এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, গণহত্যার বিচারের রায় যদি আওয়ামী লীগের ওপর প্রয়োগ হয়, তারপর জনগণ বিবেচনা করবে, তাদের ব্যাপারে কী ফায়সালা নিবে। এ ব্যাপারে কোনো ফায়সালা দেয়ার এককভাবে অধিকার জামায়াতে ইসলামী রাখেনা। তাদের বিচারের ভার দেশের ১৮ কোটি মানুষের ওপর, যারা রাস্তায় নেমে এসেছিল।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) সকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নামোশংকরবাটি হেফজুল উলুম এফকে কামিল মাদ্রাসা মাঠে জামায়াতের রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জামায়াতের আমির বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সময়ে তিনবার জাতীয় নির্বাচন হলেও জনগণ ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিল। তারা মানুষকে মানুষ হিসেবে গণ্য করেনি। তারা দেশের মানুষের সেবকের পরিবর্তে মালিকে পরিণত হয়েছিল। জাতিকে তারা দাসদাসী বানিয়েছিল। আমরা এই ধরনের কোনো মালিক এ দেশে দেখতে চাই না। দেশের মালিক হবেন মহান আল্লাহ। কেউ শাসন ক্ষমতায় আসলে সে হবেন সেবক।’
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সাড়ে ১৫ বছরে যেসব দুষ্কর্ম করেছে, আমরা তা ঘৃণা করি। আমরা এখনও ঘৃণা করি, ভবিষ্যতেও করব। তাদের এসব দুষ্কর্মের প্রতিশোধ নেয়ার সবচেয়ে বড় হকদার জামায়াতে ইসলামী। কিন্তু আমরা দায়িত্বশীল সংগঠন হিসেবে সহকর্মীদেরকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছি। যার ফলে দেশের কোথাও ২ কোটি ৪২ লাখ কর্মীর কারও বিরুদ্ধে কোন দুষ্কর্মের অভিযোগ আসেনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আল্লাহ তা’আলা জালিমদের একটু ছাড় দেন, কিন্তু ছেড়ে দেন না। তারা জামায়াতে ইসলামীর সর্বনাশ করতে চেয়েছিল। নেতাকর্মীদের হত্যা, গুম, আয়নাঘরে পাঠিয়ে নির্যাতনে পঙ্গু করে, দফায় দফায় মামলা দিয়ে তারা চেয়েছিল জামায়াতে ইসলামীকে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে। কিন্তু মহান আল্লাহ আমাদের রক্ষা করেছেন। জামায়াতের মূলমন্ত্রই হলো লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, আল্লাহ ছাড়া আর কাউকে আমরা সর্বময় ক্ষমতায় মালিক মনে করি না। এটি বিশ্বাসীদের ঘোষণা। কিন্তু এই ঘোষণা আমাদের গঠনতন্ত্রে থাকার কারণে আমাদের দলের নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছিল।’
এ সময় মানবিক বাংলাদেশ গঠনে দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন জামায়াত আমির। রুকন সম্মেলনে জামায়াতের জেলা সেক্রেটারী অধ্যাপক আবু বকরের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন জামায়াতে ইসলামী চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আমির মাওলানা আবুজার গিফারী।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সাবেক পৌর মেয়র মো. নজরুল ইসলাম, রাজশাহী মহানগরের আমির ড. মাওলানা কেরামত আলী, জেলা নায়েবে আমির অধ্যাপক লতিফুর রহমান, জেলা সহকারি সেক্রেটারি অধ্যাপক মুখলেসুর রহমানসহ জামায়াত ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।