বৃহস্পতিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬, ০৫:২৬:৫৪

নতুন রূপ পাচ্ছে বাংলাদেশ

নতুন রূপ পাচ্ছে বাংলাদেশ

নিউজ ডেস্ক : দু-একটি উড়াল সেতু থাকলেও এর আগে দেশে কোনো উড়াল সড়ক ছিল না। বর্তমান সরকারের দুই মেয়াদে নির্মিত হয়েছে বেশ কয়েকটি উড়াল সড়ক, যেগুলোতে যান চলাচল করছে। কয়েকটি উড়াল সড়কের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। একইভাবে এর আগে দেশে কোনো চার লেন সড়ক ছিল না। এর মধ্যেই ঢাকা-ময়মনসিংহ চার লেন সড়ক চালু হয়েছে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেন সড়কটিও চলতি বছরেই চালু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। দেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো পদ্মা সেতুর কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। আশা করা হচ্ছে, ২০১৮ সালের মধ্যেই এই সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে পারবে।

অর্থনীতি বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এই সেতু চালু হলে দক্ষিণাঞ্চলের অবহেলিত তিন কোটি মানুষের জীবনমানই শুধু বদলে যাবে না, জাতীয় প্রবৃদ্ধিও দেড় থেকে দুই গুণ বেড়ে যেতে পারে। দিনে-রাতে বেশির ভাগ সময়ই যেখানে বিদ্যুতের লোডশেডিং চলত, সেখানে এখন বিদ্যুতের চাহিদা ও উত্পাদন সংগতিপূর্ণ হয়েছে।

মানুষের মাথাপিছু আয় দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের দুটি সমুদ্রবন্দরের একটি প্রায় পরিত্যক্ত ও অন্যটি কোনো রকমে চালু থাকলেও জাতীয় প্রয়োজন মিটাতে পারছিল না। দুটি সমুদ্রবন্দরই আজ পুরোদমে সক্রিয়। পটুয়াখালীর পায়রা নদীর মোহনায় তৃতীয় সমুদ্রবন্দর নির্মাণের কাজও দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। চলতি মাসেই সীমিত পরিসরে কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। রাজধানীতে মেট্রো রেল নির্মাণের প্রাথমিক কাজ সম্পন্ন হয়েছে। মূল কাজও শুরু হতে যাচ্ছে আগামী মাসে।

কর্ণফুলী নদীতে টানেল নির্মাণের চুক্তি হয়ে গেছে, কাজও শুরু হবে খুব শিগগির। দেশের প্রথম পরমাণু বিদ্যুেকন্দ্র নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলেছে। এভাবে অর্থনীতি ও জনজীবনের জন্য জরুরি প্রতিটি ক্ষেত্রেই উন্নয়নকাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। তার সুফলও পাওয়া যাচ্ছে। বিদেশি বিনিয়োগ আসার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

এরই মধ্যে ভারতের দুটি বড় শিল্পগোষ্ঠী রিলায়েন্স ও আদানির পক্ষ থেকে ১১০০ কোটি ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনার কথা জানানো হয়েছে। চীন, মালয়েশিয়াসহ কয়েকটি দেশের উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, দ্রুততম সময়ে বাংলাদেশে বড় বিনিয়োগের পরিকল্পনা তাঁদেরও রয়েছে। বিশ্বব্যাংক, আইএমএফসহ শীর্ষস্থানীয় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোও বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্ভাবনার ভূয়সী প্রশংসা করছে।

অন্য অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশ অতি ক্ষুদ্র একটি ভূখণ্ড। অথচ আমাদের জনসংখ্যা প্রায় ১৬ কোটি। তাদের কর্মসংস্থান, খাদ্য ও বাসস্থানের নিশ্চয়তা প্রদানের জন্য পরিকল্পিত উন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই। অথচ সেই উন্নয়ন প্রচেষ্টা এত দিন ছিল না বললেই চলে।

স্বাধীনতার চার দশক পরে এসে মানুষ দেখছে, উন্নত অনেক দেশের মতো অবকাঠামো নির্মাণ আমাদের পক্ষেও সম্ভব, এত দিন তাদের কাছে যা ছিল স্বপ্নের মতো। আমরা মনে করি, উন্নয়নের যে ধারা সূচিত হয়েছে, তা অব্যাহত থাকবে। অবকাঠামো ও জ্বালানি উন্নয়নের পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মানবসম্পদ উন্নয়নের যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, তাকে আরো গতিশীল করতে হবে।

এই ধারা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, বাংলাদেশ শিগগিরই মধ্যম আয়ের দেশ হয়ে উন্নত দেশের কাতারে নিজের স্থান করে নিতে সক্ষম হবে। একইভাবে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নেবে। আর এই ধারা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সুশাসন অত্যন্ত জরুরি। আমাদের বিশ্বাস, সরকার সে ক্ষেত্রেও সফল হবে। -কালেরকণ্ঠ

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে