বুধবার, ০২ অক্টোবর, ২০২৪, ১১:২৫:৪৩

জানেন মেনন সেই দিন কী বলেছিলেন আজহারী দেশ ছাড়ার পর?

জানেন মেনন সেই দিন কী বলেছিলেন আজহারী দেশ ছাড়ার পর?

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারির শুরুতে পারিপার্শ্বিক নানা কারণে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন দেশের জনপ্রিয় ইসলামী আলোচক মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী। তার দেশ ছাড়ার পর জাতীয় সংসদে দেওয়া ভাষণে ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।

দীর্ঘ সাড়ে ৪ বছর পর মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরেছেন আজহারী। বুধবার (২ অক্টোবর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে নিজেই এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন তিনি।

এরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয় নানা আলোচনা-সমালোচনা। তুমুল জনপ্রিয়তার পরও কেন দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন এই ইসলামী আলোচক, এমন প্রশ্ন ঘুরছে নেটিজেনদের টাইমলাইনে। পূর্ববর্তী সময়ের নানা বক্তব্য-আলোচনাও সামনে ঘুরছে।

২০২০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে রাশেদ খান মেননের দেওয়া এক বক্তব্যে দেখা গেছে, তিনি আজহারীর দেশ ছাড়ার সুযোগ নিয়ে খুবই উত্তেজিত হয়ে পড়েন। বক্তব্যে তিনি মিজানুর রহমান আজহারী কী করে নির্বিঘ্নে মালয়েশিয়া চলে গেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন।

রাশেদ খান মেনন তখন বলেন, বঙ্গবন্ধু এ দেশকে ধর্ম নিরপেক্ষতার মূলনীতি উপহার দিয়েছিলেন। ধর্ম নিয়ে রাজনীতি, ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজনের বিরুদ্ধে তিনি কেবল সোচ্চার ছিলেন না, বাস্তবে তা অনুসরণও করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কারও ধর্মানুভূতিতে আঘাত দিলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি এ সংসদে স্পিকারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে ইউটিউবে প্রচারিত ধর্মীয় বিভাজন সৃষ্টিকারী কিছু বক্তব্যের পেন-ড্রাইভ দিয়েছিলাম। সেসবের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, জানা নেই।

তিনি বলেন, সম্প্রতি যুদ্ধাপরাধী সাঈদীর স্বপক্ষে ওয়াজকারী জনৈক আজাহারী সম্পর্কে ধর্মমন্ত্রী বলেছেন, তিনি জামায়াতের পক্ষ হয়ে কাজ করেছেন। অথচ আইসিটি আইনে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। বরং তাকে নির্বিঘ্নে মালয়েশিয়ায় চলে যেতে দেওয়া হয়েছে। আর শরিয়ত বাউলকে আইসিটি আইনে গ্রেপ্তার করে জেলখানায় রাখা হয়েছে।

ওয়ার্কার্স পার্টির এই সভাপতি বলেন, ‘রাষ্ট্র কি অতীতের মতো আবার মৌলবাদকে পোষকতা দিচ্ছে? না হলে আজহারী দেশ ছেড়ে যেতে পারতেন না। খতমে নবুয়ত নতুন করে হুংকার ছাড়তে পারে না। এরাই কয়েকদিন পর পাকিস্তানি কায়দায় ব্লাসফেমি আইন প্রণয়ন করতে বলবে, যেমন এ সংসদেই যুদ্ধাপরাধী নিজামী সে প্রস্তাব তুলেছিলেন।’

সেই সময়ে তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের নামে যে ধর্মীয় আবরণ দিয়ে তাকে পাকিস্তানি আদলে ফিরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে তার ছেদ ঘটানো হয়েছে। কিন্তু সে প্রচেষ্টার অবসান হয়নি। রাষ্ট্রীয় প্রচারে, আমাদের আচার-আচরণে, বেশ-ভূষার পরিবর্তনে তার রেশ আমরা দেখি। ফেসবুক, ইউটিউবের নিত্য প্রচারে সে মানসিকতাকে উসকে দেওয়া হচ্ছে প্রতিদিন।’

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া চলে যাওয়ার ঘোষণা দেন তিনি। তখন তিনি এক ফেসবুক পোস্টে জানান, পারিপার্শ্বিক কারণে এবং গবেষণার জন্য তিনি আগামী মার্চ পর্যন্ত সব ওয়াজ মাহফিল বন্ধ রেখে মালয়েশিয়া যাচ্ছেন।

এরপর চলতি বছরের গত ৬ আগস্ট শিগগিরই দেশে ফিরছেন বলে জানান মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, অনেকে আমাকে মেসেজ করে ও ব্যক্তিগতভাবে ফোন করে জানতে চেয়েছেন আমি কবে দেশে ফিরব। আমি তাদের বলেছি, দ্রুতই দেশে ফিরব। আপনাদের সঙ্গে দেখা করার অপেক্ষায় রয়েছি আমি নিজেও। শিগগিরই সাম্য, মানবিকতার মুক্ত-স্বাধীন, বাংলাদেশে আমি আপনাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাই।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে