সোমবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৪, ১২:২৪:৩৯

যা নিয়ে ক্ষমতাচ্যুতির আগে শেখ হাসিনা-সাহাবুদ্দিনের সম্পর্কে অবনতি! চাঞ্চল্যকর তথ্য

যা নিয়ে ক্ষমতাচ্যুতির আগে শেখ হাসিনা-সাহাবুদ্দিনের সম্পর্কে অবনতি! চাঞ্চল্যকর তথ্য

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : ৫ আগস্ট, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। তবে, এর আগেই তার ও প্রেসিডেন্ট সাহাবুদ্দিনের সম্পর্কে চরম অবনতি ঘটে। দুই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু—সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারক নিয়োগ এবং শ্রম আইন সংশোধন—ছিল এই সম্পর্কে টানাপোড়েনের মূল কারণ।

এছাড়া বিচারক নিয়োগ নিয়ে গণভবন থেকে বঙ্গভবনে পাঠানো সারসংক্ষেপে প্রেসিডেন্টের এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়, যা তাকে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ করে তোলে। পাশাপাশি, শ্রম আইন সংশোধনেও প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনা না করেই তার স্বাক্ষর নেওয়ার চেষ্টা সম্পর্কের অবনতির আরেকটি দিক ছিল। এসব ঘটনা শেষে, ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ না করেই দেশত্যাগ করেন।

মানবজমিনের রাজনৈতিক ম্যাগাজিন ‘জনতার চোখ’-এর বিশেষ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়। হাসিনা ও প্রেসিডেন্ট সাহাবুদ্দিনের সম্পর্কের অবনতির বিষয়ে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়— রীতি অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী বিদেশ সফরে গেলে দেশে ফেরার পর প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তবে চীন ও ভারত সফরের পর এই রীতি উপেক্ষা করে চলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তখন আর বঙ্গভবনে যাননি, কারণ তাদের (হাসিনা-সাহাবুদ্দিন) মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটেছিল।

আমি কিছুই জানি না, অথচ আমাকেই চূড়ান্ত অনুমোদন দিতে বলা হচ্ছে। প্রচলিত নিয়ম উপেক্ষা করে প্রেসিডেন্টকেই পুতুল বানানো হয়েছে। দীর্ঘদিনের প্রথা উপেক্ষা করার অর্থ কী?

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিচারক নিয়োগের বিষয়টি সামনে এলে, গণভবন থেকে বঙ্গভবনে সারসংক্ষেপ পাঠানো হয়। প্রেসিডেন্ট এতে বিরক্ত হন, কারণ আইন মন্ত্রণালয়ের তৎপরতা দেখে তিনি মনে করেন, নিয়ম ভেঙে তাকে চূড়ান্ত অনুমোদন দিতে চাপ দেওয়া হচ্ছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ১৮ এপ্রিল প্রেসিডেন্ট একটি চিঠি পাঠিয়ে জানান, নিয়োগ প্রক্রিয়া সংবিধানের ৯৫(১) অনুচ্ছেদে উল্লেখ রয়েছে। তিনি আরও বলেন, এটি একটি দীর্ঘদিনের প্রথা, যা অনুযায়ী প্রেসিডেন্টের সঙ্গে পরামর্শের পর নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে পাঠানো সারসংক্ষেপে প্রেসিডেন্টের এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে এবং নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করা হয়েছে। এতে প্রেসিডেন্ট অত্যন্ত বিরক্ত হন এবং সই না করেই একটি পাল্টা চিঠি পাঠান।

ওই চিঠিতে প্রেসিডেন্ট লিখেন, "আমি কিছুই জানি না, অথচ আমাকেই চূড়ান্ত অনুমোদন দিতে বলা হচ্ছে। প্রচলিত নিয়ম উপেক্ষা করে প্রেসিডেন্টকেই পুতুল বানানো হয়েছে।" ওই চিঠিতে তিনি জানতে চান, "দীর্ঘদিনের প্রথা উপেক্ষা করার অর্থ কী?"

এছাড়া শ্রম আইন সংশোধন নিয়েও মনোমালিন্য বাড়ে প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্টের মধ্যে। এর কারণ, শ্রম আইন সংশোধন নিয়েও প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনা না করে, তার স্বাক্ষর নেওয়ার জন্য সারসংক্ষেপ পাঠানো হয়েছিল। এতে প্রেসিডেন্ট আরও ক্ষুব্ধ হন।

এই সব বিষয় নিয়েই বঙ্গভবন ও গণভবনের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। সম্ভবত এসব কারণেই ৫ আগস্ট ক্ষমতা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে টেলিফোনে কোনো যোগাযোগ করেননি। সূত্র: জনতার চোখ (মানবজমিন) 

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে