রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১১:২৭:৩৩

‘আপনারা এখনও ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বরদের রেখেছেন কেন? অবিলম্বে প্রত্যাহার করুন’

‘আপনারা এখনও ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বরদের রেখেছেন কেন? অবিলম্বে প্রত্যাহার করুন’

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : অন্তর্বতী সরকারের প্রতি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানদের প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। 

তিনি বলেছেন, ‘আপনারা এখনও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান, মেম্বরদের রেখেছেন কেন? এরাই তো সবচেয়ে বড় আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসর। সংসদ সদস্যরা তাদের নিজেদের সাণ্ডাপাণ্ডা দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বর বানিয়েছেন। সুতরাং অবিলম্বে তাদের প্রত্যাহার করতে হবে।’

রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) যশোর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে পদচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের বিচারের দাবিতে এবং গোপালগঞ্জে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানীর ওপর হামলা, ক্রীড়া সম্পাদক শওকত আলী দিদারকে নৃশংস হত্যার প্রতিবাদে গণসমাবেশের আয়োজন করা হয়।

৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়ে দেশের সকল সিটি করপোরেশনের মেয়র, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যানদের বরখাস্ত করে। তবে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেম্বর এখনও নিজ পদে বহাল আছে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘অনেকে আমরা মনে করেছিলাম, আওয়ামী লীগ আর নেই। তারা পালিয়ে গেছে। কিন্ত আপনাদের বলি, অনেকে পালিয়ে গেছেন, আবারও অনেকে ঘাপটি মেরে আছেন।’

তিনি বলেন, ‘মিডিয়ায় উঠে এসেছে, শেখ হাসিনার ১৬ বছরের শাসন আমলে বিদেশ থেকে ঋণ নিয়েছিলেন ১৮ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকা। আর বিদেশে টাকা পাচার হয়েছে ১৭ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা। তাহলে কয় টাকা উন্নয়নের জন্য শেখ হাসিনা ব্যয় করেছেন। এ টাকাগুলো আওয়ামী লীগের কোনো নেতা, শেখ পরিবারে কোনো সদস্য কিংবা ঘনিষ্ঠ লোক, সালমান এফ রহমানের সুপারিশকৃত কোনো ব্যক্তি বিদেশে নিয়ে গেছেন।’

বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ‘আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থান ঘটানোর চেষ্টা করবে। প্রশাসনে এখনও তাদের লোক আছে, পরিবর্তন হয়নি, তারা নিশ্চুপ নেই।’

তিনি বলেন, ‘কয়েক দিন আগে গোপালগঞ্জে তাদের সামনে (প্রশাসন) দিদারকে পিটিয়ে হত্যা করল। কেউ তো এগিয়ে আসেনি। তার মানে একটা কৃত্রিম অরাজকতা তৈরি করে শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তনের পথ সুগম করা হচ্ছে। সেই ক্ষেত্রে কারা মদদ দিচ্ছে এবং কাজ করছে তাও আমরা জানি।’ 

বিএনপির সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনার মতো সোনার হরিণ ভারত আর কখনও পায়নি। যা বলে তাই করে। সবচেয়ে বড় হীরার নাম কোহিনুর। আর ভারতের কোহিনুর ছিলেন শেখ হাসিনা। এত বড় একটা হীরা হারিয়ে ওদের মনোবেদনা, মনকষ্ট যেন থামছেই না।’ 

তিনি বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে যা হচ্ছে, জনগণ ভিন্ন কিছু মনে করে। তারা মনে করে, এখানে বিদেশিদের হাত আছে। একটা শান্তিপূর্ণ দেশ, ৫ আগস্টের পরে আমরা বিশুদ্ধ বাতাস নিতে পারছি, বাড়িতে নিরাপদে ঘুমানোর সুযোগ খুঁজছি, রাতে গোয়েন্দা পুলিশ এসে দরজায় নক করছে না, ধরে নিয়ে যাবে এই আশঙ্কা থেকে তো মুক্ত হয়েছি। এটা ওই পার্শ্ববর্তী (ভারত) সহ্য করতে পারছে না।’

গণসমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান।

জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি রবিউল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা আমির ফয়সালের পরিচালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি সরদার নুরুজ্জামান, যুগ্ম-সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি, যশোর জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আনসারুল হক রানা, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি নির্মল কুমার বিট, সাংগঠনিক সম্পাদক আলী হায়দার রানা, যুগ্ম-সম্পাদক রেজোয়ানুল ইসলাম খান রিয়েল, নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মোস্তফা তরফদার রয়েল, সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে