রবিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬, ০২:১৮:৪০

ছেলের কাছেই হাতেখড়ি প্রধানমন্ত্রীর, এখনো শিখছেন

ছেলের কাছেই হাতেখড়ি প্রধানমন্ত্রীর, এখনো শিখছেন

নিউজ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যখন ডিজিটাল বাংলাদেশ শ্লোগানটি আমরা দিতে শুরু করি, তখন অনেকেই টিপ্পনী কেটেছে। কিন্তু ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন অনেকটাই বাস্তব।

রবিবার ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা উপকরণ বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করতে গিয়ে দেয়া বক্তব্যে এ তথ্য জানান শেখ হাসিনা। পরে প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন বিবিসির কাছে এ বক্তব্য দেবার খবর নিশ্চিত করেন।

শেখার কোনো বয়েস নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের কাছেই তার কম্পিউটারের হাতেখড়ি হয়েছে। ছেলে দেশে এলে এখনো তার কাছে আমি কম্পিউটারের নানা বিষয় শিখি।

খোকন বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- ‘আমি তো ডিজিটাল ছিলাম না। ছেলের কাছেই কম্পিউটার শিখেছি। এখনো শিখছি।’ শিশুদের কাছে অনেক ভাল শেখা যায় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা অনেক মেধাবী ও মননশীল। তাই তাদের মেধাকে বিকশিত করার সুযোগ দিতে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপকরণগুলো সহজলভ্য করা হচ্ছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাল্টিমিডিয়া সমৃদ্ধ ডিজিটাল শ্রেণিকক্ষ করার কার্যক্রমে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

রবিবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা কনটেন্ট ডিজিটাল ভার্সনের রুপান্তরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ১ হাজার ৫শ মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ চালু করা হবে। আর এ কাজে সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, একটি শক্তিশালী জাতি গড়ে তুলতে, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়ে তুলতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো শিক্ষা। তাই শিক্ষার মূল ভিত হিসেবে প্রাথমিক শিক্ষাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে বর্তমান সরকার। তাই প্রাথমিক শিক্ষা থেকে শিক্ষাকে ডিজিটাল করার প্রক্রিয়া শুরু করা হচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের যেসব শিক্ষার্থীরা বিদেশে যায় তারা অনেক ভালো ফলাফল করে। এ থেকে বোঝা যায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা অনেক বেশি মেধাবী ও মননশীল। ডিজিটাল বাংলাদেশে এসব শিক্ষার্থীদের মেধাকে বিকশিত করতেই তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক উপকরণগুলো সহজলভ্য করা হচ্ছে।

‘আজকের শিশুরাই কিন্তু আগামী দিনের শিক্ষক’ উদ্ধৃতি টেনে বলেন, ‘আমাদের শিশুরা অনেক মেধাবী ও মননশীল। তাই তাদের সে সুযোগ করে দিতে প্রযুক্তি ব্যবহার সহজলভ্য করা হচ্ছে। আগামী দিনের শিক্ষক বাচ্চাদের কাছ থেকে ভালো শেখা যায়, তাদের কাছে বিশ্ব এখন উন্মুক্ত। যেহেতু বাচ্চারা এ যুগে জন্ম নিয়েছে। ফলে তাদের মেধা আমাদের চেয়ে অনেক বেশি।’

তিনি আরো বলেন, ‘ছেলে-মেয়েকে সারাক্ষণ বলা হয়-পড় আর পড়। সত্যি বলতে গেলে-তখন আর পড়তে ইচ্ছে করে না। বাচ্চাদের বেশি চাপ দিলে তারা পরবর্তীতে আর ভালো করতে পারে না। বাচ্চাদের ওপর বেশি চাপ দেয়া যাবে না। তাদের পড়াটাকে আনন্দমুখর করে তুলতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘সবাই যে পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করবে তা কিন্তু নয়। তাই তাদের পড়ার জন্য বেশি চাপ দেয়া যাবে না। খেলা আর আনন্দের ছলে তাদের পড়াতে হবে। শুধু বই পড়ে পড়ে শিক্ষা, আর চোখে দেখে শিক্ষা অনেক তফ‍ৎ রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘শিশুদের উৎসাহ আর আনন্দ দিতে আমরা সবাইকে একটা সার্টিফিকেট দিয়েছি। আগে ক্লাস ফাইভে কিছু ছেলে-মেয়েকে বেছে নিয়ে বৃত্তি পরীক্ষা দেয়া হতো। বাচ্চাদের কাছ থেকে ভালো শেখা যায়, তাদের কাছে পৃথিবী এখন উন্মুক্ত। তারা অনেক কিছু শিখছে... এভাবেই বাংলাদেশকে এগিয়ে নেবে তারা।’

সর্বনিম্ন ৫ শ' থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত বৃত্তি নিয়ে ছেলে-মেয়েরা ডিগ্রি পর্যন্ত পড়াশোনা করছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

পার্বত্য চট্ট্রগামের দুর্গম এলাকায় প্রাথমিক শিক্ষার বিস্তার ঘটাতে সেখানকার বিদ্যালয়গুলোকে আবাসিক করার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে বিদ্যালয়গুলোতে হোস্টেল নির্মাণ করে দেওয়া হবে।

অনুষ্ঠানে স্যার ফজলে হাসান আবেদ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে