সোমবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬, ০৩:২৩:৫২

বাংলাদেশে বিয়ে করে বিদেশি নাগরিকের ব্যাংক জালিয়াতি

বাংলাদেশে বিয়ে করে বিদেশি নাগরিকের ব্যাংক জালিয়াতি

নিউজ ডেস্ক : ব্যাংকের এটিএম বুথে কার্ড জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বিদেশি নাগরিক পিওটর সিজোফেন মাজুরেককে (ছদ্মনাম থমাস পিটার) গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। একই ঘটনায় সিটি ব্যাংকের আরো তিন কর্মকর্তাকে আটক করা হয়।

পিওটর থাকেন গুলশানে।  ঢাকায় থেকে যেতে তিনি বাংলাদেশি এক হোটেল কর্মচারীকে বিয়ে করে সংসার পেতেছেন।  গেল সপ্তাহে পুত্রসন্তানের বাবা হয়েছেন তিনি।

আজ সোমবার ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান নবগঠিত কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান ডিআইজি মনিরুল ইসলাম।

পিওটরের জন্মস্থান ইউক্রেন।  তিনি জার্মানির নাগরিক।  থমাস পিটার নামে তার পোল্যান্ডের পাসপোর্ট রয়েছে।  আটক হওয়া তিন ব্যাংক কর্মকর্তা হলেন মকসেদ আলম ওরফে মাকসুদ, রেজাউল করিম ও রেফাজ আহমেদ। ব্যাংকের কার্ড ডিভিশনে কর্মরত তারা।

মনিরুল ইসলাম বলেন, গতকাল রোববার রাতে রাজধানীর গুলশানে পিওটরের নিজের বাসা ও বিভিন্ন এলাকা থেকে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. শাহজাহানের নেতৃত্বে এ অভিযান চালানো হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পিওটর জানান, দীর্ঘদিন ধরে তারা জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত।  তার সঙ্গে এ কাজে জড়িত আছেন লন্ডনপ্রবাসী এক বাংলাদেশি, বুলগেরিয়ার ও ইউক্রেনের একজন করে নাগরিক।  তাদের সঙ্গে সিটি ব্যাংকের কার্ড ডিভিশনের গ্রেপ্তার হওয়া তিন কর্মকর্তার যোগসাজশ রয়েছে।

সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, পিওটর পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি এক বছর আগে বিজনেস ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে আসেন।  কিছুদিন আগে ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়।  বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশি নাগরিকদের কাছ থেকে এর আগে তারা টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।  

এটিএম বুথ থেকে তারা শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেন।  পরে বাংলাদেশিদের এটিএম বুথ থেকে টাকা জালিয়াতির কাজ শুরু করেন তারা। সিটি ব্যাংকের তিন কর্মকর্তার কাছে থাকা পাঞ্চ মেশিন তাদের এ কাজে সহায়তা করে।  

এ চক্রের সঙ্গে অন্য ব্যাংকের আরো কয়েকজন জড়িত বলে ডিবি জানিয়েছে। এগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

ডিবি জানায়, এটিএম বুথের কার্ড জালিয়াতির চক্র মূলত পূর্ব ইউরোপের রোমানিয়া, বুলগেরিয়া, ইউক্রেন ও পোল্যান্ডভিত্তিক।  এরা ইউরোপ, আফ্রিকাসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে তৎপর।  গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে ১০ দিনের রিমান্ড চাইবে ডিবি।


এ মাসের প্রথম সপ্তাহে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ইস্টার্ন, সিটি ও ইউসিবিএল ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে অন্তত ২০ লাখ টাকা তুলে নেয় চক্রটি।  টাকা হাতিয়ে নিতে তারা স্কিমিং ডিভাইস বসিয়ে গ্রাহকদের গোপন তথ্য চুরি করে।  

এরপর ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড (ইউসিবিএল), সিটি ব্যাংক ও ইস্টার্ন ব্যাংক কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে।  তৎপর হয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।  কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বাংলাদেশ ব্যাংকও এগিয়ে আসে।  মাঠে নামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।  ধরা পড়ে জালিয়াত চক্র।
২২ ফেব্রুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে