শনিবার, ০২ নভেম্বর, ২০২৪, ০২:৪১:০৬

কী হবে শত কোটি টাকা দামের এই ৩০০ গাড়ির?

কী হবে শত কোটি টাকা দামের এই ৩০০ গাড়ির?

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : আমলাতান্ত্রিক জটিলতার পাশাপাশি নিলামে দীর্ঘসূত্রতার কবলে পড়ে একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে শত কোটি টাকা দামের অন্তত ৩০০ গাড়ি। ১০ থেকে ১২ বছর আগে আমদানি করা নামীদামি মডেলের চলাচল অনুপযোগী এসব গাড়ি এখন পড়ে আছে বন্দরের খোলা শেডে। স্ক্র্যাপ হিসাবে কেজি দরে বিক্রি ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই গাড়িগুলোর। সময় সংবাদের করা প্রতিবেদন থেকে বিস্তারিত-

চট্টগ্রাম বন্দরের এফ শেড দূর থেকে দেখলে মনে হবে গাড়ির ডাম্পিং স্টেশন। আধুনিক কার শেড প্রস্তুত হওয়ার আগে বিদেশ থেকে আমদানি করা গাড়ির একটি অংশ এখানে রাখা হতো। দীর্ঘদিন ধরে ছাড় না করা ২৯৭টি গাড়ি এখনো রয়ে গেছে। বছরের পর বছর খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকায় অনেকটা চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে গাড়িগুলো।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, ‘৩৮৩ টা গাড়ি আছে, যেগুলো আমরা কাস্টমকে বাই পেপার হ্যান্ডওভার করে দিয়েছি। সেগুলো অকশনের অপেক্ষায় আছে। এরমধ্যে আবার ২৯৭টা গাড়ি খুব নাজুক অবস্থায় আছে। সেগুলো অনেক দিনের পুরনো। এখানে ২০০২ সালের গাড়িও আছে।’

চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বন্দরের বহুতল কার শেড, অকশন কার শেড এবং এফ শেডে ৯০০ গাড়ি রয়েছে। এরমধ্যে ৩৮৩টি গাড়ি নিলামে বিক্রির জন্য কাগজ হস্তান্তর করা হয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের কাছে। সবশেষ গত সপ্তাহে হস্তান্তর করা হয়েছে ২৪ জন সাবেক সংসদ সদস্যের নামে আমদানি করা ল্যান্ড ক্রুজার।

কাস্টম বিডার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব চৌধুরী বলেন, ‘কাস্টম কর্তৃপক্ষ যদি চেষ্টা করে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বা এনবিআর থেকে সিপি আনলেই কিন্তু এ গাড়িগুলো বিক্রি করা সম্ভব।’

কাস্টম বিডার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য মোহাম্মদ রফিক বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ কেবল বলছে মামলা আছে, মামলা আছে। কিন্তু যিনি নেবেন তিনি মামলা নিষ্পত্তি করেই গাড়িগুলোর ছাড় করাবেন।’

শত কোটি টাকা মূল্যের এ গাড়িগুলো এখন স্ক্র্যাপ হিসাবে ঘোষণা হতে যাচ্ছে। আইনি বাধ্যবাধকতায় এসব গাড়ি নষ্ট হচ্ছে বলে দাবি কাস্টমের।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের উপকমিশনার মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত গাড়িগুলোকে আমাদের এভাবেই রাখতে হয়। শুধু গাড়ি নাম যেকোনো পণ্যের মামলা চলমান থাকলে সেটা নিষ্পত্তি হতে হবে। রিসেন্টলি আমরা ৭৪টি গাড়ি স্ক্র্যাপ হিসেবে ধ্বংস করেছি, সেগুলো নিলাম প্রক্রিয়ায় আছে। ফলে মামলা থাকলে যেকোনো পণ্যই হোক আমরা না নিলামে যেতে পারি, না ধ্বংস করতে পারি।’

আমদানি করা গাড়ি চার দিন পর্যন্ত বিনা শুল্কে বন্দরের শেডে রাখার সুযোগ পায় আমদানিকারক। এরপর থেকে প্রতি চার দিনের জন্য মাশুল আরোপ করা হয়। আর ৩০ দিন পার হলেই নিলামে বিক্রির জন্য কাস্টমসের কাছে বাই পেপার হস্তান্তর করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।

আমলাতান্ত্রিক জটিলতার পাশাপাশি নিলামে কঠোরতার কারণে এভাবে নষ্ট হচ্ছে আমদানি করা শতশত গাড়ি। অথচ এসব গাড়ির আমদানি মূল্য বাবদ লাখ লাখ মার্কিন ডলার বহু আগে চলে গেছে বিদেশে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে