এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : বাজারে সরকারি সংস্থার নজরদারি বাড়ায় ফার্মের মুরগির ডিমের দাম কমেছে। গতকাল শনিবার রাজধানীর খুচরা বাজারগুলোতে প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হয় ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকায়। অথচ চার থেকে পাঁচ দিন আগেও রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে ডিমের ডজন ছিল ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা। সেই হিসাবে কয়েক দিনের ব্যবধানে ডিমের দাম কমেছে ডজনে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। তবে পাড়া-মহল্লার দোকানে এখনো ডিমের ডজন ১৫৫ টাকার বেশি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
গতকাল শনিবার রাজধানীর মহাখালী কাঁচাবাজার, রামপুরা ও জোয়ারসাহারা বাজার ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। রাজধানীর মহাখালী কাঁচাবাজারের ডিম বিক্রেতা মো. রাজু মিয়া কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ডিমের দাম এখন অনেকটা কমে গেছে। ক্রেতারাও ডিম কেনা বাড়িয়েছে। আজ (শনিবার) প্রতি ডজন ডিম ১৫০ টাকা দরে বিক্রি করছি।’
বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সরবরাহ বাড়া ও নিয়মিত তদারকির কারণেই ডিমের দাম ভোক্তার নাগালে চলে আসছে। তদারকি কমলে ফের অস্থির হয়ে যেতে পারে ডিমের বাজার। জোয়ারসাহারা বাজারে কথা হয় ক্রেতা আঞ্জুয়ারা বেগমের সঙ্গে।
তিনি বলেন, বাড়তি দামের কারণে এক সপ্তাহ পর আজ (শনিবার) এক ডজন ডিম কিনেছি। এই দাম অনেকটাই সহনীয়। তবে ডিমের দাম ১৫০ টাকা ডজনের নিচে নামা উচিত বলেও তিনি মত দেন।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তর সম্প্রতি ডিমের ‘যৌক্তিক দাম’ নির্ধারণ করে দেয়। নির্ধারিত দাম অনুসারে, প্রতিটি ডিমের দাম উৎপাদন পর্যায়ে ১০ টাকা ৫৮ পয়সা, পাইকারি পর্যায়ে ১১ টাকা ১ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে ১১ টাকা ৮৭ পয়সা (ডজন ১৪২ টাকা ৪৪ পয়সা) হওয়ার কথা। তবে সরকার নির্ধারিত দরের চেয়ে এখনো খুচরা পর্যায়ে ডজনপ্রতি ৮ থেকে ১৩ টাকা পর্যন্ত বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কার্যালয়ে গত মঙ্গলবার ডিমের দাম ও সরবরাহ নিয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় সিদ্ধান্ত হয়, ডিম উৎপাদনকারী বড় কম্পানি ও ছোট খামারিরা সরকার নির্ধারিত দামে সরাসরি পাইকারি আড়তে ডিম পাঠাবেন। তারপর পোলট্রিশিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের উদ্যোক্তাদের সমন্বয়ে গঠিত বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ কো-অর্ডিনেশন কমিটির (বিপিআইসিসি) সভায় সিদ্ধান্ত হয়, প্রতিদিন ঢাকার দুই পাইকারি বাজার তেজগাঁও ও কাপ্তানবাজারের আড়তে সরাসরি ১০ লাখ করে ২০ লাখ ডিম সরবরাহ করবে ১৫টি প্রতিষ্ঠান।
গত বুধবার রাত থেকে কাপ্তানবাজারে উৎপাদক কম্পানিগুলো সরাসরি ডিম সরবরাহ শুরু করে। আর বৃহস্পতিবার রাতে তেজগাঁওয়ে সরাসরি ডিম সরবরাহ শুরু হয়।
তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি আমানত উল্লাহ বলেন, ‘ডায়মন্ড, কাজী, পিপলস ও প্যারাগন গ্রুপ বৃহস্পতিবার তেজগাঁওয়ে চার লাখ ডিম সরবরাহ করেছে। পরিবহন খরচসহ প্রতিটি ডিমের দাম পড়েছে ১০ টাকা ৯১ পয়সা। আমরা পাইকারিতে ১১ টাকায় বিক্রি করেছি। বড় কম্পানিগুলো প্রতিদিন ১০ লাখ করে ডিম দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। সেই অনুযায়ী ডিম না পেলে তো হবে না। কারণ প্রতি রাতে ১৫ লাখ ডিম বিক্রি হয় তেজগাঁওয়ে।’
অন্যদিকে বৃহস্পতিবার রাতে কাপ্তানবাজারে সাত লাখ ডিম সরবরাহ করে বড় বড় উৎপাদক কম্পানি। সেখানেও প্রতিটি ডিম ১০ টাকা ৯১ পয়সায় সরবরাহ করা হয়। সেই ডিম ১১ টাকা ১০ পয়সায় পাইকারি দরে বিক্রি করেছেন আড়তদাররা।