বুধবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৪, ০৮:২৭:৫৩

ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক, প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে

ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক, প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। এর প্রভাবে ইতোমধ্যে দেশের চার সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে সরকারি সংস্থাটি।

আবহাওয়াবিদরা জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র এখন পর্যন্ত যে গতিপ্রকৃতি, তাতে মনে হচ্ছে ভারতের ওডিশার উপকূলে এর আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা। তবে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উপকূলীয় জেলা খুলনা ও বরিশালের বিভিন্ন এলাকাতেও এর প্রভাব পড়তে পারে। তবে ঘূর্ণিঝড়টি ঠিক কোথায় আঘাত হানতে পারে আবহাওয়াবিদরা এখনো তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি।

আবহাওয়া অধিদফতরের সর্বশেষ বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় থাকা ঘূর্ণিঝড় দানা আরও পশ্চিম ও উত্তর–পশ্চিম দিকে এগিয়েছে। এটি আজ দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ–পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬০০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ–পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ–পূর্বে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ–পূর্বে অবস্থান করছিল। এটি আরও পশ্চিম ও উত্তর–পশ্চিম দিকে এগোতে পারে এবং ঘণীভূত হতে পারে।

আবহাওয়ার বার্তায় বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটাররের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার। এটি দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছাকাছি এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা, ট্রলারগুলোকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে।

ভারতীয় আবহাওয়া দফতরের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোরেই উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে ‘দানা’। এরপর পুরী এবং সাগরদ্বীপের মাঝামাঝি ওড়িশার ভিতরকণিকা এবং ধামারা দিয়ে স্থলভাগে ঢুকবে।

ভারতের আবহাওয়া অফিস বলছে, গত ছ’ঘণ্টায় (বুধবার দুপুর পর্যন্ত) ‘দানা’ ঘণ্টায় ১৫ কিলোমিটার বেগে উত্তর-পশ্চিম অভিমুখে এগিয়েছে। এই মুহূর্তে ওড়িশার পারাদ্বীপ উপকূল থেকে প্রায় ৫২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে, পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপ থেকে ৬০০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং বাংলাদেশের খেপুপাড়া থেকে ৬১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে রয়েছে ‘দানা’।

বলা হচ্ছে, ২৪ অক্টোবর রাত থেকে ২৫ অক্টোবরের সকালের মধ্যে শক্তি বাড়িয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের আকার নেবে ‘দানা’। উপকূলে আছড়ে পড়ার সময় এর গতিবেগ পৌঁছাবে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১২০ কিলোমিটারে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় দানা ঘিরে উপকূলজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ইতোমধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের পূর্ব প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে উপকূলের ঝুঁকিতে থাকা কয়েক হাজার মানুষ। সর্বশেষ গত মে মাসে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমালে’র কারণে খুলনার উপকূলীয় এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ২৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ এখনও মেরামত করা হয়নি। জোয়ারের পানির চাপে বাঁধটি আরও দুর্বল হয়েছে। ‘দানার’ আঘাতের আগে বাঁধ মেরামত না হওয়ায় উৎকণ্ঠায় রয়েছেন উপকূলীয় এলাকার মানুষ।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে