মঙ্গলবার, ২৫ জুন, ২০২৪, ১০:২২:৫৭

জানেন ঢাকায় হঠাৎ গরুর মাংস কত টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে?

জানেন ঢাকায় হঠাৎ গরুর মাংস কত টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে?

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ শেষে আজ পঞ্চম দিন চলছে। এখনও কাঁচাবাজার ফাঁকাই বলা চলে। ক্রেতাশূন্য বাজারে বেশিরভাগ সবজির দামই নিম্নমুখী। তবে ভালোমতোই বেড়েছে কাঁচা মরিচ, শসা, ধনেপাতা, টমেটোর দাম। গরু ও মুরগির মাংস বিক্রি হচ্ছে অন্য সময়ের চেয়ে বেশি দামে।

আজ কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা, ধনেপাতা ৩৫০ টাকা, শসা ১৫০ টাকা ও টমেটো ১৫০ টাকা কেজিতে। গত শুক্রবার থেকে এই শুক্রবার পর্যন্ত এক সপ্তাহের ব্যবধানে এসব সবজির দাম প্রতি কেজিতে বেড়েছে যথাক্রমে ৬০ টাকা, ১০০ টাকা, ৩০ টাকা ও ৫০ টাকা। 

এছাড়া সদ্য শেষ হওয়া কোরবানির ঈদের পরও বিভিন্ন দোকানে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা কেজিতে। কারণ হিসেবে বিক্রেতারা বলছেন, গরু পাওয়া যাচ্ছে না বলে দাম বেশি।

শুক্রবার (২১ জুন) রাজধানীর মিরপুর ১ নম্বরের কাঁচাবাজার সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় বাজারের এই চিত্র। অন্যান্য সাপ্তাহিক ছুটির তুলনায় আজ বাজারে ক্রেতা কম দেখা গেছে।  

বেশিরভাগ সবজির দাম কিছুটা কমেছে
আজকের বাজারে টমেটো ১৫০ টাকা, দেশি গাজর ১০০ টাকা, চায়না গাজর ১৪০ টাকা, লম্বা বেগুন ৮০ টাকা, সাদা গোলবেগুন ৯০ টাকা, কালো গোল বেগুন ১০০ টাকা, শসা ১৫০ টাকা, উচ্ছে ৬০ টাকা, করল্লা ৮০ টাকা, কাঁকরোল ৭০ টাকা, পেঁপে ৬০ টাকা, ঢেঁড়স  ৫০ টাকা, পটল ৫০ -৮০ টাকা,  চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, ধুন্দল ৫০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, কচুরলতি  ৮০ টাকা, কচুরমুখী  ১২০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, সজনে ১২০ টাকা, কাঁচা মরিচ ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, ধনেপাতা ৩৫০টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর মানভেদে প্রতিটি লাউ ৮০ টাকা, চাল কুমড়া ৪০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।  এছাড়া প্রতি হালি কাঁচা কলা ৩০ টাকা, লেবু ৩০ টাকা হালি।

গত সপ্তাহের সঙ্গে তুলনা করলে টমেটোর দাম প্রতি কেজিতে বেড়েছে ৫০ টাকা, দেশি গাজরের দাম বেড়েছে ১০ টাকা, লম্বাবেগুন ও সাদা গোল বেগুনের দাম বেড়েছে ১০ টাকা। শসার দাম বেড়েছে ৩০ টাকা, কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে ৬০ টাকা, ধনেপাতার দাম বেড়েছে ১০০ টাকা করে। এছাড়া উচ্ছে, কাঁকরোল, ঢেঁড়স, পটল, চিচিঙ্গা, ধুন্দল, ঝিঙা, বরবটি, লাউ, চালকুমড়া এসব সবজির দাম কমেছে ১০ টাকা থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত।

ক্রেতা না থাকায় সবজির দাম কিছুটা কম
সবজি বিক্রেতা মামুন বলেন, ঈদের পর বাজার এখনও জমেনি। কাস্টমার নেই বললেই চলে। তাই অল্প সবজি এনে কম দামেই বিক্রি করছি। এখন সবজির দাম কমই থাকবে। কাস্টমার আসা শুরু করলে দাম কিছুটা বাড়বে।

সবজির দাম বেড়ে যাওয়া নিয়ে আরেক বিক্রেতা ইস্রাফিল বলেন, টমেটোর না হয় সিজন নাই বলে বেড়েছে। শসার দাম কেন বাড়লো আমরা নিজেরাই জানি না। আর কাঁচা মরিচের দাম নাকি বন্যার কারণে বেড়েছে, পাইকাররা বলল। তবে কাঁচা মরিচের দাম ঈদের আগে থেকেই বাড়তি আছে।

ঈদের আগে থেকেই বাড়ছিল কাঁচামরিচের দাম
বাজার করতে আসা এক ক্রেতা মো. আরাফাত হোসেন বলেন, কাঁচা মরিচের দাম প্রায় অনেকদিন ধরেই বেড়ে যাচ্ছে। ঈদের আগেও কিনেছি ২৫০ টাকা কেজিতে, আর আজ সেটা নিতে হচ্ছে ৩০০ টাকা করে।

এছাড়া আজকের বাজারে মানভেদে ক্রস জাতের পেঁয়াজ ৯০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৯০ টাকা, লাল আলু ৬০ টাকা, সাদা আলু ৬০ টাকা, বগুড়ার আলু ৭০ টাকা, নতুন দেশি রসুন ২২০ টাকা, চায়না রসুন ২২০-২৩০ টাকা, চায়না আদা ৩০০ টাকা, ভারতীয় আদা ৩০০ দরে বিক্রি হচ্ছে। এক্ষেত্রে দেখা যায় এসব পণ্যের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। তবে ক্রস জাতের পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৫ টাকা।

পেঁয়াজের দাম ৫ টাকা বেড়েছে
এদিকে কোরবানির ঈদ মাত্র শেষ হলেও কমেনি গরু ও খাসির মাংসের দাম। এখনও উচ্চ দামেই বিক্রি হচ্ছে এসব মাংস। গরুর মাংসের দাম উল্টো বেড়েছে ৫০ টাকা। আজ বিভিন দোকানে গরুর মাংস ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্য সময় গরুর মাংস বিক্রি হতো ৭৮০-৮০০ টাকায়। এছাড়া খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১৫০ টাকা কেজি দরে।

ঈদের পর গরুর মাংসের দাম আগের চেয়ে বেড়েছে
গরুর মাংসের দাম বেড়ে যাওয়ার প্রসঙ্গে বিক্রেতা আলাউদ্দীন বলেন, মাত্র ঈদ শেষ হলো বলে গরু পাওয়া যাচ্ছে না। তাই দাম বেড়েছে। যারা কোরবানি দেননি তারা এই সময় মাংস কিনতে আসেন। আবার অনেকের মাংস কম হয়ে যায়, তখন তারাও কিনতে আসেন। বেচাকেনা মোটামুটি হচ্ছে।

এদিকে আজ দেশি মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ৪০ টাকা করে। এছাড়া কক মুরগির দাম বেড়েছে ১৫-২৫ টাকা পর্যন্ত। আর ব্রয়লার মুরগির দামও সামান্য বেড়েছে। লেয়ার মুরগি বাজারে পাওয়াই যায়নি। আজ ওজন অনুযায়ী ব্রয়লার মুরগি ১৮৫-১৯০ টাকা, কক মুরগি ৩১০-৩২০ টাকা, দেশি মুরগি ৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

মুরগির মাংসের দামও বাড়তির দিকে
মুরগির বিক্রেতা সুলতান বলেন, চাঁদ রাতে ব্রয়লার মুরগি ১৭৫ ছিল। এখন দাম বেড়েছে। আর কক মুরগি ৩০০ টাকার মতো ছিল, আজ সামান্য বেড়েছে। আর লেয়ার মুরগি পাইনি বলে আজক আনিনি।

এদিকে দেশি মুরগির বিক্রেতা অলি বলেন, দেশি মুরগির দাম সবসময়ই বেশি। এখন ঈদের সিজন বলে আরেকটু দাম বেড়েছে।

এসময় মুরগির মাংস কিনতে আসা এক ক্রেতা বলেন, দেশি মুরগির কেজি ৭০০ টাকা করে বলছে। এটা তো গরুর মাংসের কাছাকাছিই চলে গেল। কিনতে এসেছিলাম দেশি মুরগিই, কিন্তু দাম দেখে কক কিনে নিলাম।

এছাড়া মুরগির লাল ডিম ১৫০ টাকা এবং সাদা ডিম ১৪৫ টাকা প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে। এক্ষেত্রে সাদা ডিমের দাম প্রতি ডজনে কমেছে ৫ টাকা করে লাল ডিমের দাম কমেছে প্রতি ডজনে ১০ টাকা করে।

ঈদের পর মাছের দাম আগের মতোই আছে
এছাড়া আজ বাজারে ইলিশ মাছ ওজন অনুযায়ী ১০০০ থেকে ২৪০০ টাকা, রুই ৪০০-৬০০ টাকা, কাতল ৪০০-৫০০টাকা, কালবাউশ ৫০০ টাকা, চিংড়ি ৯০০-১৪০০ টাকা, কাঁচকি ৫০০ টাকা, কৈ ২২০-৩০০ টাকা, পাবদা মাছ ৪০০-৮০০ টাকা, শিং ৫০০-১৪০০ টাকা, টেংরা ৫০০-৭০০ টাকা, বেলে ৬০০-১৪০০ টাকা, বোয়াল ৫০০-১২০০ টাকা, রূপচাঁদা ৮০০-১৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।  

মুদি দোকানের পণ্যের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। প্যাকেট পোলাওয়ের চাল ১৫৫ টাকা, খোলা পোলাওয়ের চাল মান ভেদে ১১০- ১৪০ টাকা, ছোট মসুর ডাল ১৩৫ টাকা, মোটা মসুর ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৬০ টাকা,  ছোট মুগ ডাল ১৮০ টাকা, খেশারি ডাল ১০০ টাকা, বুটের ডাল ১১৫ টাকা, ডাবলি ৮০ টাকা, ছোলা ১০৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

মুদি দোকানে প্রায় আগের দামের বিক্রি হচ্ছে সব পণ্য
প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৭ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৪৭ টাকা, কৌটাজাত ঘি  ১৩৫০টাকা, খোলা ঘি ১২৫০ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১৩৫ টাকা, খোলা চিনি ১৩০, টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৫০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১১৫ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া এলাচ ৪০০০ টাকা, দারুচিনি ১৫০ টাকা, লবঙ্গ ১৬০০ টাকা, সাদা গোল মরিচ ১৬০০ টাকা ও কালো গোল মরিচ ৯০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে