শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১০:৫৪:২৬

বাজারে নতুন পেঁয়াজ আসায় দাম এক লাফে যত কমলো

বাজারে নতুন পেঁয়াজ আসায় দাম এক লাফে যত কমলো

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : সরবরাহ বাড়ায় বাজারে কমতে শুরু করেছে নতুন ও পুরান আলুর দাম। আর বাজারে নতুন পেঁয়াজ উঠতে শুরু করায় কমছে পেঁয়াজের দামও।

গত কমাস ধরে দেশে আলুর বাজার বেশ গরম। সরবরাহ বাড়াতে ও দাম নিয়ন্ত্রণে গত ৫ সেপ্টেম্বর আলু আমদানিতে বিদ্যমান ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক কমিয়ে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। একই সঙ্গে আলু আমদানিতে যে ৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আছে, তাও সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এতেও নিয়ন্ত্রণে আসেনি বাজার; উল্টো বেড়ে গেছে দাম। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থ হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন খোদ বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি বলেছিলেন, সামনে আর যেন কোনো সমস্যা না হয়, সে বিষয়ে কাজ চলছে।

তবে বাজারে নতুন আলুর সরবরাহ ও আমদানি বৃদ্ধি এবং সরকারের বিভিন্ন সংস্থার বাজার অভিযানে পাল্টাতে শুরু করেছে পরিস্থিতি। এতে কমতে শুরু করে আলুর দাম। বিক্রেতারা বলছেন, নতুন আলুর দাম ১২০ টাকা থেকে কমে ৬০ টাকায় নেমেছে। এ ধরনের আলুর আধিক্যের কারণে পুরান আলুর দামও কেজিপ্রতি ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকায়।

আর পাইকারি পর্যায়ে প্রতি কেজি নতুন আলু ৫২-৫৩ টাকা ও পুরান আলু ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলুর দাম কমার তথ্য মিলেছে সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পরিসংখ্যানেও। তথ্য বলছে, এক মাসের ব্যবধানে আলুর দাম ৩.৫৭ শতাংশ কমেছে।

কারওয়ান বাজারের বিক্রমপুর বাণিজ্যালয়ের রুবেল জানান, বাজারে পুরোদমে উঠে গেছে নতুন আলু। পাশাপাশি বিদেশ থেকে আমদানিও অব্যাহত রয়েছে। এতে নতুন ও পুরান — দুই ধরনের আলুর দাম কমতে শুরু করেছে।

স্বস্তি ফিরেছে উত্তাপ ছড়ানো পেঁয়াজের বাজারেও। বিক্রেতারা বলছেন, পেঁয়াজের কালি (কেজি ৫০ টাকা) উঠায় এবং আমদানি করা পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ায় দাম কমতে শুরু করেছে পণ্যটির। পাশাপাশি বাজারে উঠতে শুরু করেছে নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজও।

বর্তমানে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা কমে খুচরায় প্রতি কেজি পুরান দেশি পেঁয়াজ ১০০-১১০ টাকা, নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজ ৭০ টাকা ও আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। আর পাইকারি পর্যায়ে প্রতি কেজি পুরান দেশি পেঁয়াজ ৯০-৯২ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৭২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পেঁয়াজের দাম কমার তথ্য মিলেছে টিসিবির পরিসংখ্যানেও। তথ্য বলছে, এক মাসের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের দাম ২৬.৭৯ শতাংশ ও আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ২১.৯৫ শতাংশ কমেছে।

আড়তদার ও আমদানিকারকরা বলছেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে আমদানির বিকল্প নেই। আমদানি বাড়ায় দাম কমছে। রাজধানীর কারওয়ান বাজারের মিনহাজ বাণিজ্যালয়ের খলিল বলেন, বর্তমানে আড়তে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৯০ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। মূলত ভারতসহ অন্যান্য দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি বেড়েছে। এর প্রভাব বাজারে পড়ছে।

এর আগে, দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে গত ৫ সেপ্টেম্বর আমদানিতে বিদ্যমান ৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক প্রত্যাহার করেছিল এনবিআর। এতেও বাজার নিয়ন্ত্রণে না এলে গত ৬ নভেম্বর পেঁয়াজ আমদানিতে শুল্ক-কর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে প্রতিষ্ঠানটি। এ সুবিধা ২০২৫ সালের ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত বহাল থাকবে।

আলু ও পেঁয়াজের দাম কমায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। তারা বলেন, আমদানি বাড়ালে ও নিয়মিত বাজার মনিটরিং করলে দাম কমবে। এতে স্বস্তি পাবে সাধারণ ভোক্তা।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে