বুধবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬, ০২:০৯:১৮

বিএনপিতে তবুও ফখরুলের বিরুদ্ধে চক্রান্ত

বিএনপিতে তবুও ফখরুলের বিরুদ্ধে চক্রান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক : তবুও ষড়যন্ত্র থেমে নেই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে। সারা দেশে দলের ভিতরে-বাইরে জনমতে বর্তমানে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পরই মির্জা ফখরুলের অবস্থান।

সর্বশেষ ৫ জানুয়ারি নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশে মির্জা ফখরুল যখন বক্তৃতা দিচ্ছিলেন, তখন মুহুর্মুহু করতালিতে নেতা-কর্মীরা তাকে বরণ করে নেন। বিএনপি ছাড়াও দেশি-বিদেশি কূটনৈতিক মহল, নাগরিকসমাজসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে মির্জা ফখরুলের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।

নেতা-কর্মীদের বড় অংশেরই অভিযোগ, ক্ষুদ্র একটি মহল ‘মির্জা ফখরুল ঠেকাও’ আন্দোলনে ব্যস্ত। তারা নেতা-কর্মীদের কাছে প্রতিনিয়ত মির্জা ফখরুলবিরোধী বার্তা দিচ্ছেন। এ নিয়ে বিব্রত খোদ খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান।

ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব নেওয়ার পর সাতবার জেল খেটেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে রয়েছে ৮৪ মামলা। ৩৫টি মামলায় তার বিরুদ্ধে চার্জশিটও গ্রহণ করা হয়েছে। দফায় দফায় কারাগারে যাওয়ার পর বেশ কয়েকটি জটিল রোগেও আক্রান্ত বিএনপির এই নেতা। এর পরও প্রায় পাঁচ বছর ধরে দক্ষতার সঙ্গে ‘ভারপ্রাপ্ত’ মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।

জানা যায়, সর্বশেষ স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এক সদস্যের দীর্ঘ সোয়া ঘণ্টা বক্তব্য নিয়ে বিএনপির ভিতরে-বাইরে তোলপাড় শুরু হয়েছে। বৈঠকের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশের পর নেতা-কর্মীরা এ নিয়ে নানাভাবে বিশ্লেষণ শুরু করেছেন।

স্থায়ী কমিটির ওই সদস্যের দেওয়া বক্তব্যের সিংহভাগই ছিল মির্জা ফখরুলকে ইঙ্গিত করে। বৈঠকে কিছু না বললেও স্থায়ী কমিটির নেতাদের বড় অংশই এ বক্তব্যে ক্ষুব্ধ। বৈঠকে স্থায়ী কমিটির কয়েকজন সদস্য কথা বলতে চাইলেও তাদের থামিয়ে দেন ওই নেতা।ওই বৈঠকেও এ নিয়ে কেউ কেউ উষ্মা প্রকাশ করেন।

সূত্রমতে, মির্জা ফখরুলের পূর্ণাঙ্গ মহাসচিব পদে আসা ঠেকাতে দল ভারী করার চেষ্টা করছে ছোট একটি অংশ। এ নিয়ে স্থায়ী কমিটির প্রবীণ এক সদস্যকে সামনে রাখা হচ্ছে। যদিও শারীরিক অসুস্থতার কারণে মহাসচিব হওয়ার ব্যাপারে বরাবরই অপারগতা প্রকাশ করে আসছেন ওই প্রবীণ নেতা।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির প্রভাবশালী এক সদস্য জানান, মহাসচিব কে হবেন, তা দলের চেয়ারপারসনই নির্ধারণ করবেন। চেয়ারপারসনকেই কাউন্সিলের মাধ্যমে সে দায়িত্ব দেওয়া হবে। এ নিয়ে বিএনপিতে যা চলছে, তা মৃদু প্রতিযোগিতা। দলীয় সূত্রের দাবি, বিএনপির মতো বিশাল জনপ্রিয় দলে এ ধরনের প্রতিযোগিতা থাকবেই। একে নেতিবাচকভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই।

জানা গেছে, গত বছরের মাঝামাঝিতে লন্ডন সফরে বড় ছেলে তারেক রহমানের সঙ্গে শলাপরামর্শ করে মির্জা ফখরুলকে মহাসচিব করার সিদ্ধান্ত নেন খালেদা জিয়া। দেশে ফিরেই মির্জা ফখরুলকে চিঠি দেওয়ার কথাও ছিল। মাঠপর্যায়ের নেতা-কর্মীরাও প্রত্যাশা করছিলেন, ভারমুক্ত হচ্ছেন মির্জা ফখরুল। এর পরও দুই দফায় মির্জা ফখরুলকে পূর্ণাঙ্গ মহাসচিবের চিঠি দেওয়া নিয়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যে আলোচনা শোনা যায়।

তবে সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, কাউন্সিলের মাধ্যমেই মির্জা ফখরুলকে মহাসচিব ঘোষণা করা হবে। চেয়ারপারসন নির্বাচনের পরই খালেদা জিয়া মহাসচিব নিয়োগ দেবেন। অবশ্য দলের একটি অংশ মনে করে, বিএনপির সাংগঠনিক দক্ষতায় কিছুটা পিছিয়ে রয়েছেন মির্জা ফখরুল। তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তার যোগাযোগ কম। তার পরও সামগ্রিক বিবেচনায় দলের ভিতরে-বাইরের জনপ্রিয়তায় ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবই এগিয়ে।

এ প্রসঙ্গে বিএনপি সমর্থিত এক বুদ্ধিজীবী বলেন, ‘বিএনপিতে প্রায় পাঁচ বছর ধরে মহাসচিব নেই— এটা দলের দুর্বলতা। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ক্লিন ইমেজের। সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। তাকে কেন পূর্ণাঙ্গ মহাসচিব নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না, তা বোধগম্য নয়। যদি তার দক্ষতার ঘাটতি থাকে, তাহলে যোগ্য কাউকে সে পদ দেওয়া হোক। কিন্তু এত বড় দলে বছরের পর বছর মহাসচিব থাকবে না, তা কাম্য নয়।’ -বিডি প্রতিদিন

১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে