মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারী, ২০২৫, ১১:৩২:৩৩

কেবল কয়েক মুহূর্ত, সবকিছু উল্টেপাল্টে গেলো, ঘটলো হৃদয়বিদারক ঘটনা!

কেবল কয়েক মুহূর্ত, সবকিছু উল্টেপাল্টে গেলো, ঘটলো হৃদয়বিদারক ঘটনা!

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : কেবল কয়েক মুহূর্ত। সবকিছু উল্টেপাল্টে গেলো। আনন্দের ক্ষণের ওপর কালো পর্দা টাঙিয়ে নামলো হৃদয়ভাঙা বিষাদ। ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদপুরে। বিয়ের জন্য কনে দেখতে যাচ্ছিলেন তারা। 

মাইক্রোবাসটিতে ছিলেন মোট ৭ জন। রাজবাড়ী-ভাঙ্গা রেলপথের হোসেনের দোকানের সামনে দুপুর ১২টার দিকে গাড়িটিকে ধাক্কা দেয় খুলনাগামী মধুমতী এক্সপ্রেস ট্রেন। এতে মারা যান পাঁচ জন। আহতদের মধ্যে দুইজনের অবস্থাও আশংকাজনক। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মধুমতী এক্সপ্রেস নামের ট্রেনটি খুলনা থেকে ফরিদপুর হয়ে ঢাকা যাচ্ছিল। অন্যদিকে মাইক্রোবাসটি মুন্সিবাজার হয়ে হোসেনের দোকানের সামনে দিয়ে রেল ক্রসিং পার হচ্ছিল। এসময় যাত্রীবাহী মাইক্রোবাসটি রেল ক্রসিংয়ে ওঠা মাত্রই দ্রুতগামী ট্রেনের ধাক্কায় ছিটকে রাস্তা থেকে পূর্ব পাশের খাদে পড়ে যায়। এতে মাইক্রোবাসটির গ্যাস সিলিন্ডারে আগুন ধরে যায়। ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনজন। হাসপাতালে নেওয়ার পর আরো দুইজন মারা যান। 

স্থানীয় চা দোকানি হোসেন আলী জানান, ট্রেনের সাথে মাইক্রোবাসটির সংঘর্ষ হলে মাইক্রোবাসটি কিছুটা দূরে গিয়ে ছিটকে খাদে পড়ে আগুন ধরে যায়। পরে স্থানীয়রা আগুন নেভাতে সক্ষম হলেও মাইক্রোবাসের ভেতর থেকে কাউকে উদ্ধার করতে পারেনি। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরাও উদ্ধার কাজে অংশ নেয়। 

পুলিশ জানায়, মাইক্রোবাসে চালকসহ মোট সাতজন ছিলেন। তারা বিয়ের পাত্রী দেখতে ফরিদপুরের সদরপুরে যাচ্ছিল। নিহতেরা হলেন, নারায়নগঞ্জ বন্দর থানার ভূইয়াপাড়া এলাকার ব্যবসায়ী মামুন চৌধুরী লিটন (৫০), তার স্ত্রী ফাহমিদা শারমিন মুন (৪৫), মেয়ে সাজিয়া সাজু (৪৫), মামুন চৌধুরীর শ্যালকের স্ত্রী আতিফা (৫০) ও তাদের আত্মীয় উম্মে তাফসুমা রিনতু (৩০)। আহতদের মধ্যে স্থানীয় এক চা দোকানীসহ ৩ জনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দুর্ঘটনার পর স্থানীয় বিক্ষুব্ধরা রেলপথ অবরোধ করে রাখে। এসময় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার গেট ম্যান রাখার প্রতিশ্রুতি দিলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। 

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মামুন চৌধুরীর মেয়ে তাছরি (২২) জানান, নারায়ণগঞ্জের ভূঁইয়াবাড়ি থেকে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার চন্দ্রপাড়ায় যাচ্ছিলেন বিয়ের জন্য পাত্রী দেখতে। তবে কার বিয়ের জন্য পাত্রী দেখতে গিয়েছিলেন তা জানাতে পারেনি সে। তাছরি বলেন, হঠাৎ করেই গাড়িটিকে ট্রেন ধাক্কা দেয়। তিনি আর কিছুই মনে নেই তার। পরে দেখতে পান তিনি হাসপাতালে রয়েছেন।

ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে যান। ঘটনাস্থল থেকে তিনটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। আহত ব্যক্তিদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি জানান,ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে মাইক্রোবাসটি নিচের খাদে পড়ে গিয়েছিল। দুর্ঘটনার পর সেখানে ছুটে যান জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান মোল্লা, পুলিশ সুপার মোঃ আব্দুল জলিল। জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে নিহত ব্যক্তিদের মৃতদেহ বহন ও সৎকারের জন্য যাবতীয় খরচ বহন করার কথা জানান।

উল্লেখ্য, গত ১ বছরে বিভিন্ন সময়ে এই রেল ক্রসিংয়ে ১৪টি দুর্ঘটনায় এ নিয়ে ১২ জন নিহত হলো।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে