রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০৮:৪০:৪৮

এবার হঠাৎ চালের কেজি কত হলো জানেন?

এবার হঠাৎ চালের কেজি কত হলো জানেন?

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে চালের বাজার। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ঝিনাইদহের খুচরা বাজারে প্রতি কেজি মোটা চালের দাম বেড়েছে ৭ থেকে ৯ টাকা পর্যন্ত। তবে সরু চালের দাম বেড়েছে তুলনামূলক কম। হঠাৎ করেই মোটা চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় নিম্ন মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা চরম বিপাকে পড়েছেন।

চালকল মালিকরা বলছেন, দেশের বিভিন্ন এলাকায় বন্যার কারণে মোটা চালের চাহিদা বেড়ে গেছে। সেইসঙ্গে ধানের দাম মণ প্রতি বেড়েছে ২০০ টাকা। এছাড়া রয়েছে ধানের সংকট। 

অন্যদিকে খুচরা বিক্রেতা বলছেন, হঠাৎ করে মোটা চালের চাহিদা বেড়ে যাওয়ার সুযোগে চালকল মালিক ও কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে চালের দাম বাড়াচ্ছে।

জানা যায়, দুই সপ্তাহ আগে ঝিনাইদহের বাজারে প্রতি কেজি স্বর্ণা চালের দাম ছিল ৪৮ থেকে ৫০ টাকা কেজি। তা এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৭ টাকায়। কাজললতা ৫৬ থেকে ৫৮ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৫ টাকায়। আর সরু চাল মিনিকেট ৬৫ থেকে এখন ৭০ টাকা। আর বাসমতি বিক্রি হচ্ছে ৮৮ থেকে ৯০ টাকায়। যা আগে বিক্রি হয়েছিল ৮২ থেকে ৮৪ টাকায়।

শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঝিনাইদহ শহরের নতুন হাটখোলা, ওয়াপদা ও হামদহ বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি স্বর্ণা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকায়। এছাড়াও কাজলতা ৬৫, আঠাশ ৬২, মিনিকেট ৭০ ও বাসমতি চাল আকারভেদে ৮৮ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ওয়াপদা বাজারে চাল কিনতে আসা চা দোকানি বাবু মিয়া বলেন, ‘গত বছর যে চাল ৪০ টাকায় কিনতাম তা এখন ৫৫ টাকা করে কিনতে হচ্ছে।

সরকার অনেক জায়গায় অভিযান চালাচ্ছে টিভিতে দেখি। তবে চাল ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযান চালাতে দেখি না।’
আরেক চাল ক্রেতা আব্দুস সালাম বলেন, ‘আগের চেয়ে কেজি প্রতি ৭ টাকা বেশি দামে চাল কিনলাম। ব্যবসায়ীরা তাঁদের খেয়াল খুশি মত চালের দাম বাড়িয়েই যাচ্ছেন। প্রশাসন এখন পর্যন্ত এদিকে নজর দিচ্ছে না।’

নতুন হাটখোলা বাজারের চাল ব্যবসায়ী আসাদুর হমান বলেন, ‘মাস দেড়েকে আগে হঠাৎ করেই মিনিকেট ও বাসমতি চালের দাম বেড়ে গেছিল। আবার নতুন করে কোনো নির্দেশনা ছাড়াই ১৫ দিন আগে মোটা চালের দাম কেজি প্রতি ৭ থেকে ৯ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে চালকল মালিকরা। তারা সিন্ডিকেট করে যখন যা ইচ্ছে তাই করে। এজন্য ক্রেতাদের সঙ্গে আমাদের বিবাদে জড়াতে হয়।’

হামদহ এলাকার মুদি ব্যবসায়ী উজ্জ্বল কুমার বলেন, ‘আড়ত থেকে বেশি দামে চাল কিনে এনে আগের মত বিক্রি করতে পারছি না। আমাদের কাছে থেকে সাধারণত নিম্ন আয়ের মানুষেরা চাল কেনে। কয়েকদিন ধরে চাল বিক্রি অনেক কমে গেছে।’

শৈলকুপার ভাটই বাজার অটো রাইস মিলের মিলক টিপু সুলতান জানান, ‘পরিবহন, শ্রমিক ও বিদ্যুতের দাম যেভাবে বাড়ছে সে তুলনায় চালে দাম বাড়েনি। এছাড়াও হঠাৎ করে ধানের দামও বেড়ে গেছে। তাই কয়েক প্রজাতির চালের দাম কেজি প্রতি খুবই সামান্য বাড়ানো হয়েছে।’

জেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘বাজারে আগের মত ধান পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে মোটা চাল ভোক্তাদের চাহিদা অনুযায়ী আমরা উৎপাদন করতে পাচ্ছি না। এজন্য মোটা চালের দাম অল্প কিছু বেড়েছে। আমাদের এখানে অবৈধ মজুতদার ও সিন্ডিকেট নেই।’

এ বিষয়ে ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আওয়াল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে কঠোরভাবে বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। সিন্ডিকেট ও অবৈধ মজুতদারদের সন্ধান পেলেই তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

উল্লেখ্য, ঝিনাইদহের ছয় উপজেলায় ১৬ টি অটো রাইস মিলসহ মোট ২৭০টি চালকল রয়েছে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে