বুধবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০২৫, ১১:৪৫:০৯

ট্রেন বন্ধ, বাসভাড়ার টাকা নেই, স্টেশনেই কাটছে তীব্র শীতের রাত!

ট্রেন বন্ধ, বাসভাড়ার টাকা নেই, স্টেশনেই কাটছে তীব্র শীতের রাত!

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফদের অনিদিষ্টকালের কর্মবিরতির কারণে সোমবার দিনগত রাত থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষ যারা স্বল্প খরচে লোকাল বা মেইল ট্রেনে চলাচল করেন, তাদের কষ্টের সীমা নেই। এদের মধ্যে অনেকে আছেন যাদের বাসভাড়া দিয়ে গন্তব্যে যাওয়ার সামর্থ্য নেই। তাদের অনেকেই রয়ে গেছেন স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে।

২৮ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) রাত ১০টার দিকে ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, স্টেশনের ৩ ও ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে বেশ কিছু লোক বসে আছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন দুই বৃদ্ধ, যাদের বয়স ৬৫ বছরের বেশি। দুজনই বাসভাড়া না থাকায় বাড়ি ফিরতে পারেননি।

ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলার হরিনানপুর গ্রামের মৃত তমিজ উদ্দীনের ছেলে শামসুল আলম। বাড়ি থেকে কাজের সন্ধানে ঈশ্বরদী এসেছিলেন রোববার। পার্বতীপুর স্টেশনে এসে ঈশ্বরদী আসার জন্য খুলনাগামী রকেট মেইলে ওঠেন। রকেট মেইল সান্তাহার স্টেশনে যাত্রাবিরতি দিলে ট্রেন থেকে নামার সময় প্ল্যাটফর্মে পড়ে গিয়ে পায়ে আঘাত পান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে ফেরার সময় দেখেন ব্যাগ নেই। ব্যাগে ৬০০ টাকা, মোবাইল, লাইট, কম্বল ও চাদর ছিল।

এই বৃদ্ধ জানান, রকেট মেইলে চড়েই সোমবার রাত ৮টার দিকে ঈশ্বরদী স্টেশনে আসেন। পায়ের আঘাতের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এখন কাজ করার মতো অবস্থা নেই। কিন্তু ট্রেন বন্ধ থাকায় বাড়িও ফিরতে পারছেন না। কারণ বাসে চড়ে বাড়ি যাওয়ার ভাড়া নেই।

একই অবস্থা শফিকুল ইসলাম নামে আরেক বৃদ্ধের। তার বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলার দরিরামপুর মৃধা পাড়ায়। এক সপ্তাহ আগে নাটোরে দিনমজুরের কাজে এসেছিলেন। চারদিন কাজ করে তিনদিনের টাকা বাড়ি পাঠিয়েছেন। একদিনের টাকা কিছু খরচ করেছেন। কিছু টাকা নিয়ে নাটোর থেকে সোমবার বিকেলে রকেট মেইলে করে ঈশ্বরদী জংশনে এসেছেন।

এই বৃদ্ধ জানান, পরিকল্পনা ছিল ভোরে ট্রেনে চড়ে ঈশ্বরদী থেকে গাজীপুর যাবেন। সেখান থেকে বাসে চড়ে যাবেন বাড়ি। ট্রেন না থাকায় সেটি সম্ভব হয়নি। সারাদিন রুটি কলা খেয়ে কাটিয়েছেন। এখন কাছে আছে মাত্র ১০০ টাকা। সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোনও চার্জের অভাবে বন্ধ। কারও সঙ্গে যোগাযোগও করতে পারছেন না।

জংশনে ঘুরে দেখা যায়, শামসুল আলম ও শফিকুল ইসলামের মতো অনেকেই টাকার অভাবে বাসে গন্তব্যে যেতে না পেরে স্টেশন ও আশপাশের বাজার এলাকায় অবস্থান করছেন।

পার্ট অব পে রানিং অ্যালাউন্স (মাইলেজ) যোগ করে পেনশন ও আনুতোষিক প্রদানের দাবি পূরণ না হওয়ায় ২৮ জানুয়ারি দিনগত রাত ১২টা থেকে সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ রেখেছেন রেলের কর্মীরা।-জাগো নিউজ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে