রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৮:৫০:৩৩

মাত্র ৯ মাসে সম্পূর্ণ কোরআন মুখস্থ করলেন ৬ বছরের সাফিয়্যা

 মাত্র ৯ মাসে সম্পূর্ণ কোরআন মুখস্থ করলেন ৬ বছরের সাফিয়্যা

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : সম্পূর্ণ কোরআন শরিফ মাত্র ৯ মাসে মুখস্থ করে বিস্ময়কর দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন ৬ বছর ৪ মাস বয়সি সাফিয়্যা বিনতে মুহাম্মাদ আবুল খায়ের। রাজধানীর মিরপুরে অবস্থিত মাদরাসাতুস সুফফা লিল বানাত থেকে কোরআন মুখস্থ করে সাফিয়্যা।

শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) ওই মাদরাসায় দোয়া ও সীরাত মাহফিলে সাফিয়্যার কৃতিত্ব উদযাপনের পাশাপাশি ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। এ মহান সাফল্যের জন্য সাফিয়্যা বিনতে মুহাম্মাদ আবুল খায়ের ও আবদুর রহমান বিন মুহাম্মদ আবুল খায়েরকে সংবর্ধনা সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।

হুফফাজুল কুরআন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ হাফেজ ক্বারি আবদুল হকের সভাপতিত্বে ও বিশিষ্ট ইসলামিক আলোচক আরজে মাওলানা মামুন চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে শায়খুল হাদিস আল্লামা আহমদ আলী কাসেমী, উপদেষ্টা বক্তা হিসেবে জাতীয় মসজিদ বাইতুল মোকাররমের পেশ ইমাম মুফতি মিযানুর রহমান কাসেমী, প্রধান আলোচক হিসেবে মাওলানা রুহুল আমিন সাদী উপস্থিত ছিলেন।

এ ছাড়া বাংলাদেশ ইমাম সমিতির সভাপতি হাফেজ মাওলানা লুৎফুর রহমান, ইসলামিক স্কলার মুফতি সাইফুল ইসলাম, আন্তর্জাতিক বক্তা ড. মাওলানা মোহাম্মদ শোয়াইব, সময় টেলিভিশনের ইসলাম বিভাগের প্রধান মুফতি আবদুল্লাহ তামিম, জামিয়া রাহমানিয়ার মুহাদ্দিস মুফতি সাঈদ আহমদ, মাওলানা এনামুল হাসান ক্বারী নাহিয়ান কায়সার, শিল্পী আব্দুল্লাহ হাওলাদার, শাহিদ মজুমদারসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আহমদ আলী কাসেমী বলেন, কোরআন হিফজ শুধু একটি দৃষ্টান্তমূলক কাজ নয়, বরং এটি আল্লাহর কাছ থেকে একটি বিশেষ নেয়ামত। যারা কোরআন হিফজ করে তারা দুনিয়া ও আখিরাতে সম্মানিত। কোরআনের হাফেজরা জান্নাতে তাদের পরিবারের জন্য সুপারিশ করবেন। এটি মুসলিম পরিবারের জন্য এক বিশাল সৌভাগ্যের বিষয়।

মাওলানা রুহুল আমিন সাদী বলেন, কোরআন হিফজের মাধ্যমে আমরা একটি প্রজন্ম তৈরি করতে পারি, যারা ইসলামের প্রকৃত আদর্শ ধরে রাখবে। হাফেজরা কেবল একজন ব্যক্তি নন, বরং তারা পুরো মুসলিম উম্মাহর আলোকবর্তিকা। তাদের ওপর কোরআনের শিক্ষা বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করার দায়িত্ব রয়েছে।

বিশেষ আলোচক হাফেজ মাওলানা লুৎফুর রহমান বলেন, কোরআন হিফজকারী ব্যক্তি আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহপ্রাপ্ত। এটি শুধুমাত্র ব্যক্তির নিজের নয়, বরং তার পরিবারের জন্যও কল্যাণ বয়ে আনে। কোরআন হিফজের মাধ্যমে একটি পরিবার এবং সমাজ উভয়ই আলোকিত হয়।

মুফতী সাইফুল ইসলাম বলেন, কোরআনের হাফেজরা এমন এক শ্রেণির মানুষ যাদের জীবনে আল্লাহর রহমত প্রবাহিত হয়। তারা নিজেদের অন্তরে শান্তি অনুভব করে এবং আল্লাহর নিকট প্রিয় হয়ে ওঠে। হাফেজরা ইসলামের রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করেন।

সভাপতির বক্তব্যে শায়খ কারি আবদুল হক বলেন, আলহামদুলিল্লাহ, আজকের এই মহতী আয়োজন আমাদের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। মাত্র ৬ বছর ৪ মাস বয়সে পুরো কোরআন শরিফ মুখস্থ করে আমাদের স্নেহের সাফিয়্যা তাবশিরা আমাদের জন্য গর্ব এবং অনুপ্রেরণার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

তিনি আরও বলেন, কোরআন হিফজের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে গভীর সম্পর্ক তৈরি করে। এটি শুধু একটি ইবাদত নয়, বরং একটি দায়িত্ব। যারা কোরআনের হাফেজ হন তাদের জীবনে আল্লাহর বিশেষ রহমত নেমে আসে। কোরআন হিফজ কেবল দুনিয়ার জন্য নয়, আখিরাতেও তাদের মর্যাদা বৃদ্ধি করে।

অনুষ্ঠানে মাদরাসাতুস সুফফার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মাওলানা আবুল খায়ের উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, সাফিয়্যার মায়ের দিকনির্দেশনায় তার পরিবারের চার বোন ও দুই ভাই পাঁচ থেকে সাত বছর বয়সে হাফেজ হয়েছেন। এটি বর্তমান সময়ের শিশুদের জন্য এক অসাধারণ উদাহরণ।

সাফিয়্যার এই কৃতিত্ব তার অভিভাবক, মাদরাসার শিক্ষক ও পুরো সমাজের জন্য গর্বের বিষয়। এ অর্জন কেবল তার পরিবারের নয়, বরং পুরো মুসলিম সমাজের জন্য একটি আলোকিত পথ দেখিয়েছে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে