সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০৭:৩৭:১১

৮০ জন ডাক্তারের দীর্ঘ ১০ ঘণ্টার চেষ্টায় অস্ত্রোপচারে আলাদা হলো রিফা ও শিফা

৮০ জন ডাক্তারের দীর্ঘ ১০ ঘণ্টার চেষ্টায় অস্ত্রোপচারে আলাদা হলো রিফা ও শিফা

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মধ্যমে আলাদা করা হয়েছে পেটে ও বুকে জোড়া লাগানো যমজ দুই বোন শিফা ও রিফাকে। আজ সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সংবাদ সম্মেলন করে শিশু দুটিকে সফলভাবে আলাদা করার কথা জানায়।

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. সাহনুর ইসলাম জানান, গত ৭ সেপ্টেম্বর রিফা ও শিফাকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আলাদা করা হয়। বিভিন্ন বিভাগের ৮০ জন চিকিৎসক প্রায় ১০ ঘণ্টা ধরে এই অস্ত্রোপচার করেন।

বাদশা ও মাহমুদা দম্পতির সন্তান ১৫ মাসের রিফা ও শিফার বাড়ি বরগুনার বেতাগী উপজেলায়। এই দম্পতির ছয় বছরের আরো এক মেয়ে আছে। বাদশা ঢাকার বড়বাগ এলাকার একটি মেসে থেকে গার্মেন্টসে চাকরি করেন।

অধ্যাপক সাহনুর বলেন, ‘চলতি মাসের ১৪ জুন মাহমুদা বুক পেট জোড়া লাগানো শিশু দুটিকে নিয়ে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

২১ জুন তাদের হাসপাতালে ভর্তি করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। মেডিক্যাল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এক মাস পর তাদের আসতে বলা হয়। এক মাস পর তাদের চিকিৎসা দিয়ে আরো এক মাস পর দেখা করতে বলা হয়।’

ডা. সাহনুর আরো বলেন, ‘গত ৭ সেপ্টেম্বর অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আলাদা করার পর দুই বোনকে আইসিইউতে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়।

৮ সেপ্টেম্বর রিফাকে ও ৯ সেপ্টেম্বর শিফাকে ভেন্টিলেটর মুক্ত করা হয়। এর মধ্যে রিফা সম্পূর্ণ সুস্থ থাকলেও শিফা অসুস্থ ছিল। তার হার্টের সমস্যা দেখা দেয়। তাকে হার্ট ফাউন্ডেশনে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে শিফার পিত্তনালির সংযোগ খুলে যাওয়ায় আবার অস্ত্রোপচার করা হয়। শিফা বর্তমানে আইসিইউতে আছে।’

জানা যায়, শিফা ও রিফার চিকিৎসার খরচ বহন করেছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সমাজসেবা দপ্তর, আকিজ গ্রুপ, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট, বিএসএমএমইউ, বারডেমের ট্রান্সফিউশান মেডিসিন বিভাগ, ল্যাবরেটরি মেডিসিন বিভাগ এবং নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক ও তার মা-বাবা।

ডা. সাহনুর বলেন, ‘কখনো কখনো জোড়া লাগানো যমজদের দুজনের কাউকে রক্ষা করা যায় না। কখনো একজনকে রক্ষা করা সম্ভব হয়।’

প্রেস ব্রিফিংয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল।

রিফা ও শিফার বাবা বাদশা বলেন, ‘ওরা যখন মায়ের গর্ভে ছিল তখন চিকিৎসক জানান, তাদের যমজ সন্তান হবে। কিন্তু জন্মের সময় জানা যায় শিশু দুটি একে অপরের সঙ্গে জোড়া লাগানো।’

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে