রবিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬, ০১:২৬:৪৬

২০১৬ শুধুই শেখ হাসিনার

২০১৬ শুধুই শেখ হাসিনার

নিউজ ডেস্ক : দেশে পুরোপুরি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। সরকারি দল অনেকটা স্বস্তিতে। বহির্বিশ্বে ইতিবাচক উচ্চতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণতান্ত্রিক কিছু বিষয় নিয়ে বিতর্ক থাকলেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সামনে রেখে উন্নয়নে জোর দিয়েছেন তিনি। ২০১৬ সালে তার টার্গেট উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। এ নিয়ে প্রতিবেদন জুলকার নাইন, মাহমুদ আজহার, গোলাম রাব্বানী, জিন্নাতুন নূর ও রফিকুল ইসলাম রনি।

টানা রাজনৈতিক সহিংসতার অবসান হয়েছে। দেশে ফিরেছে স্থিতিশীলতা। যুদ্ধাপরাধের বিচারের মাধ্যমে জাতির কলঙ্ক মোচনও ঘটে যাচ্ছে নির্বিঘ্নে। সন্ত্রাসের পথ থেকে বিএনপি ফিরে এসেছে স্বাভাবিক রাজনীতিতে। সহিংস জামায়াত এখন লোকচক্ষুর অন্তরালে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হার্ডলাইনে অবস্থান নেওয়া ও স্বাভাবিক রাজনীতির জন্য স্থানীয় নির্বাচনের আয়োজনের কারণেই আজকের স্থিতিশীলতা।

অন্যদিকে দেশে বিরোধী দল হিসেবে আবির্ভূত হওয়া জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরীণ কোন্দলও সীমা ছাড়াচ্ছে না। জাতীয় পার্টির সরকারের প্রেসক্রিপশনের বাইরে যাওয়ার সুযোগ না থাকায় সংসদকেন্দ্রিক সাংবিধানিক সংকটেরও কোনো সুযোগ নেই। এসব কিছু সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের গুণে।

তিনি জানেন, রাজনীতি সাধারণ পাটিগণিত নয়। এখানে সব সময় দুইয়ে দুইয়ে চার হয় না। শূন্যও হয়। তাই সিদ্ধান্ত গ্রহণে তিনি কখনো দুর্দান্ত সাহসী, কখনো আবার সাবধানী। জানা যায়, ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াতের টানা ৯২ দিন দানবীয় সন্ত্রাস-সহিংসতা ও অগ্নিসন্ত্রাসে পুড়েছে গোটা দেশ। দেশের কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পদ ধ্বংস হয়েছে ওই রাজনৈতিক সন্ত্রাসে। তিনটি মাস ধরে দেশের মানুষ ছিল অগ্নিসন্ত্রাসের হাতে অবরুদ্ধ। কিন্তু এবারের জানুয়ারির চিত্র পুরো উল্টো। সব কিছুই স্বাভাবিক।

কারণ নানা ঘাত-প্রতিঘাত ও বিপত্সংকুল পথ পেরিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন পরিণত রাজনীতিক হয়ে উঠেছেন। নানা সংকটময় পরিস্থিতি ও বিরোধী দলের উত্তাল আন্দোলনের মাঝেও কীভাবে দক্ষ হাতে সরকার পরিচালনা করতে হয় তা-ও তিনি রপ্ত করে ফেলেছেন। একই সময়ে তিনি নিজেকে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার সুনিপুণ কারিগর করে তুলেছেন। নানা প্রতিকূল পরিস্থিতিতে গোটা দলের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি নিজ হাতে রেখেছেন।

বিএনপি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে। বলেছিল, শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ করবে না। কিন্তু মাঠের রাজনীতিতে পুরোপুরি পরাস্ত বিএনপি এখন সেই শেখ হাসিনার সরকারের অধীনেই ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে পৌরসভা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে, আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও অংশ নেবে।

সূত্রমতে, বিগত বছরের জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলন ভিন্ন খাতে নিয়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। ফলে বিএনপি এখন আন্দোলন ছেড়ে নির্বাচনমুখী। একই সঙ্গে সরকারের পুরো মেয়াদে বিরোধী দলকে নানা ইস্যুতে চাপের মুখে রাখারও সূক্ষ্ম ছক তৈরি করা হচ্ছে, যাতে বিএনপি-জামায়াত বিভিন্ন ইস্যুতে আন্দোলনে নামলেও এর একটিতেও সফলতা না পায়।

এ বছরে তারা সরকারের বিরুদ্ধে শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তুলতে পারবে কিনা তা নিয়ে খোদ বিএনপির মধ্যেই সংশয় রয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোট নেত্রী শেখ হাসিনার হাতে বলা যায় এখন পুরো রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে। তিনি যেভাবে চান, সেভাবেই চলছে জাতীয় পার্টি।

আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নামে যার বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠছে, তার বিরুদ্ধে তাত্ক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার কৌশলের কারণে জামায়াত এখন আর মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারছে না। যুদ্ধাপরাধের বিচারকাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে।

সম্মেলনের মাধ্যমে জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে গতিশীলতা ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। বিতর্কিত এমপি-মন্ত্রী ও দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে নিচ্ছেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা। যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের ফাঁসির দাবিতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে এক কাতারে আনতে পেরেছেন। আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতারা আশাবাদী, শেখ হাসিনার দূরদর্শী পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবেই সম্পন্ন হবে। রাজনীতির কূটচালে পড়ে বিএনপিও স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেবে।

চার সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগের ভরাডুবি হলেও জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পাবে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, শেখ হাসিনা নিজেকে শুধু দক্ষ রাজনীতিক হিসেবেই গড়ে তোলেননি, আওয়ামী লীগের চলতি মেয়াদে সরকার পরিচালনায়ও যথেষ্ট বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন।

তার দূরদর্শী পরিকল্পনায় দেশের বিদ্যুৎ সংকট সিংহভাগই কেটে গেছে। বোরো মৌসুম ও গ্রীষ্মকালের ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণা থেকে দেশের মানুষ মুক্তি পেয়েছে; যা ক্ষমতাসীন সরকারের ওপর মানুষের আস্থা দৃঢ় করেছে।

রাজনৈতিক সুস্থিতি বজায় রেখে নতুন সম্মেলনের মাধ্যমে দলকে গতিশীল এবং সাংগঠনিক বিশৃঙ্খলা দূর করে সংগঠন চাঙ্গা করাই আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার প্রধান লক্ষ্য। দলের নেতারা মনে করেন, রাজনৈতিক সুস্থিতি থাকলে সরকার জনগণের জন্য ইতিবাচক কাজের সবই পরিকল্পনা অনুযায়ী করতে পারবে। -বিডি প্রতিদিন

১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস 

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে