এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : চট্টগ্রামের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ সন্দ্বীপের সঙ্গে ফেরি যোগাযোগকে ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
স্বাধীনতার এত বছরেও বিচ্ছিন্ন এই দ্বীপের সঙ্গে নিরাপদ যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে না ওঠাকে জাতির জন্য লজ্জার হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন তিনি। আজ ফেরি যোগাযোগ শুরু হওয়ায় জাতি সেই কলঙ্ক থেকে মুক্ত হয়েছে বলে মনে করেন সরকারপ্রধান।
সোমবার (২৪ মার্চ) ফেরি সার্ভিস উদ্বোধন উপলক্ষে সন্দ্বীপ উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সন্দ্বীপের মানুষ এতদিন কাদা মাড়িয়ে ডিঙি নৌকায় আর বোটে করে কেন সমুদ্র পারাপার করতে হবে? সন্দ্বীপ দেশের অন্যতম উপকূলীয় দ্বীপ। কিন্তু ৫০ বছরের মধ্যেও কেন নিরাপদ যোগাযোগ গড়ে ওঠেনি, কী লজ্জার কথা!
ড. ইউনূস বলেন, সন্দ্বীপের সঙ্গে আজ নিরাপদ যোগাযোগ স্থাপিত হলো। কেন এতদিন হয়নি. সেটা লজ্জার। এ লজ্জা থেকে বাঁচলাম। কলঙ্ক থেকে আজ মুক্ত হলাম।
সমাবেশে নৌপরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বাংলাদেশের কোনো উন্নয়নই ফলপ্রসূ হবে না যদি প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ উন্নত না হয়। এখানে ফেরি চলাচলের আগে নৌঘাট দখলমুক্ত করতে হয়েছে। সমুদ্র উপকূল হওয়ায় ফেরি চালু করা দুরূহ ছিল। দুটি ঘাটের নাম কাল থেকে জুলাই আন্দোলনে সন্দ্বীপের শহীদ মাহমুদুর রহমান সৈকত ও সাইমুন হোসেন মাহিনের নামে নামকরণের প্রস্তাব করছি।
সন্দ্বীপের সন্তান সড়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, এই ফেরি চালুর মূল কৃতিত্ব আমাদের প্রধান উপদেষ্টার। গত আগস্টে প্রথম উনাকে মহিলাদের কাদা মাটি পেরিয়ে পারাপারের কথা বলি। তিনি বলেছেন, এটা হতে পারে না। অবশ্যই সমাধান করতে হবে। এটি একটি দুরূহ প্রকল্প কারণ বাংলাদেশে সামুদ্রিক ফেরি চলাচলের অভিজ্ঞতা নেই।
এর আগে সকালে নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ঘাটে এই ফেরি সার্ভিস উদ্বোধন করেন। এরপর সকাল ৯টায় বাঁশবাড়িয়া ঘাট থেকে ২০টি যানবাহন ও উপদেষ্টাদের নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম ফেরি ছেড়ে যায় সন্দ্বীপের গুপ্তছড়ার উদ্দেশে। প্রায় এক ঘণ্টা ১৬ মিনিট যাত্রার পর ফেরিটি গুপ্তছড়া ঘাটে পৌঁছে।
উপদেষ্টাদের মধ্যে ছিলেন—অন্তর্বর্তী সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এবং সন্দ্বীপের সন্তান মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীর প্রতীক, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। এছাড়া প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বক্স চৌধুরী ও অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমানও তাদের সঙ্গে ছিলেন।