এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : এবার ফেঁসে যাচ্ছেন শামীম ওসমান ও তার স্ত্রী-শ্যালক। দুই কোটি ৫১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৫৮ মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি টাকায় ১৯৩ কোটি ৯১ লাখ ১৮ হাজার ৬০৩ টাকা) পাচারের অভিযোগে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান, তার স্ত্রী সালমা ওসমান লিপি ও শ্যালক তানভীর আহমেদের নামে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদুকের নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ের উপ-পরিচালক নেয়ামুল গাজী। এর আগে দুদকের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক জালাল উদ্দিন আহাম্মদ বাদী হয়ে আজ দুদুকের নারায়ণগঞ্জের সুজেকায় মামলাটি দায়ের করেন।
জানা যায়, শামীম ওসমানের স্ত্রী সালমা ওসমান এবং শ্যালক তানভীর আহমেদের নেতৃত্বে পরিচালিত ‘কে টেলিকমিউনিকেশন্স লিমিটেড’ আন্তর্জাতিক কল আনয়ন ও সেবা রপ্তানির জন্য বিটিআরসির অনুমোদিত অপারেটর।
মামলায় কে টেলিকমিউনিকেশন্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান সালমা ওসমানকে এক নম্বর, শামীম ওসমানের শ্যালক ও কে টেলিকমিউনিকেশন্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর আহমেদকে দুই নম্বর এবং শামীম ওসমানকে তিন নম্বর আসামি করা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত (১৪ মাস) সময়ে ৯১ কোটি ৫০ লাখ ৯২ হাজার ৮৬৫ কল মিনিট আনয়ন তথা সেবা রপ্তানি করে। রপ্তানিকৃত এ সেবার মূল্য ২,৭৪,৫২,৭৮৬ মার্কিন ডলার। উক্ত বৈদেশিক মুদ্রা আইন মোতাবেক ফরেন রেমিটেন্স হিসাবে বাংলাদেশে প্রত্যাবাসিত হওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ সংক্রান্ত আইএফআইসি ব্যাংক নারায়ণগঞ্জ শাখার এফসি অ্যাকাউন্ট নম্বরের বিবরণী দৃষ্টে পরিলক্ষিত হয় যে, ২ কোটি ৭৪ লাখ ৫২ হাজার ৭৮৬ মার্কিন ডলার এর স্থলে ২২ লাখ ৬৯ হাজার ৪২৭/৫২ মার্কিন ডলার প্রত্যাবাসিত হয়েছে। অর্থাৎ প্রত্যাবাসিত হয়নি ২ কোটি ৫১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৫৮/৪৮ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৯৩,৯১,১৮,৬০৩ টাকা।
আরও জানা যায়, শামীম ওসমানের সহযোগিতায় চেয়ারম্যান হিসেবে সালমা ওসমান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে তানভীর আহমেদ দায়িত্বে থাকা অবস্থায় উল্লিখিত ওঅ্যাড প্রতিষ্ঠান কর্তৃক রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের স্বার্থ থাকা সত্ত্বেও বিদ্যমান মানিলন্ডারিং আইন লঙ্ঘনপূর্বক ১৯৩,৯১,১৮,৬০৩ টাকা মূল্যের ২,৫১,৮৩,৩৫৮ মার্কিন ডলার পাচার কিংবা মানিলন্ডারিং করা হয়েছে। এক্ষেত্রে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অর্থ বা সম্পত্তি পাচার সংক্রান্ত অপরাধ সংঘটিত হয়েছে মর্মে প্রতীয়মান হয়। অর্থাৎ শামীম ওসমানের সহযোগিতায় সালমা ওসমান এবং তানভীর আহমেদ যথাক্রমে চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে বর্ণিত ওঅ্যাড অপারেটরের দায়িত্বে থাকা অবস্থায় উল্লিখিত মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা/অর্থ বা সম্পত্তি পাচার করে কিংবা বাংলাদেশে আনয়নযোগ্য বৈদেশিক মুদ্রা বিদেশ হতে বাংলাদেশে না এনে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন,২০১২ এর ৪(২)ও ৪(৩) ধারা ও দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।