সোমবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৪, ০৭:৫৫:১৪

তীব্র তাপদাহে বৃষ্টির জন্য ‘ইসতিসকার’ নামাজে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন মুসল্লিরা

তীব্র তাপদাহে বৃষ্টির জন্য ‘ইসতিসকার’ নামাজে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন মুসল্লিরা

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : দেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ। এ অবস্থায় তীব্র গরম আর প্রচণ্ড রোদে নাজেহাল অবস্থা মানুষের। প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না কেউ। এমতাবস্থায় কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে তীব্র তাপদাহ থেকে রক্ষা পেতে এবং বৃষ্টির প্রত্যাশা করে ‘ইসতিসকার’ নামাজ আদায় শেষে বিশেষ মোনাজাতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন মুসুল্লিরা।

সোমবার (২২শে এপ্রিল) সকালে উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের বল্লভপুর গ্রামের খড়িলার বিলে খোলা আকাশের নিচে এ নামাজ শেষে স্থানীয়দের আয়োজনে এ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।

মোনাজাতে ইউনিয়নের বল্লভপুর, রসুলপুর, ভবানীপুর, জোতমোড়া ও বরইচারা গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক নানা বয়সী মানুষ অংশ নেন।

নামাজ ও মোনাজাত পরিচালনা করেন রসুলপুর মাদ্রাসার হেফজখানার শিক্ষক মাওলানা মুফতি নাসির উদ্দিন আল ফরিদী। আগামী মঙ্গলবার ও বুধবার একই স্থানে সকাল ৮টায় বৃষ্টির জন্য ‘ইসতিসকার’ নামাজ অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।

জানা গেছে, কালবৈশাখীর মৌসুমেও প্রায় এক মাস বৃষ্টির দেখা নেই। নদী-নালা, খাল-বিল ও পুকুর শুকিয়ে গেছে। পানির স্তর নেমে যাওয়ায় পানি উঠছে না অগভীর নলকূপ ও সেচ পাম্পে। তীব্র তাপপ্রবাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে উঠছে। মাঠে রোদে পুড়ে কৃষকের ফসল নষ্ট হচ্ছে। আম-লিচুর গুটি ঝড়ে পড়ছে। শ্রমজীবী মানুষ রোদে বেশিক্ষণ কাজ করতে পারছেন না। এমন পরিস্থিতিতে তারা বৃষ্টির জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনার আয়োজন করেছেন। নামাজে সবাইকে অংশ নেয়ার জন্য আগে থেকেই মাইকে প্রচার করা হয়েছিল।

সকালে সরেজমিন খড়িলার বিলে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকশ মুসল্লি জায়নামাজ, খেজুরের পাটি ও গামছা নিয়ে মাঠে হাজির হয়েছেন। হুজুর প্রথমে মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে নামাজের নিয়মকানুন বলেন। এরপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করেন সবাই। নামাজ শেষে দুই হাত তুলে সবাই প্রচণ্ড গরম, তীব্র তাপদাহ ও খরা থেকে রক্ষা পেতে এবং বৃষ্টির জন্য মোনাজাত করেন।

এ সময় কৃষক মিরাজুল রহমান বিশ্বাস জানান, বৃষ্টিবাদল নেই। খুব তাপ। কলে (টিউবওয়েলে) ও বোরিংয়ে পানি উঠছে না। মাঠের খেতখোলা নষ্ট হচ্ছে। তাই বৃষ্টি চেয়ে নামাজের মধ্যে আল্লাহকে রাজি খুশি করানোর জন্য আদায় করেছেন তিনি।

রসুলপুর মাদ্রাসার হেফজখানার শিক্ষক মাওলানা মুফতি নাসির উদ্দিন আল ফরিদী জানান, কোরআন-হাদিসের আলোকে যতটুকু জানা গেছে, তা হলো মানুষের সৃষ্ট পাপের কারণে মহান আল্লাহ এমন অনাবৃষ্টি ও খরা দেন। বৃষ্টিপাত না হলে আমাদের প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ (স:) সাহাবীদের নিয়ে খোলা ময়দানে ইসতিসকার নামাজ আদায় করতেন। সেজন্য তারা মহান সৃষ্টিকর্তার নিকট পাপের তওবা করে এবং ক্ষমা চেয়ে দুই রাকাত নামাজ আদায় করে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করেছেন।

কুমারখালী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ জানান, সকালে ৩৩ থেকে ৩৫ ডিগ্রী তাপমাত্রা থাকছে। তবে বিকেল ৩টার দিকে তা বেড়ে ৪০ ডিগ্রী পর্যন্ত উঠে যাচ্ছে। প্রায় এক মাস কোনো বৃষ্টিপাত হয়নি। আপাতত বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনাও নেই।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে