এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : পাসপোর্টে হয়রানি কমাতে এজেন্সি বা ভেন্ডর নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। নতুন পাসপোর্টের জন্য আবেদন, দেশে ও বিদেশে পাসপোর্ট রিইস্যুর আবেদন, ভিসা আবেদনসহ পাসপোর্ট ও ভিসাকেন্দ্রিক যত আবেদন আছে তা সঠিক ও সুন্দরভাবে পূরণ করার জন্য এজেন্সি বা ভেন্ডর নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। তারা গ্রাহকের কাছ থেকে নির্দিষ্ট ফি নিয়ে এসব আবেদন পূরণ করবেন।
সংশ্লিষ্ট পাসপোর্ট অফিসের আশপাশে অফিস স্থাপন করে এসব আবেদন করতে গ্রাহককে সহযোগিতা করবেন। নিয়োগকৃত এজেন্সি বা ভেন্ডর যদি গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা বা আবেদনে বেশি অর্থ রাখেন এমন প্রমাণ হলে তার লাইসেন্স বাতিল হয়ে যাবে। মূলত পাসপোর্টকেন্দ্রিক সব ধরনের আবেদনে হয়রানি কমাতে এবং গ্রাহককে স্বস্তি দিতেই এ উদ্যোগ। ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর (ডিআইপি) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র বলছেন, পাসপোর্টের আবেদন করা যাচ্ছে ঘরে বসেই। পাসপোর্টের ফি ঘরে বসেই দেওয়া যাচ্ছে। এবার ঘরে বসেই পাসপোর্ট হাতে পেয়ে যাবেন গ্রাহক। এমনটাই চিন্তাভাবনা করেছে ডিআইপি। শুধু গ্রাহকের ছবি, চোখের আইরিশ এবং ১০ আঙুলের ফিঙ্গার দিতে সংশ্লিষ্ট পাসপোর্ট অফিসে আসতে হবে।
এ ছাড়া সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের জারিকৃত এক পরিপত্রে বলা হয়, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) এবং জন্মনিবন্ধন সনদের তথ্যের ভিত্তিতে আবেদনকারীকে পাসপোর্ট দেবে সরকার। এর পর থেকে পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়াই পাসপোর্ট হাতে পাচ্ছেন গ্রাহক। আবেদনকারীর ভোগান্তি কমানো এবং যথাসময়ে পাসপোর্ট প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে অন্তর্র্বর্তী সরকার পুলিশ ভেরিফিকেশন ব্যবস্থা তুলে দিয়েছে। বর্তমানে কোনো ভোগান্তি ছাড়াই পাসপোর্ট পাচ্ছেন গ্রাহক।
১৮ ফেব্রুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জারিকৃত পরিপত্রে বলা হয়, নতুন পাসপোর্টের আবেদনের ক্ষেত্রে অনলাইনে যাচাইকৃত জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যের ভিত্তিতে আবেদনকারীকে পুলিশ ভেরিফিকেশন বাদ দিয়ে পাসপোর্ট প্রদান করতে হবে; বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিক এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য পাসপোর্টের নতুন আবেদনের ক্ষেত্রে অনলাইনে যাচাইকৃত জন্মনিবন্ধন সনদের তথ্যের ভিত্তিতে আবেদনকারীকে পুলিশ ভেরিফিকেশন বাদ দিয়ে পাসপোর্ট প্রদান করতে হবে এবং পাসপোর্ট পুনঃইস্যুর ক্ষেত্রে বিদ্যমান পাসপোর্টের সঙ্গে চাওয়া মৌলিক তথ্যের (নিজের নাম, পিতা-মাতার নাম, জন্ম তারিখ, জন্মস্থান) পরিবর্তন হলে জাতীয় পরিচয়পত্রে প্রদত্ত তথ্য দিয়ে পাসপোর্ট ইস্যু করা যাবে।
পাসপোর্ট সেবা সহজ করার লক্ষ্যে সরকার এসব সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর আগে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশনের বিধান বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেছিলেন, পাসপোর্ট পাওয়া নাগরিক অধিকার।
ডিআইপির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেছেন, পুলিশ ভেরিফিকেশনের ফলে যথাসময়ে গ্রাহকের পাসপোর্ট ডেলিভারি দিতে বিলম্ব হতো। এ ক্ষেত্রে গ্রাহক পাসপোর্ট অফিসকে দোষারোপ করত। কিন্তু এখন পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়া সুপার এক্সপ্রেস সার্ভিসের আওতায় যে কোনো প্রয়োজনে ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নতুন পাসপোর্ট দেওয়া সম্ভব হচ্ছে।
রেগুলার বা এক্সপ্রেস পাসপোর্টের ডেলিভারিও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই দেওয়া হচ্ছে। একদিকে যেমন ভোগান্তি কমেছে, অন্যদিকে গ্রাহকসেবায় স্বস্তি ফিরে এসেছে। গ্রাহকের কথা চিন্তা করে এখন সব আবেদন সহজ এবং খরচ কমাতে এজেন্সি নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এমনকি গ্রাহক যাতে ডাকযোগে ঘরে বসে পাসপোর্ট পেতে পারে সে চিন্তা করছে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর (ডিআইপি)।