এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : রাজশাহীতে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে ইলিশ মাছ কেটে বিক্রি শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর সাহেব বাজারের মাছপট্টিতে কাটা ইলিশ বিক্রির উদ্বোধন করা হয়। রাজশাহী ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ ও মৎস্যজীবী সমিতির নেতারা এতে অংশ নেন।
কাটা ইলিশের দাম নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন ক্রেতারা।
কেউ কেউ খুশি মনে এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে ইলিশ ক্রয় করেন, অনেকে আবার দামের ঊর্ধ্বগতি ও পরিমাণমতো কেনার সুযোগ না পেয়ে বাড়ি ফিরে যান। এক টুকরা ইলিশ কেনার সুযোগ আছে বলে যে প্রচারণা চালানো হয়, তা বাস্তবে দেখা যায়নি ইলিশের বাজারে।
মাছের অর্ধেক বা কমপক্ষে ২৫০ গ্রাম না নিলে বিক্রেতাদের পক্ষে তা দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানান তারা। মাছের লেজ ও মাথা ক্রয়-বিক্রয় নিয়েও রয়েছে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে এক ধরনের দর-কষাকষি।
এদিকে অনেকেই কাটা ইলিশ কিনতে পেরে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। অনেক দিন পর ইলিশ কিনতে পেরে বিশেষ করে খুশি নিম্ন আয়ের মানুষ। প্রথম দিনে বেশ সাড়া পড়েছে কাটা ইলিশ বিক্রির।
দীর্ঘদিন ধরে ইলিশের দাম ক্রেতার নাগালের বাইরে, আর সে কারণেই অনেক পরিবারে ইলিশের স্বাদ ছিল স্বপ্ন, বছরের পর বছর ইলিশ মাছ কিনতে পারেননি নিম্ন আয়ের মানুষ।
ইলিশ কেটে বিক্রির এ উদ্যোগের ফলে অনেকেই অবশেষে হাঁড়িতে তুলতে পেরেছে জাতীয় মাছ ইলিশ। সেই সুযোগ করে দিয়েছেন রাজশাহীর ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখন সর্বনিম্ন আড়াই শ গ্রাম ইলিশ কিনতে পারবেন যে কেউ। এতে গোটা ইলিশের চেয়ে কেজিতে ২০০ টাকা দাম বেশি পড়বে।
ইলিশ কিনতে আসা একজন গ্রাহক বলেন, দাম বেশি হওয়ার কারণে অনেক দিন ইলিশ মাছ কিনতে পারিনি।
কাল ঘোষণা শুনে এসেছি, এখন মাছ কিনব অল্প পরিমাণে, ইলিশের স্বাদ নিতে পারব। কিন্তু দাম বেশি হচ্ছে। এই দিকে একটু নজর দিতে হবে।
রাজশাহী সাহেববাজারের মাছ বিক্রেতা মোবারক হোসেন বলেন, কেউ চাইলে গোটা মাছও কিনতে পারবেন। আবার কেউ চাইলে কাটা মাছ কিনতে পারেন। প্রথম দিনে কাটা মাছের বিক্রির চাহিদা বেশি। কাটা মাছ কিনতে হলে সাধারণ কেজি দরের মাছের চেয়ে ২০০ টাকা বেশি দিতে হচ্ছে। কেননা মাছ কাটার পর নাড়িভুঁড়ি এ সব কিছু বাদ দিতে হচ্ছে। প্রথম দিন হিসেবে ইলিশ বিক্রি ভালো।
রাজশাহী ব্যবসায়ী সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার আলী বলেন, ক্রেতাদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই এমন উদ্যোগ। যাতে ইলিশ কিনতে পারে সব শ্রেণিপেশার মানুষ। অনেক মানুষ আছে, যারা ১০-১৫ বছর ধরে ইলিশ খায় না। তারা আমাদের কাছে অভিযোগ করেছিলেন, তাদের কারণেই এটা চালু হয়েছে। প্রথম দিনে বেশ ভালা সাড়া পড়েছে। প্রথম আধা ঘণ্টায় প্রায় ৮-১০টি ইলিশ বিক্রি হতে দেখেছি।
তিনি আরো বলেন, এই কাটা ইলিশ যাতে সব সময় বিক্রি হয় আমরা মনিটরিং করব। পাশাপাশি কেউ যদি ইলিশ কেটে বিক্রি করতে না চায়, তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এ ছাড়া দামের বিষয়টি মনিটরিংয়ে রাখা হবে।