এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : মানুষের আস্থায় পরিণত হওয়া ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি বরাবরের মতো এবারও সদ্য বিদায়ী সেপ্টেম্বর মাসে প্রবাসীদের পছন্দের শীর্ষে ওঠে এসেছে। সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স এই ব্যাংকটির মাধ্যমেই দেশে এসেছে, যা মোট প্রবাসী আয়ের প্রায় ১৭ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
তথ্য অনুযায়ী, দেশে মোট ৬০ ব্যাংকের মাধ্যমে গত সেপ্টেম্বরে দেশে প্রবাসী আয় এসেছে ২৪০ কোটি ৪৭ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ৭০ শতাংশ প্রবাসী আয় মাত্র দশটি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে। এছাড়া এখানে এমন সাত ব্যাংক আছে, যাদের হাত দিয়ে দেশে কোন প্রবাসী আয় আসেনি।
সেপ্টেম্বরে প্রবাসী আয়ের শীর্ষ অবস্থানে ওঠে আসা ব্যাংকগুলো হলো- ইসলামী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক এবং ঢাকা ব্যাংক।
গেল সেপ্টেম্বরে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসী আয় এসেছে ৪০ কোটি ২৭ লাখ ৮০ হাজার ডলার, যা মোট প্রবাসী আয়ের ১৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এই প্রবাসী আয় দিয়ে ব্যাংকটি শীর্ষ অবস্থান চলে এসেছে।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসী আয় এসেছে ৩২ কোটি ২১ লাখ ২০ হাজার ডলার, যা মোট আয়ের ১৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ। তৃতীয় অবস্থানে চলে আসা ট্রাস্ট ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসী আয় এসেছে ২৪ কোটি ৫৫ লাখ ৪০ হাজার ডলার, যা মোট আয়ের ১০ দশমিক ২১ শতাংশ। আর চতুৰ্থ অবস্থানে আসা রূপালী ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসী আয় এসেছে ১১ কোটি ৩৭ লাখ ডলার, যা মোট আয়ের চার দশমিক ৭৩ শতাংশ।
যে সাত ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে কোন প্রবাসী আয় আসেনি, সেই ব্যাংকগুলো হলো- হাবিব ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকার), বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, কমিউনিটি ব্যাংক, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অফ পাকিস্তান এবং স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া।
অতীতের চেয়ে প্রবাসী আয়ের প্রবৃদ্ধি বেড়েছে জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা বলেন, বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে সচেতনতা বাড়ানোর কারণে এখন হুন্ডি বা অবৈধভাবে রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রবণতা কমেছে।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে (১ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর) বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে প্রবাসী আয় এসেছে ১৬৫ কোটি তিন লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। এছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৬৩ কোটি ৮২ লাখ ৫০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১০ কোটি ৯৯ লাখ ৮০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৬২ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার। এর আগে সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম ২১ দিনে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে প্রবাসী আয় এসেছিল ১০৭ কোটি ৯৬ লাখ ১০ হাজার ডলার।
এছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছিল ৪৮ কোটি সাত লাখ ৫০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ছয় কোটি ৯৮ লাখ ৩০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৪০ লাখ ৩০ হাজার ডলার। সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম ১৪ দিনে (১ থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর) বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে প্রবাসী আয় এসেছিল ৮১ কোটি ৬৯ লাখ ৪০ হাজার ডলার। প্রথম ১৪ দিনে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছিল ২৯ কোটি ৭২ লাখ ৭০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে চার কোটি ৯৯ লাখ ৮০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৩০ লাখ ডলার।
সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সাত দিনে (১ থেকে ৭ সেপ্টেম্বর) বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে প্রবাসী আয় এসেছিল ৪১ কোটি ৫২ লাখ ৭০ হাজার ডলার। প্রথম সাত দিনে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছিল ১৫ কোটি ২৭ লাখ ৯০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এক কোটি ৪৮ লাখ ৩০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১৬ লাখ ৫০ হাজার ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ২১১ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার ডলার। ফেব্রুয়ারিতে আসে ২১৬ কোটি ৪৫ লাখ ৬০ হাজার ডলার, মার্চে ১৯৯ কোটি ৭০ লাখ ৭০ হাজার ডলার, এপ্রিলে ২০৪ কোটি ৪২ লাখ ৩০ হাজার ডলার, মে মাসে ২২৫ কোটি ৪৯ লাখ ৩০ হাজার ডলার, জুনে ২৫৩ কোটি ৮৬ লাখ ডলার, জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার এবং আগস্টে ২২২ কোটি ৪৫ লাখ ৫০ হাজার ডলার এসেছে।
গত বছরের ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯৯ কোটি ১২ লাখ ৬০ হাজার ডলার, নভেম্বরে ১৯৩ কোটি ৪০ হাজার ডলার, অক্টোবরে ১৯৭ কোটি ১৪ লাখ ৩০ হাজার ডলার, সেপ্টেম্বরে ১৩৩ কোটি ৪৩ লাখ ৫০ হাজার ডলার, আগস্টে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার এবং জুলাইয়ে ১৯৭ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।