এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেছেন, যেভাবে চিন্তা করেন না কেন- হয়ত আমার জেদ হয়ে বসেছে, এই আসন বিএনপির হাতে ফেরত দিতে হবে আমাদের।
নির্বাচনে দল আমাকে মনোনয়ন দেবে কী দেবে না, ওটা পরোয়া করি না। শুনলাম আওয়ামী লীগ সামনের সপ্তাহে রাঙ্গুনিয়ায় মিছিল বের করতে পারে। আওয়ামী লীগ মিছিল বের করলে দৌড়ানোর দায়িত্ব আপনাদের। এরপর যদি মামলা হয়, তার প্রথম আসামি যেন আমাকে করা হয়, এতে আমার গর্ববোধ হবে।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগকে পেটানোর মামলার এক নম্বর আসামি সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে। আওয়ামী লীগের দুঃশাসন-নির্যাতন ১৬ বছর সহ্য করেছি। এখন নির্যাতনের সময় শেষ। আওয়ামী লীগের কোনো মাফ নাই।
শুক্রবার বিকালে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পারুয়া সাহাব্দিনগর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ইউনিয়ন বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে বিএনপির সাবেক স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে হুম্মাম কাদের চৌধুরী এসব কথা বলেন।
বক্তব্যে বাবা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০০৮ সালে আমার বাবা দুই আসন থেকে নির্বাচন করার যখন সিদ্ধান্ত নেন, তখন আমার বাবার খুব ঘনিষ্ঠ একজন ব্যক্তি এসে বললেন- ভাইজান ছেলের তো বয়স হয়ে গিয়েছে, ছেলেকে নামায় দেন। একটা আসনে আপনি করেন, দ্বিতীয়টিতে আপনার ছেলেকে দেন। তখন আমার বাবা হেসে বলল- যেদিন এলাকার মানুষ ঘরে ঢুকে আমার ছেলেকে টেনে বের করে বলবে, এখন আপনি নেতৃত্ব দেন, সেদিন আমার ছেলে নেতা হবে, তার আগে হবে না। আশাকরি নির্বাচনের আগে আগে আপনারা আমার বাড়িতে আসবেন, আমাকে টেনেহিঁচড়ে বের করবেন, আর নেতৃত্ব আমার হাতে তুলে দেবেন।
পরিবার ও তার ওপর আওয়ামী লীগ জুলুম নির্যাতন করেছে উল্লেখ করে হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেন, আমার পরিবারের ওপর আওয়ামী লীগের যে নির্যাতন, তা সবাই জানেন। যে অত্যাচার আমি সহ্য করেছি, আমি নিজে ৭ মাস গুম ছিলাম। তবে আপনাদের উপর আওয়ামী লীগের যে নির্যাতন, তা ভুলে যায়নি। আপনাদের থেকে চাঁদা তোলা থেকে শুরু করে, আপনাদের ভাইদের গুম করে দেওয়া, মামলা-হামলা দেওয়া, আপনাদের সন্তানদের স্কুলে ভর্তি করতে না দেওয়া, সব নির্যাতন সহ্য করেছেন আপনারা। অনেক নেতারা এসে বলবেন, এতদিন ধৈর্য ধরেছেন, আর কয়েক মাস কিংবা আরও কিছু বছর ধৈর্য ধরেন। কিন্তু আমারে ক্ষমা করে দেবেন, মেজাজ গরম, রক্ত গরম। আওয়ামী লীগের কোন মাফ নাই।
চাঁদাবাজদের পুলিশে হস্তান্তর করার অনুরোধ জানিয়ে তিনে বলেন, যেই চাঁদাবাজি আগে আওয়ামী লীগ করত, সেই চাঁদাবাজি এখন আমাদের কিছু চেনা-পরিচিত মানুষরা করছে। যারা এই চাঁদাবাজি করছে, তাদের ধরিয়ে দেয়ার এবং চিহ্নিত করার দায়িত্ব আপনাদের। রাঙ্গুনিয়ার মাটিতে কোনো চাঁদাবাজ খুঁজে পাওয়া যায়, তাদের পুলিশের হাতে হস্তান্তর করে দিতে হবে।
মাদকের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেন, জানি না গত ১৬ বছর আওয়ামী লীগের মদদে কত মাদক ব্যবসায়ী রাঙ্গুনিয়ায় ঢুকেছে। তবে আজকের পরে কোন মাদক ব্যবসায়ী যদি আমরা খুঁজে পায়, আল্লাহ হয়ত তাকে ক্ষমা করে দেবে, তবে আমরা ক্ষমা করবো না। মাদকের বিষয়ে আমরা জিরো টলারেন্স।
ভোটের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, জোয়ানদের চাইতেও আমার ভরসা মুরব্বিরা। আশাকরি যখনই সময় আসবে, আমার জন্য আপনারা কাজ করবেন। তা করবেন তখনই, যখন আমি প্রমাণ করব, আমি আপনাদের পাশে আছি। সামনের বছর সুযোগ দেবেন, আপনাদের খেদমত করার। আপনাদের পাশে দাঁড়ানোর। আশাকরি প্রমাণ করতে পারবো, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হয়তো তার মতো লম্বা হয়নি, কিন্তু রাজনীতিতে তার মতো লম্বা হয়ে গেছে। আপনাদের নেতা হতে আসিনি, ভাই হতে এসেছি, আপনাদের পরিবারের সদস্য হিসেবে দেখবেন, আপনাদের দুঃসময়ে আমি যেন আপনাদের পাশে দাঁড়াতে পারি- সেই দোয়া কামনা করি।