এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানু লাঞ্ছনার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করছেন। তাকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়েছে।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে এক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে কানুকে গ্রেপ্তারের দাবি জানায় ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্রসমাজ’। ছাত্র-জনতার গণভ্যুত্থানে জুলাই-আগস্ট হত্যাণ্ডের বিচারের দাবিতে বুধবার বিকেলে চৌদ্দগ্রামে এ বিক্ষোভ ও সমাবেশ করে তারা।
সমাবেশে বক্তরা বলেন, কানু হত্যাসহ ৯টি মামলার আসামি। এখনো প্রশাসন তাকে গ্রেপ্তার করছে না। একটি জুতার মালার ঘটনাকে কেন্দ্র করে আব্দুল হাই কানু দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন। কানু মুক্তিযোদ্ধার প্রেরণাকে কেন্দ্র করে ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করছেন।
কানুকে দ্রুত গ্রেপ্তার করার জোর দাবি জানিয়ে তারা বলেন, কানুর ঘটনাকে পুঁজি করে একটি মহল আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা চালাচ্ছে। ছাত্র-জনতা তা হতে দেবে না।
এ সময় কুমিল্লা জেলা আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মামুন মজুমদার, সদস্য জাহিদুল ইসলাম, নাসিম মিয়াজি, আবুল হাসনাত সিয়ামসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন। বিক্ষোভ মিছিল ঢাকা- চট্রগ্রাম মহাসড়কের গুরুত্বর্পূণ স্থান প্রদক্ষিণ শেষে হায়দার শপিং কমপ্লেক্সর সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে জাহিদুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ রিকশা লীগ, আনসার লীগ হয়ে আসে। এবার এসেছে তারা কানু লীগ হয়ে।
উপদেষ্টাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনারা ঘোষণা দিয়েছিলেন, জুলাই আগস্টের ছাত্র হত্যার বিচার দ্রুত শেষ করবেন। আমরা এখনো কোনো দৃশ্যমান দেখছি না। দ্রুত ফ্যাসিবাদিদের বিচারের কাজ শেষ করতে হবে।
রবিবার (২২ ডিসেম্বর) কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানুর গলায় জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করে একদল দুর্বৃত্ত। রাতে এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করা হয়।
১ মিনিট ৪৭ সেকেন্ডের ভাইরাল ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, দুই ব্যক্তি জুতার মালা পরা অবস্থায় ওই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের টানাহেঁচড়া করছেন। তাকে লাঞ্ছিত করা ব্যক্তিদের একজনই পুরো ঘটনার ভিডিও করেছেন। এ সময় ওই বীর মুক্তিযোদ্ধা বারবার তাকে ছেড়ে দেওয়ার আকুতি জানান। যিনি ভিডিও করছেন তিনি ওই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে বলে ওঠেন, আপনি পুরো গ্রামের মানুষের কাছে মাফ চাইতে পারবেন। তখন ওই বীর মুক্তিযোদ্ধা দুই হাত তুলে বলেন, ‘আমি মাফ চাই। যে দুজন ওই মুক্তিযোদ্ধার দুই হাত ধরে টানাহেঁচড়া করছিলেন তাদের একজন বলে ওঠেন আপনি এলাকা থেকে কবে চলে যাবেন।’ লাঞ্ছিতকারীরা বারবার ওই মুক্তিযোদ্ধাকে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে হুমকি দিতে থাকেন। কিন্তু ওই বীর মুক্তিযোদ্ধা বারবার লাঞ্ছিতকারীদের হাতে ধরে এলাকায় নিজ বাড়িতে থাকার আকুতি জানান।
কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা কৃষক লীগের সাবেক সহসভাপতি পদে আছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানু। তিনি লুদিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা। তার বিরুদ্ধ আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এলাকাবাসীর ওপর নির্যাতনের অভিযোগ আছে।
এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুই সমর্থককে বহিষ্কার করেছে জামায়াত। ঘটনার পরদিন বিবৃতি দিয়ে তাদের বহিষ্কার করা হয়।
গতকাল মঙ্গলবার ভারতীয় একটি বেসরকারি চ্যানেলে যুক্ত হন বীর মুক্তিযোদ্ধা কানু। সেখানে আলোচিত উপস্থাপক ময়ূখ রঞ্জন ঘোষের বিভিন্ন প্রশ্নের তিনি ভারতসহ অন্য দেশগুলোর কাছে বিচার দাবি করেন।