বুধবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬, ০১:৩৬:৪৫

বিএনপিতে ঠাঁই হয়নি অধিকাংশ সংস্কারপন্থীর

বিএনপিতে ঠাঁই হয়নি অধিকাংশ সংস্কারপন্থীর

নিউজ ডেস্ক : বিএনপির সেই নেতাদের প্রতি এখনো কঠোর অবস্থানে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। গুটি কয়েকজন বাদে সবাই এখন বিএনপি থেকে অনেক দূরে। ওয়ান-ইলেভেনে ‘কথিত সংস্কারপন্থি’ বলে খ্যাত কিছু সংখ্যক নেতাকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

অর্ধশত সাবেক মন্ত্রী-এমপির গায়ে এখনো সংস্কারপন্থির তকমা। দীর্ঘ আট বছর ধরে দলের বাইরে থাকলেও নতুন কোনো দলেও যুক্ত হননি তারা। দলে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন। অবশ্য কেউ কেউ নিজ এলাকায় বিএনপির পক্ষে নানা কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। কয়েকজনের সঙ্গে বিএনপি নেতাদেরও যোগাযোগ রয়েছে।

এক সময়ে বাইরে থাকা এসব নেতারাই বিএনপিতে প্রভাবশালী ছিলেন। তৃণমূল নেতা-কর্মীদের কাছেও তারা ছিলেন জনপ্রিয়। কিন্তু ওয়ান-ইলেভেনের পর থেকেই কর্মী-সমর্থকদের কাছ থেকে ছিটকে পড়েন এসব নেতারা। জানা গেছে, বিগত ২০১৪ সালের নির্বাচনে সরকারের পক্ষ থেকে সংস্কারপন্থি নেতাদের কাছে বেশকিছু ‘লোভনীয় অফার ছিল।’ মন্ত্রী-এমপি হওয়ার জন্যও কারও কারও ডাক এসেছিল। কিন্তু তারা যাননি।

বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, আপনারা অপেক্ষা করুন। সময়-সুযোগে আপনাদের সবাইকে দলের সঙ্গে যুক্ত করা হবে। আওয়ামী লীগে দুই-একজন বাদে সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করা হলেও আজও বিএনপির অর্ধশত সাবেক মন্ত্রী-এমপিদের মূল ধারায় যুক্ত করা হয়নি।

সংস্কারপন্থি কয়েকজন এমপি জানান, তারা যে ১৫ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছিলেন তা ছিল যুগোপযোগী ও বাস্তব সম্মত। বিএনপি এখন তা বাস্তবায়ন করছে। গণতান্ত্রিক দল জ্বালাও পোড়াও কর্মসূচি দিতে পারে না—আমরা তখন বলেছিলাম। বিএনপি এখন সে পথেই হাঁটছে। তাছাড়া বিএনপি যদি সেদিন সমঝোতার পথে হাঁটত তাহলে আজ সরকারি দলে থাকত।

আজ নেতা-কর্মীদের এত কঠিন পরীক্ষায় পড়তে হতো না। আওয়ামী লীগ সমঝোতার রাজনীতি করে আজ বিএনপিকে নিষ্পেষিত করছে। বিএনপির প্রতিটি নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে মামলা দিয়ে নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। অসংখ্য নেতা-কর্মী গুম, খুনের শিকার হয়েছেন।

দলের বাইরে থাকা বিএনপির এসব নেতার মধ্যে রয়েছেন চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) জেড এ খান, সাবেক সচিব মোফাজ্জল করীম, সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আশরাফ হোসেন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী আলমগীর কবীর, সাবেক মন্ত্রী আনোয়ার তালুকদার, সাবেক মন্ত্রী শাহ মোহাম্মদ আবুল হোসাইন, সাবেক হুইপ সৈয়দ শহীদুল হক জামাল, সাবেক এমপি আবু হেনা, সাবেক দফতর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি, সাবেক তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক জহির উদ্দিন স্বপন, সুনামগঞ্জ জেলার সাবেক সভাপতি নজির হোসেন, সাবেক এমপি সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুল, চাঁদপুরের সাবেক জেলা সভাপতি এস এ সুলতান টিটু, বরগুনার সাবেক জেলা সভাপতি নূরুল ইসলাম মণি, সাবেক এমপি শামীম কায়সার লিঙ্কন, বগুড়ার সাবেক এমপি ডা. জিয়াউল হক মোল্লা ও জি এম সিরাজ, সাবেক এমপি এম এম শাহীন, সাবেক হুইপ খলিলুর রহমান, সাবেক এমপি শাম্মী শের, ময়মনসিংহের সাবেক এমপি দেলোয়ার হোসেন দুলু, কক্সবাজারের সাবেক এমপি শহিদুজ্জামান, কাজী সিরাজ, হাতিয়ার সাবেক এমপি ফজলুল আজিম, সাবেক হুইপ আবু ইউসুফ মো. খলিলুর রহমান, সাবেক এমপি আবদুল করিম আব্বাসী, মেহেরপুরের সাবেক এমপি আবদুল গনি, পাবনার সাবেক এমপি আনোয়ারুল হক, সাবেক সচিব আবদুল হাকিম, নারায়ণগঞ্জের সাবেক এমপি আতাউর রহমান আঙ্গুর, সুরঞ্জন ঘোষ, সাবেক ছাত্রনেতা মনির হোসেন প্রমুখ।

তবে এর মধ্যে বিএনপি নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে জেড এ খান, সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুল, জহির উদ্দিন স্বপন, নজীর হোসেন, ডা. জিয়াউল হক মোল্লা, জি এম সিরাজ, দেলোয়ার হোসেন দুলুসহ বেশ কয়েকজনের। বিগত পৌরসভা নির্বাচনসহ বিএনপির বেশকিছু কর্মসূচিতেও স্থানীয়ভাবে সম্পৃক্ত হচ্ছেন এসব নেতারা। বিএনপি চেয়ারপারসনও কয়েকজন সংস্কারপন্থি নেতার সঙ্গে কথা বলেছেন।

আগামী কমিটিতে গুটি কয়েক নেতাকে বিএনপির নির্বাহী কমিটিতে সম্পৃক্ত করা হবে বলেও জানা গেছে। এ প্রসঙ্গে নজির হোসেন বলেন, আমরা জিয়ার আদর্শে বিশ্বাসী। অন্য কোনো দল করার ইচ্ছা নেই। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রামে আমরা অংশ নিতে চাই। আশা করি, সেই সুযোগ আমরা পাব।

বিএনপির সিনিয়র একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ইস্যুতে সরকারবিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামকে সামনে রেখে দলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করতে চান চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এ লক্ষ্যে জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী সারা দেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা নিষ্ক্রিয় নেতাদের একই প্লাটফরমে নিয়ে আসার চিন্তাভাবনা চলছে। -বিডি প্রতিদিন
২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে