নিউজ ডেস্ক : তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র শিশুশিল্পী আর্য আয়ুষ্মান আলী। এ বয়সেই বিশ্বের ২০টি দেশের জাতীয় সংগীত গাইতে পারে সে। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, ফ্রান্স, কলম্বিয়া, নাইজেরিয়া, কানাডা, জাপান, জার্মানি, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, আমেরিকা, রাশিয়া, প্যালেস্টাইন, অস্ট্রেলিয়া প্রভৃতি দেশের জাতীয় সংগীত সুন্দর উচ্চারণে গাইতে পারে আর্য।
২০টি দেশের জাতীয় সংগীত শিখেই থেমে নেই আর্য। বিশ্বের অন্যান্য দেশের জাতীয় সংগীত শেখার সাধনা রয়েছে তার।
শিল্পকলা একাডেমীর মহাপরিচালক ও নাট্যব্যক্তিত্ব লিয়াকত আলী লাকির ছেলে আর্য। মিরপুর চেতনা মডেল একাডেমির তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র আর্যকে নিপীড়িত-নির্যাতিত শিশুদের কষ্ট ও দুঃখ পীড়া দেয় বলেও জানান তার বাবা।
লাকী জানান, প্যালেস্টাইনসহ বিভিন্ন দেশে শিশুদের ওপর নির্যাতন ও হত্যা তাকে পীড়া দেয়। সে জানতে চায়, কেন শিশুদের হত্যা করা হয়?
তিনি বলেন, সব শিশুই অসাধারণ শক্তি নিয়ে জন্মে। আর্যরও তেমন একটি অসাধারণ শক্তি আছে। সে শক্তির গুণেই আর্যর মতো শিশুরা বিশ্বটাকে সুন্দরভাবে দেখতে চায়। কিন্তু আমাদের মতো বয়সী মানুষেরা শিশুদের মতো করে ভাবে না বলেই আর্যর মতো শিশুরা নির্যাতিত শিশুদের কথা ভাবে।
লাকী বলেন, আমাদের শিশুরা অন্যান্য দেশের শিশুদের চেয়ে বিশ্বকে নিয়ে একটু বেশিই ভাবে। যেমনটি লক্ষ্য করা গেছে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ও সুকান্তের সাহিত্য কর্মে।
তিনি বলেন, আর্য সংগীতশিল্পী হওয়ার পাশাপাশি ট্রাভেলার হওয়ার স্বপ্ন দেখে। পরিবারের সাথে এ পর্যন্ত মালয়েশিয়া, ভারত, ফ্রান্স, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস ভ্রমণ করেছে সে। আর্য শুধু গাইতেই পারদর্শী নয়, অভিনয়ও জানে। বেশকিছু মঞ্চ নাটকে সে অভিনয় করেছে। এর মধ্যে ‘ডাকঘর’, ‘চণ্ডালিকা’ ও সত্য-মিথ্যা উল্লেখযোগ্য।
আর্য তার সাফল্য প্রসঙ্গে জানান, সে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, পৃথিবীর ১৯৬টি দেশের জাতীয় সঙ্গীত শিখবে। বাংলা, হিন্দি ও ইংরেজি ভাষা সে বোঝে। নেট থেকে ইংরেজিতে সাব-টাইটেল দেয়া গানগুলো সে খুঁজে বের করে। তারপর সেই সাব-টাইটেল দেখে গানের কথাগুলো বুঝে ও শেখে।
কীভাবে জাতীয় সংগীত শেখার আগ্রহ সৃষ্টি হলো এ প্রসঙ্গে আর্য জানায়, প্রায় ২ বছর আগে একদিন বৃষ্টি হচ্ছিল বলে বাইরে খেলতে যেতে পারছিল না। তখন ভিডিও গেম খেলতেও ইচ্ছে করছিল না। সুন্দর একটা গান শুনবে ভেবে কম্পিউটারের সামনে বসে যায় সে। পরে বিদেশি কোনো গান শেখার তার আগ্রহ হলো। কিন্তু বিদেশি কোনো গানের নাম জানা ছিল না তার। তখন জাতীয়সঙ্গীত লিখে সে গুগলে সার্চ দেয়।
সে জানায়, প্রথমে সৌদি আরবের জাতীয় সঙ্গীত শুনে সে। তারপর একে একে বেশ কয়েকটি দেশের জাতীয় সঙ্গীত শোনে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি তার খুব ভালো লাগে। শুনতে শুনতে প্রথমে সৌদি আরবের জাতীয় সঙ্গীত সে শিখে ফেলে। নিজের ইচ্ছায় একে একে ৭টি দেশের জাতীয় সঙ্গীতই তার দ্রুত শেখা হয়ে যায়।
আর্য জানায়, ৭টি দেশের জাতীয় সঙ্গীত শেখার পর সবাই যখন খুব প্রশংসা করতে শুরু করে, তখন তার আত্মবিশ্বাস আরো বেড়ে যায়। এরপর সে আরো শিখতে শুরু করে। সূত্র : বাসস
২০ ফেব্রুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম