রবিবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬, ১০:১২:০৯

জাতিসংঘের সামনে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন

জাতিসংঘের সামনে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন

নিউজ ডেস্ক : প্রথম বারের মতো বাংলাদেশের সাথে মিল রেখে একুশের প্রথম প্রহরে জাতিসংঘ সদর দফতরের সামনে অস্থায়ী শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে।  ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ভাস্কর্যে’ বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের ভাষাপ্রেমীরা ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করলেন।

এ সময় নিউইয়র্ক স্টেটের গভর্নর এন্ড্রু কোমোর পক্ষে তার দফতরের প্রতিনিধিরা প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের ভাষা শহীদদের স্মরণ করে স্টেটের পক্ষে এ স্বীকৃতি দেন। ইউনেস্কো ও জাতিসংঘের স্বীকৃতির পর নিউইয়র্ক স্টেট গভর্নর স্বীকৃতি দেন।

নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় ভর-দুপুরে বিভিন্ন বয়স, ভাষা ও বর্ণের মানুষের উপস্থিতিতে বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলনে শহীদের শ্রদ্ধা প্রদর্শনের এ ঘটনা দেখে অনেক ভিনদেশী পথচারী আশপাশে জড়ো হন।

শুক্রবার সন্ধ্যা ৭ টায় প্রতিবারের মতো মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের আয়োজনে জাতিসংঘের সামনে অস্থায়ী শহীদ মিনারে একুশের প্রথম প্রহরে পুষ্পস্তবক অর্পনের মধ্য দিয়ে নিউইয়র্কে ভাষা শহীদ দিবস পালিত হয়। মুক্তধারা ফাউন্ডেশন আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মিশনরে স্থায়ী প্রতিনিধি ড. আবদুল মোমেন এবং উত্তর আমেরিকার সকল সামাজিক, সাংস্কৃতিক, আঞ্চলিক সংগঠন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ প্রবাসী বাংলাদেশীরা অংশ নেন।

এ ছাড়া আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বিভিন্ন প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। এতে বাংলাদেশ মিশনসহ বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিত্বকারী বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরাও অংশ নেন। সবার কণ্ঠে দাবি উঠে নিউইয়র্ক তথা জাতিসংঘের সামনে একটি স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণের।

বরাবরের মতো এবারও অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ মিশন ও কনসুলেট এবং প্রবাসী বাংলাদেশীদের বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের ব্যানারে শ্রদ্ধা জানানো হয় ভাষা শহীদদের।

গর্ব আর শোকের এই দিনটি রোববার বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালন করবে জাতি, যার সূচনা শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর মধ্য দিয়ে।

একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় ২০ ফেব্রুয়ারি বেলা ১টা ০১ মিনিট অর্থাৎ বাংলাদেশ সময় রাত ১২টা ০১ মিনিটে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি’ সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে একে একে সবাই ভাস্কর্যের বেদীতে ফুল দেন।

গত ২৫ বছর জাতিসংঘের সামনে নিউ ইয়র্ক সময় ২০ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত ১২টা ০১ মিনিটে এ দিবসের কর্মসূচি পালন শুরু হয়। এবার থেকে বাংলাদেশের সময় অনুযায়ী তা করার ঘোষণা দিয়েছে নিউ ইয়র্কস্থ ‘মুক্তধারা ফাউন্ডেশন’ এবং ‘বাঙালির চেতনা মঞ্চ’।

সংগঠন দুটির যৌথ উদ্যোগে এ মাসের ০১ তারিখে স্থাপন করা হয় ওই ভাস্কর্য। নিউ ইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটস, লং আইল্যান্ড সিটি, জ্যামাইকা, ব্রঙ্কস এবং ব্রুকলিনের বিভিন্ন স্থানেও শহীদ মিনার করে তাতে প্রবাসীরা শ্রদ্ধা জানাবেন আগের মতই রাত ১২টা ০১ মিনিটে।

জাতিসংঘের সামনে আগের ২৪ বছরের মতো এবারও সর্বকনিষ্ঠ শিশু শহীদ মিনারে প্রথম পুষ্পস্তবক অর্পণ করে এবং শুরু হয় শ্রদ্ধা নিবেদন পর্ব।

একুশের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে শহীদদের ফুলেল শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে অনেক আগে থেকেই জড়ো হয়েছিলেন বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক পেশাজীবী ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারা।

এদিকে অমর একুশ পালনের পঁচিশ বছর পূর্তি উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্র ডাক বিভাগ (ইউএসপিএস) ২২ ফেব্রুয়ারি সোমবার সকাল ১০টা থেকে জ্যাকসন হাইটস পোস্ট অফিসে (৭৮-০২, ৩৭ এভিনিউ, জ্যাকসন হাইটস, নিউইয়র্ক ১১৩৭২) ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মারক সিলমোহর’ উন্মোচন করা হবে। এটি মার্চের ২২ তারিখ পর্যন্ত চালু থাকবে।

এছাড়া আগামী ২৭ ও ২৮ ফেব্রুয়ারি জ্যাকসন হাইটসে পাবলিক স্কুল- ৬৯ এর মিলনায়তনে হবে একুশের গ্রন্থমেলা। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকার কথা বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের।
২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে