রবিবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৪, ০২:৫৩:২৪

বিচারের মুখোমুখি হয়ে আ. লীগ পরিষ্কার হয়ে এলে নেতৃত্ব দেবেন সোহেল তাজ

বিচারের মুখোমুখি হয়ে আ. লীগ পরিষ্কার হয়ে এলে নেতৃত্ব দেবেন সোহেল তাজ

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গণহত্যা চালিয়েছে আওয়ামী লীগ। গত ১৫ বছরে গুম-খুন ও অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়েছে এর নেতৃত্ব। আওয়ামী লীগ আত্মসমালোচনা করে, বিচারের মুখোমুখি হয়ে পরিষ্কার হয়ে এলে নেতৃত্ব নেবেন বলে জানিয়েছেন শহীদ তাজউদ্দীন আহমদের একমাত্র ছেলে সোহেল তাজ।

প্রকাশনা সংস্থা ‘ঐতিহ্য’ প্রতিষ্ঠার দুই যুগ পূর্তি উপলক্ষে গতকাল শনিবার বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে আয়োজন করে ‘শতাব্দীর কণ্ঠস্বর তাজউদ্দীন আহমদ : কন্যার চোখে, পুত্রের চোখে’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানের।

এতে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদকে নিয়ে কথা বলেন তাঁর মেয়ে শারমিন আহমদ ও ছেলে সোহেল তাজ।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগ এখন দুঃসময়ের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। পঁচাত্তরের পর আওয়ামী লীগের দুর্দিনে জোহরা তাজউদ্দীন হাল ধরেছিলেন। এবারও এই পরিবার আওয়ামী লীগের হাল ধরতে যাচ্ছে কি না জানতে চান অনুষ্ঠানের উপস্থাপক কথাসাহিত্যিক আহমাদ মোস্তফা কামাল।

উত্তরে সোহেল তাজ বলেন, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ একটি যুগান্তকারী নির্বাচনী ইশতেহার দিয়েছিল। দিনবদলের সনদের সেই ইশতেহারে একাত্তরের মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠিত করা হবে বলা হয়েছিল। সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং ন্যায়বিচার—এই তিন মূলনীতির ভিত্তিতে সংস্কার ও রাজনৈতিক সংস্কৃতি সৃষ্টি করা হবে। এসব দেখে তিনি উদ্বুদ্ধ হন এবং নির্বাচিত হয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হয়েছিলেন।

সোহেল তাজ বলেন, প্রতিমন্ত্রী হওয়ার ছয় মাসের ভেতর মনে হয়েছিল সরকার অঙ্গীকার রক্ষা করছে না। তখন তাঁর মনে হয় সরকার মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছে। সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য সংস্কারকাজে হাত দিয়ে তিনি বারবার বাধাপ্রাপ্ত হয়েছেন।

ক্ষমতার প্রতি কোনো মোহ নেই জানিয়ে সোহেল তাজ বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে পদত্যাগ কেউ করেনি। আমি আঁচ করতে পেরেছিলাম, এই ধারাবাহিকতা চলতে থাকলে পাঁচ আগস্টের মতো একটা ঘটনা ঘটবে।

অনুষ্ঠানে বড় বোন শারমিন আহমদ বলেন, তিনিও চান সোহেল তাজ আওয়ামী লীগের দায়িত্ব নিক।

বিশেষ এই স্মৃতিচারণা ও মূল্যায়ন সভার শুরুতে শারমিন আহমদ রচিত ‘তাজউদ্দীন আহমদ : নেতা ও পিতা’ বইয়ের সুলভ সংস্করণের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। বৈঠকি মেজাজের এ আলোচনায় উপস্থাপক আহমাদ মোস্তফা কামাল তাজউদ্দীন আহমদ ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন প্রসঙ্গে জানতে চান।

আলোচনার এক পর্যায়ে সোহেল তাজ বলেন, ‘বাংলাদেশের ৪০ শতাংশ মানুষ তরুণ। এবার তারা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন করেছে। তারা দুর্নীতি চায় না; বৈষম্যের বিলোপ চায়, কোনো ব্যক্তিপূজা চায় না। এখন সুযোগ আছে এসব বাস্তবায়নের। এর জন্য ইতিহাসকে উন্মুক্ত করে দিতে হবে। প্রতিটি জাতির শক্তির একটি উৎস থাকে, আমাদের শক্তির উৎস মুক্তিযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধের মধ্যেই রাষ্ট্র কিভাবে এগোবে তার দিকনির্দেশনা রয়েছে।’

অনুষ্ঠানে নিজের লেখা ‘তাজউদ্দীন আহমদ : নেতা ও পিতা’ বই থেকে তাজউদ্দীন আহমদের ১০ এপ্রিলের বেতার ভাষণ পাঠ করে শোনান শারমিন আহমদ। ভাষণটি বাংলাদেশে পাঠ্যভুক্ত হওয়া উচিত ছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘শেখ রাসেল একটা নিষ্পাপ শিশু ছিল। জাতীয় ক্ষেত্রে তার কোনো অবদান ছিল না। এর পরও গত দুই বছরে প্রতিটি স্কুলে একটি করে রাসেল কর্নার করা হয়েছে। এটা না করে যদি কিশোর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে একটি কিশোর কর্নার করা হতো তাহলে এটাকে সবাই নিজের মনে করত।’

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে