এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : সরকার দুই সপ্তাহ আগে খুচরা বাজারে ডিমের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছিল। সে অনুযায়ী খুচরায় ডিম বিক্রি হওয়ার কথা প্রতি পিস ১১ টাকা ৮৭ পয়সায়। অথচ বাজারে প্রতি পিস ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা করে। আর ডিমের ডজন বিক্রি হওয়ার কথা ১৪৩ টাকা, বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা।
ডিমের দাম নিয়ে ক্রেতাদের ক্ষোভ-অসন্তোষ থাকলেও তাতে পাত্তাই দিচ্ছেন না বিক্রেতারা। ক্রেতারা জানান, গত দুই দিনের ব্যবধানে ডজনপ্রতি ডিমের দাম বেড়েছে ১০ টাকা।
গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে ও ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র দেখা গেছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, সিন্ডিকেট করে দাম বাড়াচ্ছেন তেজগাঁওয়ের ব্যবসায়ীরা।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে প্রতি ডজন বাদামি ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়, যা সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে প্রায় ৩৭ টাকা বেশি। অন্যদিকে ফার্মের মুরগির সাদা ডিমের ডজনও অধিকাংশ বাজারে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কোথাও কোথাও অবশ্য ১০ টাকা কমেও পাওয়া যাচ্ছে। বাজারে গত সপ্তাহে সাদা ডিমের ডজন ছিল ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিমের দাম ডজন প্রতি ২০ থেকে ২৫ টাকা বেড়েছে।
ভোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে তাদের ব্যাপক ক্ষোভের কথা জানা যায়। তাদের দাবি, ডিমের বাজারে এখনো শক্ত একটা সিন্ডিকেট কাজ করছে। আওয়ামী লীগের পতন হলেও বর্তমান সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। তা না হলে সরকার দাম নির্ধারণের ১৫ দিন চলে গেলেও কেন কার্যকর হয়নি।
আশরাফুল ইসলাম নামের এক ক্রেতা আক্ষেপ করে বলেন, আমাদের মতো যারা নিয়মিত মাছ-মাংস খেতে পারি না, তাদের জন্য ডিমই ছিল ভরসা। এখন দেখি দিন দিন এর দামও বাড়তে শুরু করেছে। এগুলো দেখার কেউ নেই।
রাজধানীর পশ্চিম ভাষানটেকের বাসিন্দা আবদুল আউয়াল জানান, ‘মাছ-মাংসের বিকল্প হিসেবে ডিম কিনি। যেভাবে দাম বাড়ছে তাতে ডিম খাওয়াও বাদ দিতে হবে। সব সবজির দামও নাগালের বাইরে। একসময় ডাল ও আলুর ভর্তা দিয়ে একবেলা খাওয়া গেলেও আলুর যে দাম তাতে আলু ভর্তা খাওয়াও ছেড়ে দিতে হচ্ছে।’
বাজারে ডিমের সংকট নিয়ে ক্ষুদ্র খামারিরা বলছেন, প্রকৃতপক্ষে কোনো সংকট নেই। বরং করপোরেট প্রতিষ্ঠান এবং তেজগাঁওয়ের ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়াচ্ছেন।
বাংলাদেশ পোলট্র্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, দেশে ডিমের কোনো সংকট নেই। বন্যার কারণে কিছু অঞ্চলে উৎপাদন কমলেও অন্যান্য স্থানে উৎপাদন স্বাভাবিক রয়েছে। করপোরেট ও তেজগাঁওয়ের পাইকাররা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়াচ্ছেন। সিন্ডিকেট ধরে আইনের আওতায় আনলে বাজার স্বাভাবিক হবে এবং ক্ষুদ্র খামারিরা দাম পাবেন। এতে করে জনগণও কম দামে খেতে পারবে।