বুধবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬, ০২:১৫:৩৯

ভোটের আগেই প্রশ্নবিদ্ধ ইসি

ভোটের আগেই প্রশ্নবিদ্ধ ইসি

গোলাম রাব্বানী : প্রথম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র ছিনতাই, জমা দিতে বাধা, প্রার্থী অপহরণ, হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় প্রশ্নের মুখে পড়েছে নির্বাচন কমিশন। সোমবার মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনে বিভিন্ন স্থানে এসব ঘটেছে।

হামলা-বাধার কারণে বিএনপি ও স্বতন্ত্র শতাধিক প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি বলে অভিযোগ উঠেছে। এসব বিষয়ে তাত্ক্ষণিক নির্বাচন কমিশন ও রিটার্নিং অফিসারের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাননি বলে জানিয়েছেন প্রার্থীরা।

অনেকে ভোটের আগে নির্বাচন কমিশনের এমন ভূমিকার কঠোর সমালোচনাও করেছেন। ইউপির প্রথম ধাপেই আওয়ামী লীগের ২৫ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাওয়ায় বিষয়টিও প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে।

নির্বাচন বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ভোটের আগেই নির্বাচন কমিশনের কর্মকাণ্ড প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। তারা প্রার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও তাদের কথা শুনছে না।

ইসি সূত্র জানিয়েছে, প্রথম ধাপে ৭৩৮ ইউপিতে তিন পদে মোট ৩৯৪৩০ প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এর মধ্যে ৭৩৮টি চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ৩ হাজার ৫৬৮ জন। ১৬ দলের মনোনীত এক হাজার ৯০০ জন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন এক হাজার ৬৬৮ জন। একক প্রার্থী রয়েছেন ২৫ ইউপিতে। এ ছাড়া সাধারণ সদস্য পদে ২৭ হাজার ৯৪৭টি ও সংরক্ষিত সদস্য পদে ৭ হাজার ৯১৫টি।

বাছাইয়ের আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ২৫টি ইউপিতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের  চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছেন। ইউপি নির্বাচনের বিষয়ে স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ও সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার গতকাল বলেন, বিগত ৫ জানুয়ারির নির্বাচন থেকেই ক্রমাগতভাবে বর্তমান কমিশনের কর্মকাণ্ড প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে আসছে। তারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারছে না।

তিনি বলেন, ইউপি নির্বাচনে বিভিন্ন স্থানে মনোনয়নপত্র জমা দিতে বাধা দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীদের বাধা সৃষ্টি পুরো নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করেছে। আর সেই কারণে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার সংখ্যাও বাড়ছে। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার প্রবণতা অশনিসংকেত।  

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম সচিব জেসমিন টুলী জানান, প্রথম ধাপে ৭৩৮টি চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ৩ হাজার ৫৬৮ জন। এর মধ্যে ১৬টি দলের এক হাজার ৯০০ জন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন এক হাজার ৬৬৮ জন। একক প্রার্থী রয়েছেন ২৫ ইউপিতে। মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের পর বৈধ প্রার্থীদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় শেষ হলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নির্বাচিত ঘোষণা করবেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।

নির্বাচন ব্যবস্থাপনা ও সমন্বয় শাখার সহকারী সচিব আশফাকুর রহমান জানান, আওয়ামী লীগের ৭৪১ জন ও বিএনপির ৬৬৮ জন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। এ ছাড়া জাতীয় পার্টির ১৪৮ জন, জাসদের ৩০ জন, বিকল্পধারা ৫ জন, ওয়ার্কার্স পার্টির ২৪ জন, জেপির ২০ জন, বিএনএফের ৭ জন, জেএসডির ১ জন, সিপিবির ৪ জন, তরিকত ফেডারেশনের ১ জন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের ২ জন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ২৪৫ জন, কল্যাণ পার্টির ১ জন, ন্যাপের ২ জন ও জাকের পার্টির ১ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। বাকিরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।

এ কর্মকর্তা জানান, ৭০ ইউপিতে বিএনপির প্রার্থী নেই এবং আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী রয়েছেন কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার কালামারছড়া, খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার যোগীপল ও কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার আলমবাড়ি ইউপিতে। কোনো দল একাধিক প্রার্থী দিলে সংশ্লিষ্ট দলের সবার মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ার বিধান রয়েছে। এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন। -বিডি প্রতিদিন
২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে