এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : ২০০৮ সালের পর থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২০ বছর আমাকে কোনো পদ-পদবিতে রাখেননি বলে আদালতকে জানিয়েছেন ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ। সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাগীব নূরের আদালতে রিমান্ড শুনানিতে এ কথা বলেন তিনি।
এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পল্টন মডেল থানার সাব-ইন্সপেক্টর তন্ময় কুমার বিশ্বাস সুলতান মনসুর আহমেদকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।
বিএনপিপন্থী আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন।
তিনি বলেন, তিনি ডাকসুর সাবেক ভিপি। সারা জীবন বেঈমানির রাজনীতি করেছেন। শেখ হাসিনা ৪০ বছর বয়সে তাকে ডাকসুর ভিপি করেন। হাসিনার সঙ্গেও তিনি বেঈমানি করেন।
লাস্ট বেঈমানি করেছেন ২০১৮ সালে। তাকে ধানের শীষ দেওয়া হয়। নির্বাচিত হওয়ার পর আরেক বেঈমানি করেন। আবার আসেন শেখ হাসিনার কাছে।
তিনি বলেন, গত বছর ২৮ অক্টোবর বিএনপির বৃহৎ মহাসমাবেশ হয়। সেখানে যুবলীগ, ছাত্রলীগ, পুলিশ গুলি চালায়। হাজার হাজার নেতাকর্মী আক্রান্ত হয়। যুবদলনেতা শামীম মারা যান। এ ঘটনায় এ আসামি প্রত্যক্ষভাবে জড়িত।
তার ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করছি। তবে মনসুর আহমেদের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। আদালত তার বক্তব্য শুনতে চান।
মনসুর আহমেদ বলেন, মামলার ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আমার বড় মেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে ঢাকা শাহিন কলেজের টিচার। মেজো মেয়ে কানাডার অটোয়াতে থাকে। আর ছোট মেয়ে ব্যারিস্টার। আমার মেজো মেয়ে সন্তানসম্ভবা। তাকে দেখতে ১০ মে কানাডা যাই। সেখান থেকে নিকটবর্তী দেশ আমেরিকায় আমার ভাইয়ের দুই ছেলে থাকে। সেখানে যাই তাদের দেখতে।
তিনি বলেন, ১৯৬৮ সালে আইয়ুববিরোধী থেকে আন্দোলন শুরু করি। রাজনীতির ৫৫ বছর হতে যাচ্ছে। ১৯৭০-এর নির্বাচনে, ৭১-এর স্বাধীনতাযুদ্ধ করেছি। এরশাদের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। ডাকসুর নির্বাচনে জয়ী হই। এ নিয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গেও বৈঠক হয়। ১৯৯৬-তে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মৌলভীবাজার-২ থেকে নির্বাচিত হই। ২০০৮-এর পর থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যিনি দেশত্যাগ করেছেন নেতাকর্মীদের রেখে, তিনি ২০ বছর আমাকে কোনো পদ-পদবিতে রাখেননি।
ডাকসুর সাবেক এ নেতা বলেন, ২০১৮ সালে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিই। ধানের শীষ নিয়ে ২০১৮ সালে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে জয়ী হই। আমাদের সব প্রগ্রাম কামাল হোসেন ঠিক করে দেন। আমাকে ফোন দিয়ে সংসদে যোগদান করতে বলেন। যে সময় কোটা আন্দোলন, তখন দেশের বাইরে ছিলাম। ২০১৮ সালে কোটা বাতিলে সংসদে ইতিবাচক ভূমিকা রাখি।
তিনি বলেন, আমি হার্টের রোগী। ২০১২-তে হার্টে তিনটা রিং বসানো হয়। দুই বেলা ওষুধ খেতে হয়। আর আমাকে বিদেশ যাওয়ার সময় নয়, আসার সময় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চাইলে পাঁচ-ছয় বছর দেশে না এসেও থাকতে পারতাম। খুন, দুর্নীতি, অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত না। সবাই যেভাবে দেশ নিয়ে ভাবে, আমিও ভাবি। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাকে গ্রেপ্তার করানো হয়েছে। এর আগে একটা মামলাও নেই আমার বিরুদ্ধে। আদালতের কাছে সুবিচার চাই।