এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : একযোগে পদত্যাগ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখার ১৭ জন সমন্বয়ক ও সহ-সমন্বয়ক ।
আজ (৩ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের কনফারেন্স কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তারা।
পদত্যাগকৃত সমন্বয়করা হলেন- আব্দুর রশীদ জিতু, রুদ্র মুহাম্মদ সফিউল্লাহ, হাসিব জামান, জাহিদুল ইসলাম ইমন, জাহিদুল ইসলাম, ফাহমিদা ফাইজা, রোকাইয়া জান্নাত ঝলক, মিশু খাতুন, রাফিদ হাসান রাজন, হাসানুর রহমান সুমন, আব্দুল হাই স্বপন, নাসিম আল তারিক, ঐন্দ্রিলা মজুমদার এবং সহ-সমন্বয়করা হলেন জিয়া উদ্দিন আয়ান, তানজিম আহমেদ, জাহিদুল ইসলাম বাপ্পি ও সাইদুল ইসলাম। তাদের মধ্যে আব্দুর রশীদ জিতু কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগের দুটি কারণ উল্লেখ করা হয়। কারণগুলো হলো- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবির কতিপয় সমন্বয়কের বিতর্কিত কার্যক্রম ও ব্যক্তিগত প্রভাব খাটিয়ে নিজ স্বার্থ উদ্ধারের প্রচেষ্টা এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সরকারি দলের মতো আচরণ ও গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটের বিরুদ্ধে কাজ করা।
পাশাপাশি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লা হত্যাকাণ্ডে একাধিক সমন্বয়কের সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন সমন্বয়করা। সেইসঙ্গে ৯ দফার অন্তর্ভুক্ত দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ, জুলাই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচার, আহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের দাবিগুলোতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নিশ্চুপ থাকা এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বর্তমানে সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠনের মতো ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ তাদের।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান ও জুলাই বিপ্লবে আহত সকল সংগ্রামী ভাইবোনের সুস্থতা কামনা এবং শহীদদের উৎসর্গকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন সমন্বয়করা।
এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আব্দুর রশীদ জিতু। তিনি বলেন, ‘আমরা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি, ৫ আগস্টের দ্বিতীয় স্বাধীনতা সর্বস্তরের, সব পেশার, ও সর্বমতের মানুষের। কোনও একজন বা দুজন, কিংবা কোনও একটি মত এই আন্দোলনের একক কৃতিত্বধারী নয়। সহস্রাধিক শহীদ ও আহতদের রক্ত, অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিসর্জনের মাধ্যমে অর্জিত এই নতুন বাংলাদেশ শুধু একটি গোষ্ঠীর নয় বরং সবার। গণমানুষের মেহনত, ঘাম, ও রক্তের ফসল এই দ্বিতীয় স্বাধীনতাকে সমুন্নত রাখতে এবং স্পিরিটকে লালন করতে যার যার জায়গা থেকে আমরা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবো।’
এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জিতু বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের যেকোনও যৌক্তিক আন্দোলনে আমরা সবসময় পাশে থাকবো। যেকোনও নৈতিক অধিকার আদায়ে আমাদের চেষ্টা সবসময় চলমান থাকবে।’