এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনির বাসায় হামলার ঘোষণার পর থেকে নগরের চশমা হিল ও ষোলশহর রেলস্টেশন এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
বুধবার রাতে ফেসবুক গ্রুপ ও ব্যক্তিগত আইডিসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাধিক প্লাটফর্মে বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় হামলার ঘোষণা দেওয়া হয়।
এদিকে, হামলার আশঙ্কায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পুলিশ ও র্যাবের গোয়েন্দা শাখার কর্মকর্তারা ষোলশহর, চশমা হিল ও আশেপাশের এলাকায় সাদা পোশাকে অবস্থান নেন। সামরিক গোয়েন্দা ও রাষ্ট্রায়ত্ত বিভিন্ন গোয়েন্দা কর্মকর্তারাও ঘটনাস্থলে অবস্থান নেন। এছাড়া সকাল থেকে বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মীরা ষোলশহর রেলস্টেশন এলাকায় ভিড় করেন।
সরেজমিন সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ষোলশহর রেলস্টেশন এবং চশমা হিল এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কাউকে তেমন জড়ো হতে দেখা যায়নি। রেলস্টেশন এলাকায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থীদের দেখা যায়। কিন্তু পোশাক পরিহিত অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাউকে দেখা যায়নি। এদিন রেলস্টেশন এলাকায় দোকানপাট খুলেছে। তবে তাদের চোখে-মুখে কিছুটা আতঙ্ক দেখা গেছে।
তবে সবচেয়ে বেশি আতঙ্কগ্রস্ত দেখা গেছে মেয়র গলি চশমা হিল এলাকার বাসিন্দাদের। এই এলাকার বাসিন্দাদের ধারণা ছিল সকাল থেকে হয়তো মহিউদ্দিন চৌধুরী ও নওফেলের বাড়ি ভাঙচুর শুরু হবে। কিন্তু দুপুর ২টা পর্যন্ত বাড়িটিতে হামলার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি বলে নিশ্চিত করেছেন পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান।
তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা খোঁজ খবর রাখছি। আমার টিম রয়েছে। তবে এখনো কোনো হামলার তথ্য পাওয়া যায়নি।
এদিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মেয়র গলি চশমা হিল এলাকায় মহিউদ্দিন চৌধুরী ও নওফেলের বাড়ির সামনে গিয়ে দেখা যায়, একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী বাড়ির সামনের সড়কটি ঝাড়ু দিচ্ছেন। সড়ক দিয়ে লোকজন যাতায়াত করছেন। তবে সংখ্যায় অন্যান্য দিনের তুলনায় একটু কম বলে জানিয়েছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা।
ওই এলাকার বাসিন্দা মো. আরমান চৌধুরী বলেন, আমরা আশঙ্কা করছিলাম সকালেই লোকজন জড়ো হয়ে হামলা শুরু করবে। কিন্তু আমরা এরকম কিছু দেখিনি। তবে আমরা আতঙ্কে ছিলাম।
হামলার ঘোষণার পর ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন নওফেলের ভাই ও মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে বোরহানুল হাসান চৌধুরী। এক স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, চট্টগ্রাম শহরের প্রিয় মানুষদের প্রতি- আমার বাবা মহীউদ্দীন চৌধুরী যাকে এত ভালোবাসতেন তিনি তার সমগ্র জীবন এই শহর এবং এখানকার মানুষের জন্য উৎসর্গ করেছিলেন। তিনি এমন কোনো রাজনৈতিক পদ গ্রহণ করেননি যা তাকে চট্টগ্রাম থেকে দূরে নিয়ে যেত। তার হৃদয় সর্বদা এখানেই ছিল, আপনাদের সঙ্গে। তিনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন, আপনাদের অধিকারের জন্য লড়াই করেছেন এবং এই শহরের উন্নতির জন্য নিরলস পরিশ্রম করেছেন। তার জীবনের শেষ দিনগুলোতেও, যখন তিনি ঠিকভাবে হাঁটতেও পারতেন না, তখনও তিনি হোল্ডিং ট্যাক্সের মতো বিষয়গুলোর জন্য লড়াই চালিয়ে গেছেন—তার নিজের জন্য নয়, বরং চট্টগ্রামের মানুষের জন্য।