বৃহস্পতিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬, ০৮:৫০:২৭

বৃক্ষমানবের কষ্ট দেখে প্রেমে পড়েন হালিমা

বৃক্ষমানবের কষ্ট দেখে প্রেমে পড়েন হালিমা

নিউজ ডেস্ক : কাঁথা সেলাই আর টিউশনি করে সংসার চালান বৃক্ষমানব আবুল বাজানদারের স্ত্রী হালিমা বেগম।  ২০০৫ সাল থেকে স্বামীর হাত-পায়ে ‘শিকড় গজানো’ শুরু হলে সংসারের হাল ধরতে হয় ২২ বছর বয়সী হালিমা বেগমকে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন হালিমা বেগম।  তিনি জানান, কাঁথা সেলাই আর টিউশনি করে যা আয় হয় তা দিয়েই কোনোমতে সংসার চলে।  তার ওপর আবার স্বামীর চিকিৎসার খরচ।

খুলনার দাকোপ উপজেলার চালনা গ্রামের মো. তৈয়ব ও জাহানারা বিবির পাঁচ সন্তানের তৃতীয় হালিমা বেগম।  ২০১১ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় মানবিক বিভাগ থেকে A- পেয়ে উত্তীর্ণ হন।  ২০১১ সালে আবুল বাজানদার চালনা গ্রামে তার বোনের বাড়িতে বেড়াতে যান হালিমা।  সেই থেকে আবুলের সঙ্গে পরিচয়।

এ পরিচয়ে সেই বছরই হালিমা বেগম আবুল বাজানদারকে বিয়ে করেন।  এ বিয়েতে তার মা-বাবার সম্মতি ছিল না।  বিয়ের পর হালিমাকে শুনতে হয়েছে নানান কথা। এরপরও হাল ছাড়েননি তিনি।  শত দুঃখ কষ্টের মাঝে স্বামীর সঙ্গে রয়েছেন হালিমা।

হালিমা বেগম বলেন, আবুলকে যখন আমি এ অবস্থায় দেখি তখন তার প্রতি মায়া সৃষ্টি হয়।  ভাবি, এ সমস্যা নিয়ে মানুষটি কীভাবে জীবনযাপন করে? অবশ্য একসময় তাকে পছন্দ করতে শুরু করি।  পরে আমি নিজেই আমার পছন্দের কথা জানাই।  মা-বাবা বিয়েতে রাজি না হওয়ায় দুজনেই বিয়ে করি।

তিনি বলেন, আবুলকে বিয়ে করার পর বন্ধু-বান্ধব, সমাজের অনেকেই নানা কথা বলেছে।  কেন আমি এমন মানুষকে বিয়ে করলাম।  আমি বলেছি, কিছুই চাই না, শুধু তার সেবা করতে চাই।  আমি চাই, সে তার রোগের কথা ভুলে থাকুক।

হালিমাদের সংসারে তিন বছরের এক মেয়ে রয়েছে।  তার নাম তাহেরা।

হালিমা বলেন, আমার স্বামী সুস্থ হয়ে উঠুক এটা আমার কামনা।  দুজন মিলে মেয়ের সুন্দর একটা ভবিষ্যত তৈরি করতে চাই।  আপনারা শুধু তার জন্য দোয়া করবেন।  মানুষটা ১০ বছর ধরে কষ্ট করছে।  তার কষ্ট কম হলে আমার চেয়ে খুশি কেউ হবে না।
১৮ ফেব্রুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে