শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ০৭:৫৬:০৭

পারভীনকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পেতে পাগলা মসজিদের দানবাক্সে চিঠি!

পারভীনকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পেতে পাগলা মসজিদের দানবাক্সে চিঠি!

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সে বিপুল পরিমাণ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কারের সঙ্গে বেশ কিছু চিঠি পাওয়া গেছে। সেখানে পারভীন আক্তার নামে এক মেয়েকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পেতে চিঠি লিখেছেন সিলেটের হবিগঞ্জের সাইফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি।

শনিবার (২০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে মসজিদটির ৯টি দানবাক্স ও একটি ট্যাঙ্ক খুলে ২৭ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে। সঙ্গে পাওয়া গেছে বৈদেশিক মুদ্রা, স্বর্ণের গয়না ও বিভিন্ন চিরকুট। এখন চলছে টাকা গণনার কাজ। গণনায় অংশ নিয়েছেন প্রায় ২২০ জনের একটি দল।

দানবাক্সে টাকা ও স্বর্ণালঙ্কারের সঙ্গে একটি চিরকুটও পাওয়া গেছে। যেখানে একজন প্রেমিক তার পছন্দের মানুষকে জীবনসঙ্গী করে পেতে চিঠি লিখেছেন। চিঠিতে লেখা রয়েছে, ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। আমি একটা মেয়েকে ভালোবাসি। কিন্তু মেয়েটা আমাকে ভালোবাসে না। আমি আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করি যে আল্লাহ তাকে যেন আমার জীবনসঙ্গী হিসেবে কবুল করেন। মেয়েটার নাম মোছা. পারভীন আক্তার ও আমার নাম সাইফুল ইসলাম। আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ যেন আমাদেরকে কবুল করেন।’

আরেকটি চিরকুটে লেখা, ‘আল্লাহ আমি যেন একটা মানসম্মত নম্বর পাই। একটা ভালো কলেজে ভর্তি হতে পারি। আমার মাথার সব খারাপ চিন্তা দূর হয়ে যায়। আল্লাহ আমার মা-বাবারে ভালো রাখেন। আমি যেন রফিকুল ইসলাম কলেজে ভর্তি হতে পারি।’

কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখের উপস্থিতিতে দানবাক্সগুলো খোলা হয়।

এর আগে ২০২২ সালের ১ অক্টোবর এক মা প্রতিবন্ধী মেয়ের সুস্থতা কামনা করে মসজিদের দানবাক্সে প্রার্থনামূলক চিঠি লিখেছিলেন। সন্তানের সুস্থতা চেয়ে চিঠিতে মা লিখেছিলেন, ‘পাগলা বাবার মসজিদে আর্জি দিচ্ছি যে, আমার মেয়ে প্রতিবন্ধী। আপনার উছিলায় যাতে আমার মেয়ে জান্নাতুল মাওয়া ভালো হয়ে যায়। আমি আপনার দরবারে একটি ছাগল দিব। আমার আর্জি কবুল করেন।’

এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে চিঠিতে দরিদ্র ও অভাবগ্রস্তদের নানারকম আকুতি দেখা গেছে। এর আগে ২০২২ সালে ১ অক্টোবর এক অনার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থীর চিঠি পাওয়া গিয়েছিল। সেখানে চাকরি না পেয়ে আত্মহত্যার প্রবণতার হাত থেকে বাঁচতে ওই শিক্ষার্থীর চিঠিতে লেখা ছিল ‘আমাকে বাঁচাও, আত্মহত্যার হাত থেকে। আমি বাঁচতে চাই, আর নিতে পারছি না বেকারত্বের বোঝা। সবার খোঁচা দেওয়া কথা। একটা চাকরি হলে হয়তো বেঁচে যেতাম।’

জেলা প্রশাসক ও মসজিদ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আপনারা জানেন কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদটি ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের অন্যতম একটি জায়গা। সকল ধর্মের মানুষ এখানে দান করে থাকেন। আশা করা যাচ্ছে অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হবে। তাদের দানের অর্থ দিয়ে একটি দৃষ্টিনন্দন মসজিদ কমপ্লেক্স করা হবে, যেখানে একসাথে ৩০ হাজার মুসল্লি জামাতে নামাজ আদায় করতে পারবেন। 

কিশোরগঞ্জ পৌর শহরের নরসুন্দা নদীর তীরে অবস্থিত এ মসজিদটিতে ৯টি লোহার দানবাক্স আছে। প্রতি তিন মাস পর পর দানবাক্স খোলা হয়। এবার চার মাস ১০ দিন পর দানবাক্স খোলা হয়েছে। এতে  মিলেছে রেকর্ড ২৭ বস্তা টাকা ও বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালঙ্কার। এছাড়া রয়েছে বিভিন্ন চিরকুট। 

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে