তাদের উৎসাহিত করতে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছি, যাতে কর্মীরা উৎসাহিত হন। পাশাপাশি কর্মীদের সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। কিভাবে এই সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করা যায় এবং মানুষকে উৎসাহিত করা যায়, তা নিয়ে কাজ শুরু হচ্ছে। এখানে আরো কিছু সমস্যা রয়েছে। সেই সমস্যাগুলো আমরা চিহ্নিত করছি। কিছুদিনের মধ্যে জানতে পারবেন আমরা কিভাবে কাজ এগিয়ে নিচ্ছি।

প্রতিবেদক : আমাদের বেশির ভাগ কর্মী সৌদি আরব, মালয়েশিয়াসহ অন্যান্য দেশে যাচ্ছেন। কিন্তু জাপান-দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দক্ষ শ্রমবাজারে তেমন কর্মী যাচ্ছেন না। দক্ষ ও নতুন শ্রমবাজারে কর্মী পাঠানোর বিষয়ে কিছু ভাবছেন কি না?

প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী : নতুন শ্রমবাজার বলতে ১৭৬টি দেশে আমাদের কর্মীরা যাচ্ছেন। এখন যে দেশে যাচ্ছেন, আমরা সেই দেশের ভাষা শেখানোর চেষ্টা করছি। ভাষা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছি। যাতে কর্মীদের ভাষাগত কোনো সমস্যা না হয়। ভাষার সমস্যার যদি আমরা সমাধান করতে পারি, তবে কর্মীরা সহজে দক্ষ শ্রমবাজারে প্রবেশ করতে পারবেন। পাশাপাশি যে দেশে কর্মী যাবেন, সেই দেশের কর্মসংস্থান কী হবে, কী ধরনের কর্মী তারা চাইছে, সেই চাহিদা অনুযায়ী আমরা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছি। আমরা দক্ষ কর্মী পাঠানোর ব্যাপারে খুব আন্তরিক। প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশের ঘোষণা দিয়েছিলেন। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তরিত হয়েছি। আমাদের কর্মী বাহিনীও ডিজিটাইজেশনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এখন আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছি।

প্রতিবেদক : আমরা কত কর্মী পাঠাচ্ছি, সে তথ্য আমাদের কাছে রয়েছে। কিন্তু কত কর্মী ফেরত এসেছেন, তার কোনো তথ্য নেই। এই ফেরত আসা কর্মীদের তথ্য সংগ্রহে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে কি না?

প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী : এ বিষয় আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। এ বিষয় কিছুটা কাজ শুরু করেছি। ফেরত আসা কর্মীদের জন্য আমরা একটি স্মার্ট কার্ডের ব্যবস্থা করছি।

প্রতিবেদক : আমাদের কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য ১০৪টি প্রশিক্ষণকেন্দ্র রয়েছে। এই প্রশিক্ষণকেন্দ্রগুলোকে আধুনিকায়ন করার ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে কি না?

প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী : আমরা সরঞ্জাম কিনছি। প্রতিটি প্রশিক্ষণকেন্দ্রে কর্মীদের যেন স্মার্টলি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, এ ব্যাপারে আমাদের মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে।

প্রতিবেদক : আমাদের বিমানবন্দর ও বিদেশে আমাদের দূতাবাসের সেবা নিয়ে কর্মীদের নানা অভিযোগ রয়েছে। এই সেবা নিশ্চিতে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে কি না?

প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী : আমাদের আগের মানসিকতার ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। এখন বিদেশের মতো আমাদের দেশের বিমানবন্দরে গ্রিন চ্যানেল আছে ও অভিবাসনের সেবাও দ্রুত হচ্ছে। এ ছাড়া আমাদের মন্ত্রণালয়েরও কিছু মানুষ সেখানে কাজ করছে। অর্থাৎ আমাদের সেবাগুলো ভালো হচ্ছে। তবে আরো ভালো করতে হবে, যাতে কর্মীরা আরো ভালো সেবা পান।

প্রতিবেদক : আমাদের সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী : আপনাদেরও অনেক ধন্যবাদ।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে