সোমবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬, ০৮:৩৫:১৬

খালেদা জিয়ার বক্তব্য সঠিক : মির্জা ফখরুল

খালেদা জিয়ার বক্তব্য সঠিক : মির্জা ফখরুল

ঢাকা : মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বক্তব্য সঠিক বলে মন্তব্য করেছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেছেন, সরকার দেশকে বিরোধী দলশূন্য করার পথে নেমেছে।  সরকার দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিচ্ছে।  তরুণ নেতা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে চলেছে। বিরোধী দলের কোনো নেতা বাদ নেই, যাদের বিরুদ্ধে ১০/১৫টি মামলা দেয়া হয়নি।

তিনি বলেন, এসবের উদ্দেশ্য একটাই, দেশকে বিরোধী দলশূন্য করে দেয়া, রাজনীতি শূন্য করে দেয়া।  এদেশে আওয়ামী লীগ শুধুমাত্র একদলের শাসন চালাবে।  

১৫ ফেব্রুয়ারি সোমবার বিকেলে সুপ্রিমকোর্ট বার মিলনায়তনে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ব্রিটিশ ল’স্টুডেন্ট এলায়েন্সের (বিএনবিএলএসএ) উদ্যোগে ‘সংবিধান লঙ্ঘনে আইনের শাসন বিলুপ্তি’ শীর্ষক কনভেনশন ও সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বেগম জিয়ার দেয়া বক্তব্য বিকৃতি করা হয়েছে।  রাজনীতির মাঠ থেকে সরাতেই তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে।

অনুষ্ঠানে সংগঠনের নতুন কমিটির সভাপতি হিসেবে শেখ সোহেল মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক রফিকুল হায়দার মাহিনসহ ৪১ সদস্যের কমিটির নাম ঘোষণা করা হয়।

দেশের বর্তমান সঙ্কটময় অবস্থা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, সারাদেশে মানুষ তো বটেই আজ বিশ্ববিবেক বলছে, বাংলাদেশে আর গণতান্ত্রিক কোনো পরিবেশ নেই।  ভারতের বিশিষ্ট সাংবাদিক কুলদ্বীপ নায়ার কয়েকদিন আগে বলেছেন যে, বর্তমান সরকার কর্তৃত্ববাদী সরকারের পরিণত হয়েছে।

তিনি বলেন, এই সরকারকে ইন্দিরা গান্ধীর সরকারের সাথে তুলনা করছেন এবং বলেছেন, সরকার জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে।  এর পরিণতি কী হয়েছে।  ইন্দিরা গান্ধীর যেমন পরবর্তীকালে নির্বাচনে জামানত পর্যন্ত বাজেয়াপ্ত হয়ে গেছে, একটা বিরোধী দল পর্যন্ত গঠন করতে পারেননি। আজকে যদি বাংলাদেশে সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন হয়, আওয়ামী লীগের অবস্থাও একই হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, কয়েকদিন আগে আমেরিকাতে কংগ্রেসিয়াল শুনানিতে সেখানকার গোয়েন্দা বাহিনীর প্রধান বলেছেন, বাংলাদেশে ক্রমশ: কর্তৃত্ববাদী আচরণ প্রকট হয়ে উঠেছে।  এটা অত্যন্ত উদ্বেগজনক এজন্য যে, যদি এ অবস্থা চলতে থাকে উগ্রবাদী-জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে।

সরকারকে আবারো সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এখন উচিত হবে বিরোধী দলের সাথে আলোচনায় বসা।  আমরা বারবার বলে আসছি, আমরা কথা বলতে চাই, আলোচনা করতে চাই, জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করতে চাই।  সংলাপের মধ্যদিয়ে সমস্যা কীভাবে সমাধান করা যায়, পথ বের করতে চাই।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা ক্ষমতায় যেতে চাই না।  আমরা চাই, এমন একটা নির্বাচনী ব্যবস্থা বের করা হোক, যার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করা যায়।  ক্ষমতা হারানোর ভয়ে সরকার নির্বাচন দিতে চায় না।

তিনি বলেন, আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে আবারো নতুন মামলা দিয়ে ‘অন্যায়ভাবে’ আটকিয়ে রাখা হয়েছে। দেশে আজ আইনের শাসন নেই।  এখানে আছে ব্যক্তি শাসন, একটি দলের শাসন।

সংগঠনের সভানেত্রী সুলতানা রাজিয়া শাওনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, বিএনপির মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসিরউদ্দিন অসীম, মহিলা দলের সভানেত্রী শিরিন সুলতানা, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার রাগিব রউফ চৌধুরী, সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলালউদ্দিন, ছাত্র দলের সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদসহ সংগঠনের ছাত্র নেতৃবৃন্দ।
১৫ ফেব্রুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে