এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) হিম উৎসবে ঘুরতে এসে নওয়াব ফয়জুন্নেসা ছাত্রী হলরুমে বান্ধবীর কক্ষে ঢুকে পড়েন বহিরাগত এক যুবক। পরে সেই যুবককে আটক করে হল কর্তৃপক্ষ।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টার দিকে ওই হলের একটি কক্ষ থেকে তাকে আটক করা হয়।
আটক আটক যুবকের নাম আশরাফুল ইসলাম পারভেজ (৩১), যিনি 'যাযাবর পারভেজ' নামে পরিচিত। তিনি চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের ডাবলমুরিং থানার বাসিন্দা। পারভেজ ২০১১ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলেন বলে জানা গেছে। তবে তার সর্বশেষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
হল কর্তৃপক্ষ, প্রক্টরিয়াল বডি এবং হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পারভেজ নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের প্রথম বর্ষের এক নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে কপালে টিপ, পালাজো ও মুখে ঘোমটা দিয়ে রাত আনুমানিক ১০ টার দিকে হলের ভেতরে প্রবেশ করেন। তবে, তার পোশাক এবং চলাফেরায় সন্দেহ হয় কিছু শিক্ষার্থীদের মধ্যে। তারা সিসিটিভি ফুটেজ চেক করার জন্য হল সুপারকে অনুরোধ করেন। ফুটেজ পর্যালোচনা করার পর, হল সুপারসহ তারা অভিযুক্ত পারভেজকে ওই নারী শিক্ষার্থীর কক্ষে আটক করে। এরপর তাকে হল প্রাধ্যক্ষ ও প্রক্টরিয়াল বডির উপস্থিতিতে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়।
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে আটক পারভেজকে শাড়ি ও টিপ পরিয়ে দেয় হলের ক্ষুব্ধ আবাসিক শিক্ষার্থীরা।
আটক আটকের পর ঘটনা স্বীকার পারভেজ বলেন, আমরা দুইজন ভালো বন্ধু। আমাদের সাত বছরের বন্ধুত্ব। দুজনেই লালন ভক্ত। তাকে আমি বিয়ে দিয়েছি। আমি হিম উৎসবে বেড়াতে এসেছি। হলে আসার সময় আমি কপালে টিপ পড়ে মুখ ও শরীর চাদরে মুড়িয়ে হলে প্রবেশ করি।
অন্যদিকে অভিযুক্ত নারী শিক্ষার্থী জানান, আমরা দুজন ভালো বন্ধু। হিম উৎসবে সে এসেছিল এবং রাতে থাকার জায়গা না পেয়ে তাকে হলে নিয়ে এসেছি। আমরা কেউ আপত্তিকর অবস্থায় ছিলাম না।
অভিযুক্ত নারী শিক্ষার্থীর স্বামীকে ফোন করলে তিনি পারভেজকে চেনেন না বলে জানান। এরপর, ওই নারী শিক্ষার্থী পারভেজকে শুধু মাত্র ফেসবুক বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করেন।
নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের হল সুপার নাদিয়া সুলতানা বলেন, হলের মেয়েরা ওই ছাত্রীর রুমে সেই পুরুষের উপস্থিতি বুঝতে পেরে আমাকে জানালে তৎক্ষণাৎ আমি হলের খালাকে সঙ্গে নিয়ে রুমে যাই। দরজা খোলার পর আমি তাকে খাটের ওপরে বসে থাকা অবস্থায় দেখতে পাই। তৎক্ষণাৎ আমি হল প্রভোস্টকে জানাই।
হল প্রভোস্ট অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমি খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে উপস্থিত হয়েছি। অভিযুক্তদের প্রক্টরিয়াল বডির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখা হবে এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, হল কর্তৃপক্ষের কাছে খবর পাওয়ার পর আমি তৎক্ষণাৎ প্রক্টরিয়াল টিমকে পাঠাই। তারপর আটক ছেলেকে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং হলের অভিযুক্ত নারী শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে শাস্তির মুখোমুখি করা হবে।