► চার মাসে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় ১২৩ জন সেনা সদস্য হতাহত ► দুই সপ্তাহে সেনাবাহিনী ২৪টি অস্ত্র, ৩৬৫ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধারসহ শিল্পাঞ্চলে ৪০টি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি, ১৮টি সড়ক অবরোধ নিয়ন্ত্রণ করেছে ► পাহাড়ে ৮ মাসে কুকি-চিনের হামলায় ৭ সেনা সদস্য নিহত
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালনকালে গত চার মাসে সেনাবাহিনীর মোট ১২৩ জন সদস্য হতাহত হয়েছেন। এর মধ্যে একজন অফিসার শাহাদাত বরণ করেছেন এবং ৯ অফিসারসহ মোট ১২২ জন সেনা সদস্য বিভিন্ন মাত্রায় আহত হয়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে বনানীর সেনা অফিসার্স মেসে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনীর কার্যক্রম সম্পর্কিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান সেনা সদরের মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের কর্নেল ইন্তেখাব হায়দার খান।
সেনাবাহিনী সার্বিকভাবে যেসব দায়িত্ব পালন করছে সেগুলো হলো অনাকাঙ্ক্ষিত অরাজকতা প্রতিরোধ, দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায়, বিদেশি কূটনীতিক ব্যক্তি ও দূতাবাসগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত, দেশের গুরুত্বপূর্ণ শিল্পাঞ্চলগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং কলকারখানাগুলোকে সচল রাখা, রাষ্ট্রের কেপিআই এবং গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনাগুলোকে রক্ষা, মূল সড়কগুলোকে বাধামুক্ত রাখা,
অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার, অবৈধ মাদকদ্রব্য উদ্ধার, মাদক কারবারি ও মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার, বিভিন্ন চিহ্নিত অপরাধী ও নাশকতামূলক কাজের ইন্ধনদাতা ও পরিকল্পনাকারীদের গ্রেপ্তার; পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায়, কক্সবাজার জেলায় এফডিএমএন ক্যাম্প এলাকার নিরাপত্তা বিধান এবং সার্বিকভাবে দেশের অন্তর্বর্তী সরকার যেন তাদের দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে পারে, সে জন্য স্থিতিশীল পরিবেশ বজায় রাখা।
কর্নেল ইন্তেখাব হায়দার খান বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী মোট ২৪টি অবৈধ অস্ত্র এবং ৩৬৫ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে। দেশের বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলে ৪০টি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি এবং ১৮টি সড়ক অবরোধ নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে এবং কারখানাগুলোকে চালু রাখার জন্য
মালিকপক্ষ, শ্রমিকপক্ষ, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিজিএমইএসহ সংশ্লিষ্ট সবার সমন্বয়ে পদক্ষেপ নিয়েছে।
কর্নেল ইন্তেখাব বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিভিন্ন সময়ে যারা আহত হয়েছেন, তাদের সুচিকিৎসার জন্য সেনাবাহিনী এখন তিন হাজার ৪৩০ জনকে দেশের বিভিন্ন সিএমএইচে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে; যার মধ্যে ৩৫ জন এখনো সিএমএইচে চিকিৎসাধীন।
বান্দরবানের পাহাড়ি এলাকায় গত এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত আট মাসে পাহাড়ি সন্ত্রাসী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মির (কেএনএ) অতর্কিত হামলায় সাত সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মির (কেএনএ) বিরুদ্ধে পার্বত্য চট্টগ্রামে চলমান অভিযানে বান্দরবানের দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মির হাত থেকে স্থানীয় নিরীহ জনগোষ্ঠীকে রক্ষায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে একটি বিশেষ যৌথ অভিযান গত এপ্রিল থেকে পরিচালিত হয়ে আসছে।