এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক: চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে খুন হওয়া সাইফুল ইসলাম আলিফের হত্যাকারীদের দ্রুততার সঙ্গে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রখ্যাত ইসলামি আলোচক শায়খ আহমাদুল্লাহ।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজের এক পোস্টে এ আহবান জানান তিনি।
শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, তরুণ আইনজীবী সাইফুল ইসলামের নৃশংস হত্যাকারীদের দ্রুততার সাথে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা সরকারের আশু কর্তব্য। দেশকে অস্থিতিশীল করতে চাওয়া উগ্রদের থামানোর ব্যাপারে কোনোরূপ দ্বিধা করা যাবে না।
সেইসঙ্গে সর্বস্তরের মুসলিমদের সর্বোচ্চ ধৈর্য ধারণের এবং কোনো প্রকার চক্রান্তের ফাঁদে পা না দিতে অনুরোধ করেন তিনি।
শায়খ আহমাদুল্লাহ আরও বলেন, দেশের সকল ধর্মের দায়িত্বশীল ও প্রাজ্ঞ ব্যক্তিবর্গকে বলব, আপনারা নিজ নিজ ধর্মের অনুসারীদের শান্ত ও সুশৃঙ্খল থাকার আহ্বান জানান। কোনো কারণে এই দেশ যদি অশান্ত হয়, তবে ক্ষতিগ্রস্ত আমরা সবাই হব।
আইনজীবি সাইফুল ইসলাম আলিফ আজ বিকেলে চট্টগ্রাম আদালত এলাকায় হত্যার শিকার হন। বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তির দাবিতে আন্দোলনকারীদের হামলায় তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানান আইনজীবীরা।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যাওয়ার সময় বিমানবন্দরে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, গত ৩১ অক্টোবর তিনি চট্টগ্রামের এক সমাবেশে জাতীয় পতাকা অবমাননা করেন। চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারী বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও চট্টগ্রামের হাটহাজারীর পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ।
তাকে গ্রেফতারের ঘটনায় আজ (২৬ নভেম্বর) দুপুর ১২টার পরপরই আদালত প্রাঙ্গণে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন তার অনুসারীরা। বেলা ১২টা থেকেই শত শত নারী-পুরুষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে বহন করা প্রিজনভ্যান আটকে স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, বিকেল পৌনে ৪টার দিকে ইসকনের সদস্যরা আদালত এলাকায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা শুরু করলে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ তাদের বাধা দেন। এরপর তাকে তুলে নিয়ে আদালতের প্রধান ফটকের বিপরীতে রঙ্গম টাওয়ারের সামনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সাইফুলকে কুপিয়ে আহত করে ইসকন সদস্যরা। গুরুতর আহত অবস্থায় সাইফুলকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সাইফুল ইসলাম ২০১৮ সালে জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য হন। পরে তিনি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবেও নিবন্ধন পান। সম্প্রতি তিনি চট্টগ্রাম আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। তিনি চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন।