বুধবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬, ১০:২৯:২৬

গোয়েন্দা নজরে ৫ বিদেশি

গোয়েন্দা নজরে ৫ বিদেশি

নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশে ক্লোন এটিএম কার্ড ব্যবহার করে অর্থ জালিয়াতির ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর সে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক জালিয়াতি এড়াতে যত দ্রুত সম্ভব চিপ-ভিত্তিক এটিএম কার্ড চালু করার পরামর্শ দিয়েছে।

এটিএম কার্ড জালিয়াতির মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা চুরি হওয়ার ঘটনা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বুধবার ঢাকায় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর সাথে জরুরি বৈঠক করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা জানিয়েছেন, ম্যাগনেটিক কার্ড একটু পুরনো দিনের।  সেই তুলনায় চিপ-ভিত্তিক কার্ডে জালিয়াতি করা কঠিন।

গত শুক্রবার থেকে ইস্টার্ন ব্যাংক, সিটি ব্যাংক ও ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের চারটি এটিএম বুথে গ্রাহকের কার্ডের তথ্য-উপাত্ত চুরি করে এটিএম থেকে অর্থ তোলার ঘটনা ঘটে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, স্কিমিং ডিভাইস বসিয়ে এসব তথ্য চুরি করা হয়েছে।
ওই সময়ের মধ্যে ওই চারটি বুথে ১২০০ কার্ডে লেনদেন হয়েছে।
তবে তথ্য চুরি ও কার্ড ক্লোন হয়েছে ৩৬ টির মতো কার্ডে।  এভাবে প্রায় ২০ লাখের মতো অর্থ চুরি করা হয়েছে।

কার্ড জালিয়াতির ঘটনার পর ওই ১২০০ কার্ড এরই মধ্যে বাতিল করা হয়েছে।
মি. সাহা বলেন, আগামী সাতদিনের মধ্যে ক্লায়েন্টদের চুরি হওয়া টাকা ফিরিয়ে দেবে ব্যাংকগুলো এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে।

কালই টাকা ফিরিয়ে দিচ্ছে ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড।  সেই সাথে এটিএম বুথের নিরাপত্তা কর্মীদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, এটিএম বুথগুলোতে স্কিমিং যন্ত্র বসিয়ে কার্ড জালিয়াতির মাধ্যমে টাকা ওঠানোর সাথে পূর্ব ইউরোপের ক`জন নাগরিক জড়িত রয়েছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশ ডিএমপি`র অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, এটিএম বুথে জালিয়াতির ঘটনায় চার থেকে পাঁচজন বিদেশি নাগরিক এখন পুলিশের নজরদারিতে রয়েছেন।

এদের ঘিরেই পুলিশ এখন তদন্ত চালাচ্ছে বলে জানান তিনি।  তিনি বলেন, এটিএম বুথের সিসিটিভি ফুটেজে আমরা দেখেছি, ৪-৫ জন লোক একই মুখাবয়বের; তবে এর মধ্যে একজনের চেহারা স্পষ্ট।

এদের সাথে ক’জন বাংলাদেশিও রয়েছেন বলে পুলিশ সন্দেহ করছে।
আমরা তদন্ত করে নিশ্চিত হওয়ার পর জড়িত সব ব্যক্তিকেই গ্রেফতার করবো।

সম্প্রতি ঢাকার বেশ ক’টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের এটিএম বুথে ক্লোন কার্ড ব্যবহার করে অর্থ উত্তোলনের ঘটনা ঘটেছে।
এতে অন্তত ১০০০ গ্রাহক আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে ব্যাংকগুলো বলছে।

এটিএম কার্ড গ্রাহকদের অ্যাকাউন্ট থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেবার অভিযোগ উঠবার পর গত রোববার দেশটির অধিকাংশ ব্যাংকই তাদের এটিএম বুথগুলো থেকে অন্য ব্যাংকের গ্রাহকদের সেবা দেয়া বন্ধ রাখে।

বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ন্যাশনাল পেমেন্ট সিস্টেমের আওতায় এটিএম বুথে আন্তঃব্যাংকিং সেবা দিয়ে থাকে অর্থাৎ এক ব্যাংকের বুথ থেকে অন্য ব্যাংকের গ্রাহকেরা অর্থ লেনদেন করতে পারেন।

কিন্তু গত শুক্রবার বেসরকারি ইস্টার্ন ব্যাংকের ২১ জন গ্রাহকসহ আরো কয়েকটি ব্যাংকের গ্রাহকদের এটিএম কার্ডের তথ্য জালিয়াতি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে।

এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ব্যাংক সতর্কতা জারি করার পর ব্যাংকগুলো এই ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।  বাংলাদেশে এটিএম কার্ড ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ৮৫ লাখ। এদের সেবা দেয়ার জন্য সবগুলো ব্যাংক মিলে সাত হাজারের মতো এটিএম বুথ রয়েছে।  সূত্র : বিবিসি
১৭ ফেব্রুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে